দিয়াবাড়ি থেকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ রাত ৩টার র্যাব ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল জানিয়েছেন, জঙ্গি মুফতি হান্নানের নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। হামলা পরিচালনার জন্য মুফতি হান্নান তাকে গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন। হামলার সময় মঞ্চ উদ্দেশ্য করে তিনি গ্রেনেড ছুড়েছিলেন।’
‘মো. ইকবাল হোসেনের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। তার বাবার নাম আব্দুল মজিদ মোল্লা। ঘটনার পরে তিনি ঝিনাইদহে ফিরে গিয়ে আত্মগোপন করেন। সে সময় তিনি নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, মেকানিক ইত্যাদি ছদ্মবেশে ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারে র্যাব একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করেন। প্রবাসে প্রথমে সেলিম, পরে জাহাঙ্গীর নামে নিজেকে পরিচিত করেন। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হলে গত বছরের শেষের দিকে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফিরে আত্মগোপনে থেকে তিনি আবারও সমমনাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন’— বলেন আবদুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল জানিয়েছেন, তিনি এইচএসসি পাস। স্কুল ও কলেজ জীবনে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করেন। দেশে ফিরে এসে তিনি আইএসডি ফোন ও অন্যান্য ব্যবসা শুরু করেন। সে সময় তিনি সর্বহারা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ২০০১ সালে তার চিন্তা পরিবর্তন আসে। ঝিনাইদহের এক জঙ্গি সদস্যের মাধ্যমে জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদ, বাংলাদেশে (হুজি–বি) যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি মুফতি হান্নান ও অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের কাছাকাছি আসেন এবং জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। ২০০৪ সালের আগস্টে মুফতি হান্নানের নির্দেশে ঢাকায় এসে গোপন আস্তানায় অবস্থান নেন। মুফতি হান্নানের সঙ্গে গোপন বৈঠকে অংশ নিতেন ইকবাল।’
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এর আগে ২০০৫ সালে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান, তার ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে অভিকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। এই মামলায় সংশ্লিষ্টতায় আমরা ২০০৭ সালে ১৬টি গ্রেনেড উদ্ধার করি এবং এ পর্যন্ত ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়েছে এবং বিচার হয়েছে। দীর্ঘ সাত বছরে প্রায় ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলার রায় হয়। এই মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তৎপর।
আরও পড়ুন
তারেকের যাবজ্জীবন, বাবর, পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড
Comments