কাদের মির্জার বহিষ্কার দাবিতে কোম্পানীগঞ্জ আ. লীগের পাল্টা কর্মসূচি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বহিষ্কার দাবিতে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন উপজেলা আওয়ামী, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
Companyganj_AL_20Feb21.jpg
আজ শনিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জের পেশকার হাটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল। ছবি: স্টার
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বহিষ্কার দাবিতে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন উপজেলা আওয়ামী, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
 
আজ শনিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জের পেশকার হাটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে কাদের মির্জার বহিষ্কার দাবি করা হয়। আগামী সোমবার নেতাকর্মীরা প্রতিবার সভার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রশিদ মঞ্জু, সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসিব আহসান আলাল, চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান আরিফ, ৭নং মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম শাহীন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা হাসিবুর শহীদ আলোকসহ অনেকে।
 
মিজানুর রহমান বাদল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে কটুক্তি এবং তাদের নিয়ে অশালীন ভাষায় মিথ্যাচারের প্রতিবাদে আজ আমরা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। সারা বাংলাদেশ যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিণত হতে যাচ্ছে ঠিক তখনই জামায়াত-বিএনপি’র আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে ধ্বংস করতে অপরাজনীতি ও অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন বসুরহাট পেীরসভায় ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত মেয়র কাদের মির্জা।’
 
তিনি বলেন, ‘গত দুই থেকে তিন মাস ধরে কাদের মির্জা জামায়াত নেতা অধ্যাপক আবু নাছের মুহাম্মদ আবু জাহের ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের অকুণ্ঠ সুনাম করে আসছেন। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন এবং নোয়াখালীর গৌরব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে কটুক্তি এবং তাকে নিয়ে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে তাদের হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। কাদের মির্জার এমন অবাস্তব, অকল্পনীয়, মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে আমরা খুবই মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। আমরা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
 
‘সারা দেশে যখন পৌরসভা নির্বাচনের ডামাডোল শুরু হয়েছে, তখনই কাদের মির্জা তার নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার জন্য এবং নিজের উচ্চাভিলাসী হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের নামে পলাতক বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও তার লোকজনের সঙ্গে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এর একটি হোটেলে বৈঠক করেন এবং তারেক রহমানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন। ভবিষ্যতে মওদুদ আহমদের অবর্তমানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিশ্চিত করার শর্তে সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন’— বলেন বাদল।
 
তিনি আরও বলেন, ‘কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতি মণ্ডলির সদস্য কর্নেল ফারুক খান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ফরিদপুরের সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল হক, সাবেক মেয়র মীর নাছির, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী এবং আমাদের বিরুদ্ধে সত্য বচনের নামে অশালীন ভাষায় মিথ্যাচার করে আমাদের সরকার, আমাদের দল এবং নেতাদের ভাবমূর্তি চরমভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছেন। যেখানে তিনি নিজেই অপরাজনীতির আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা, অনিয়মতান্ত্রিক ও অগণতান্ত্রিকভাবে কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে৷ তার সন্ত্রাসের শিকার হয়ে অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ জীবন দিতে হয়েছে এবং ছাড়তে হয়েছে ঘরবাড়ি।’
 
বাদল বলেন, ‘কাদের মির্জা ও তার ছেলে কতটা অমানবিক হতে পারে তা ইতোমধ্যে নোয়াখালীসহ দেশবাসী জেনেছে৷ তাশিক মির্জা তার বাহিনী নিয়ে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান আরিফের বাড়িতে হামলা ও তার ছেলেকে কিডনাপের চেষ্টা করে। কাদের মির্জার মতের বিরুদ্ধে গেলেই শুরু হয় নির্যাতন। এ ছাড়া, আমাদের কাছে অনেক তথ্য আছে৷ সম্প্রতি পৌরসভা ভোটকে সামনে রেখে মোটা অংকের চাঁদাবাজির তথ্যও আমাদের কাছে রয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের দায়ে কাদের মির্জাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং নেতাকর্মীদেরকে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।’

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

2h ago