২ ভাইস-চেয়ারম্যানের ভাতা আত্মসাৎ

নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা চেয়ারম্যানকে অপসারণ

Shamser Jaman Riton.jpg
শমসের জামান ভূঁইয়া রিটন। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা পরিষদের দুই ভাইস-চেয়ারম্যানের ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান শমসের জামান ভূঁইয়া রিটনকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

গতকাল রোববার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ সামসুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাকে অপসারণ করা হয়।

একইসঙ্গে উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া জাহাঙ্গীরকে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।

গত ১৮ জানুয়ারি ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শমসের জামানকে কেন অপসারণ করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। নোটিশে পরবর্তী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত বছরের ৫ মার্চ তারা দুই ভাইস-চেয়ারম্যান অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে আইনগত সুরাহা চেয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন।

ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেলাবো উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান ভূঁঞা, জাহাঙ্গীর ও শারমিন আক্তার খালেদা প্রতি মাসের ৩/৪ তারিখে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে নিজেদের সম্মানী ভাতা তুলেন। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের মাসিক ভাতা ২৭ হাজার, ভ্রমণ ভাতা আট হাজার, আপ্যায়ন ভাতা পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যানের চার হাজার ৪২১ টাকা ও নারী ভাইস-চেয়ারম্যানের চার হাজার ৩৬৬ টাকার চেক যথারীতি প্রতি মাসের মতো অফিস সহকারী তৌফিক আফ্রাদের নিকট চাইলে তিনি জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান পুরো চেক বই তার কাছ থেকে নিজের হেফাজতে নিয়ে গেছেন।

এরপর ভাইস-চেয়ারম্যানদ্বয় ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ৪ ডিসেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেই তাদের টাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন।

পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলে তিনি দ্রুত সুরাহা করতে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন। কিন্তু দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় ভাইস-চেয়ারম্যানদ্বয় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করতে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর নরসিংদী সার্কিট হাউজে আসেন ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম-সচিব) খান মো. নূরুল আমিন। তদন্ত শেষে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পান তারা। এরপর উপজেলা পরিষদ আইনে অপসারণ, অনাস্থা ও পদ শূন্যতা বিধিমালা-২০১৬ অনুযায়ী শমসের জামানকে কেন অপসারণ করা হবে না- সে মর্মে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

Comments