নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জেতা অবশ্যই সম্ভব: প্রধান নির্বাচক
সাদা বলের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। সেখানে ১৩ ওয়ানডে ও চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে প্রতিবারই কপালে জুটেছে হার। আসন্ন সফরে কি সেই দৈন্যদশার পরিবর্তন হবে? জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন শুনিয়েছেন আশার বাণী।
শুক্রবার নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য ২০ সদস্যের সমন্বিত স্কোয়াড দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দুদলের তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ শুরু হবে আগামী মার্চে। মাঠের লড়াই শুরুর প্রায় এক মাস আগে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দ্বীপদেশটির উদ্দেশে রওনা হবে টাইগাররা।
স্কোয়াড ঘোষণার পর কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন মিনহাজুল। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো জয়ের প্রত্যাশা জানিয়েছেন তিনি, ‘অবশ্যই সম্ভব। এবার অভিজ্ঞ এক দল যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর বিরতির পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি। এজন্য আত্মবিশ্বাসী। আশা করি, উন্নতির ধারা ঠিক থাকলে ভালো ফল দেখব।’
গত মাসে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। তবে ক্যারিবিয়ানদের স্কোয়াডে ছিলেন না অধিনায়ক জেসন হোল্ডারসহ নিয়মিত তারকাদের অধিকাংশ। অনভিজ্ঞ ও তরুণদের নিয়ে ওই লড়াইয়ে পেরে না উঠলেও টেস্ট সিরিজে তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমদের নাকানিচোবানি খাইয়ে ছাড়ে তারা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে উল্টো ধবল ধোলাইয়ের শিকার হয় রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা।
নিউজিল্যান্ড সরকার বৈশ্বিক মহামারি নিয়ে শুরু থেকেই রয়েছে সতর্ক অবস্থানে। দেশটিতে গিয়ে কোয়ারেন্টিনের কঠোর বিধিনিষেধ মানতে হয় সফরকারী দলগুলোকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঘটছে না কোনো ব্যতিক্রম।
বড় স্কোয়াড দেওয়ার ব্যাখ্যায় কোয়ারেন্টিনের প্রসঙ্গ টেনেছেন প্রধান নির্বাচক, ‘করোনার জন্য একটু বড় স্কোয়াড দিতে হয়। ওখানে কোয়ারেন্টিন শেষ করে ক্যাম্প যখন শুরু হবে, তখন সব খেলোয়াড়ের ফিট থাকার ব্যাপার আছে। এজন্য স্কোয়াড বড় করেছি। কেউ যদি চোট পায় বা কারও কোনো সমস্যা হলে নতুন করে কাউকে ঐ সময় নেওয়া কঠিন। ওরা যে ব্যবস্থা করেছে, তাতে কেউ আসতে পারবে না বা যেতে পারবে না। এখন যারা একসঙ্গে যাবে, তাদের একসঙ্গেই আসতে হবে।’
২০ সদস্যের দলে একমাত্র চমক নাসুম আহমেদ। যদিও এর আগে গত বছরের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। তবে এবারই প্রথম ওয়ানডে স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। এখনও আন্তর্জাতিক অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন তিনি। তাকে জায়গা দিতে গিয়ে বাদ পড়েছেন উইন্ডিজের বিপক্ষে দলে থাকা তাইজুল ইসলাম।
মিনহাজুল বলেছেন, সাদা বলের চুক্তিতে থাকলেও তাইজুলকে ভাবা হচ্ছে মূলত লাল বলের ক্রিকেটের জন্য, ‘টেস্ট ক্রিকেটে এখন তাইজুলকে বেশি খেলানোর চিন্তা-ভাবনা করছি। নাসুমকে তো টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ভাবনায় রেখেছি। ঘরোয়াতেও ওর পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো। আশা করছি, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাসুম নিজেকে মেলে ধরতে পারবে।’
সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে আগেই ছুটি নিয়েছিলেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তাই অবধারিতভাবেই নেই তিনি। তার শূন্যতায় কপাল খুলেছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। নাঈম শেখ ও আল-আমিন হোসেনের মতো তিনিও ফিরেছেন দলে।
তবে ব্ল্যাকক্যাপসদের বিপক্ষে মোসাদ্দেকের একাদশে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই ফুটে উঠেছে সাবেক ক্রিকেটার মিনহাজুলের কথায়, ‘সৈকতকে নেওয়া হয়েছে ব্যাক-আপ খেলোয়াড় হিসেবে। যেহেতু ব্যাটিং-বোলিং পারে। অলরাউন্ডার। টিম ম্যানেজমেন্ট যদি মনে করে (এবং সে নিজে যদি) ভালো অবস্থানে থাকে, খেলাবে।’
কেবল নিউজিল্যান্ড সফর নয়, আগামী এপ্রিলের সম্ভাব্য শ্রীলঙ্কা সফরের টেস্ট সিরিজেও থাকছেন না বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব। দেশের হয়ে সাদা পোশাকে খেলা বাদ দিয়ে সেসময় আইপিএলে খেলার জন্য ছুটি চেয়েছিলেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার। বিসিবি তার ছুটির আবেদন ইতোমধ্যে মঞ্জুর করেছে বলে জানিয়েছেন ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান।
সাকিবকে ছুটি দেওয়া দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো কোনো দৃষ্টান্ত হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হলে মিনহাজুল জানিয়েছেন, ‘এই প্রসঙ্গে যখন ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান (মতামত) দিয়েছেন, এ ব্যাপারে আমি বলতে চাই না। এই কথা তো বোর্ড থেকেই আসবে। সুতরাং, এটা নির্বাচক প্যানেলের বিষয় নয়।’
Comments