ঋণখেলাপির দায়

আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিজয়ী ঘোষণা

ঋণখেলাপির দায়ে বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকানকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিকটতম প্রার্থী সামসুদ্দীন আহমেদ ছজুকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন বরগুনার আদালত।
Patuakhali.jpg
গোলাম সরোয়ার ফোরকান ও সামসুদ্দীন আহমেদ ছজু। ছবি: সংগৃহীত

ঋণখেলাপির দায়ে বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকানকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিকটতম প্রার্থী সামসুদ্দীন আহমেদ ছজুকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন বরগুনার আদালত।

বরগুনার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও উপজেলা নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুনের এক আদেশে আজ বুধবার ছজুকে আমতলীর উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়।

আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে গোলাম সরোয়ার ফোরকানকে অব্যাহতি দিয়ে ছজুকে উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনকে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ছজুর আইনজীবী অ্যাডভোকেট জগদীশ চন্দ্র শীল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত আমতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে অংশগ্রহণ করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গোলাম সরোয়ার ফোরকান। পরে ঋণখেলাপির দায়ে ফোরকানকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিজেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষণার জন্য ওই বছরের ২১ এপ্রিল আদালতে মামলা দায়ের করেন ছজু। আদালত সব তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ফোরকানকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ছজুকে আমতলীর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা করে আদেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে পটুয়াখালীর রূপালী ব্যাংকের শাখা থেকে নিজ নামে এক বছর মেয়াদে ১৮ লাখ টাকা ঋণ নেন ফোরকান। যা সুদে-আসলে ২৪ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এ ছাড়াও, নিজের মালিকানাধীন বনানী ট্রেডার্সের নামেও একই ব্যাংক থেকে এক বছরের মেয়াদে ঋণ নেন গোলাম সরোয়ার ফোরকান। যা সুদে-আসলে ২৭ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। যথাসময়ে এই ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৪ সাল থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকায় নাম ওঠে ফোরকানের।

২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত আমতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গোলাম সরোয়ার ফোরকান তার ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। নির্বাচনে বিজয়ী হন তিনি।

এ বিষয়ে শামসুদ্দিন আহমেদ ছজুর আইনজীবী অ্যাডভোকেট জগদীশ চন্দ্র শীল বলেন, ‘গোলাম সরোয়ার ফোরকান ২০১৩ সালে তার নিজ নামে এবং তার মালিকানাধীন বনানী ট্রেডার্সের নামে এক বছর মেয়াদে পটুয়াখালীর রূপালী ব্যাংক থেকে ঋণ তোলেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে তিনি ঋণ পরিশোধ না করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।’

এরপর ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তার ঋণের অনুকূলের শতভাগ সুদ মওকুফের জন্য রুপালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় আবেদন করেন গোলাম সরোয়ার ফোরকান। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর এক বছরের মধ্যে প্রদানের শর্তে ৮০ ভাগ সুদ মওকুফ করা হয়। এ টাকাও তিনি যথাসময়ে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন।

বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান এবং অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান নান্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে গোলাম সরোয়ার ফোরকানের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago