রমজানের আগেই বেড়েছে পণ্যের দাম

গত তিন মাসে আমদানি বাড়লেও পবিত্র রমজান মাসের দুই মাস আগে চট্টগ্রামের খুচরা ও পাইকারি বাজারে ভোজ্য তেল, ছোলা ও চিনিসহ অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।
স্টার ফাইল ছবি

গত তিন মাসে আমদানি বাড়লেও পবিত্র রমজান মাসের দুই মাস আগে চট্টগ্রামের খুচরা ও পাইকারি বাজারে ভোজ্য তেল, ছোলা ও চিনিসহ অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।

এ বিষয়ে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (সিএবি) সহসভাপতি নাজির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রমজানের আগে দাম বাড়ানো সাধারণ ঘটনা। সাধারণত রমজানের কয়েক দিন আগে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। তাই বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’

তিনি জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য রমজানের কয়েক মাস আগে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সারাবছরই নিয়মিত তদারকি করা প্রয়োজন।

ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ছে। রপ্তানিকারক দেশগুলোতে উত্পাদন কমে যাওয়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণে পণ্যের দাম গত কয়েক মাস ধরেই ওঠানামা করছে।

দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি পণ্য কেন্দ্র চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ বাজারে সয়াবিন তেলের পাইকারি মূল্য একমাসের ব্যবধানে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক তিন কিলোগ্রাম) প্রায় ৩৫০ টাকা বেড়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা হয়েছে। পাম তেলের দামও মণপ্রতি বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ১৩০ থেকে ১৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা তেলের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা।

প্রতি মণ ছোলার পাইকারি দাম ৪৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ১০০ টাকা থেকে দুই হাজার ১৯০ টাকায়।

খুচরা বিক্রেতাদের মতে, দেশের বাজারে ছোলার দাম প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ৬৩ থেকে ৭০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এক মাস আগেও প্রতি মণ চিনি দুই হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এর দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২৮০ থেকে দুই হাজার ২৯০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জ বাজারের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, ছোলাসহ রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ তাদের রয়েছে। সরবরাহে ঘাটতির কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু, রমজানের বিষয়টি মাথায় রেখে খুচরা বিক্রেতারা হঠাৎ করেই বেশি পণ্য কেনা শুরু করায় পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে।

বাজারের অভ্যন্তরীণরা জানান, পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও অসাধু পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের একটি জোট বেআইনিভাবে বাড়তি মুনাফার লোভে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এতে করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সয়াবিন ও পাম তেলসহ মোট তিন লাখ ৭৩ হাজার টন ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে যা ছিল তিন লাখ ৫৯ হাজার টন।

২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ৬২ হাজার ১৬৫ টন ছোলা আমদানি করা হয়েছে। এর আগের বছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৬৩ হাজার ১২৯ টন।

এই সময়ে প্রায় ৩৮ হাজার ৪৩ টন চিনি আমদানি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম জাকারিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে বাজার তদারকি এখনো শুরু হয়নি। কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করে খুব শিগগির আমরা বাজার তদারকি করা শুরু করব।’

রমজান সামনে রেখে দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছোট পরিসরে প্রতি মাসেই আমরা বাজার তদারকি করি। যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।’

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago