চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭০ শতাংশ আম গাছে মুকুল, পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা
আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের সর্বত্রই এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। এ বছর একটু আগেই আসতে শুরু করে মুকুল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খুব দ্রুত মুকুলিত হয়েছে বেশিরভাগ গাছ। চাষিরা বলছেন- এখন পর্যন্ত মুকুলের অবস্থা বেশ ভালো।
কৃষকেরা জানান, এ বছর মাঘ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই মুকুল আসতে শুরু করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগানগুলোতে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এখন মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে বেশিরভাগ গাছ। এখন তারা মুকুল রক্ষায় বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গতকাল সোমবার সদর উপজেলার চকআলমপুর বাগানে গিয়ে কথা হয় আম চাষী আব্দুল করিম, রেজাউল ইসলাম, আলমগীর হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে।
তারা জানান, শীতের শেষে যখন তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে তখন থেকেই গাছে মুকুল দেখা দেয়। বেশিরভাগ গাছেই মুকুল ফুটে গেছে।
আলমগীর হোসেন বলেন, এবার মুকুল কিছুটা আগাম। আবার কোনো কোনো জায়গায় নাবী আছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহেও আশানুরূপ মুকুল আসেনি। কিন্তু এবার একই সময়ে বেশিরভাগ গাছেই মুকুলের দেখা মিলেছে। চাষীরা এখন মুকুল রক্ষায় প্রয়োজনীয় কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান তিনি।
আম চাষী আব্দুল করিম জানান, এখন যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে সব মুকুল ফুটেই গুটি বের হবে। মুকুল দেখে মনে হচ্ছে এ বছর বাম্পার ফলন হবে আমের। এমন কোনো গাছ বাকি নেই যেখানে মুকুল নেই। গত বছর যে সব গাছে আম হয়েছিল, এবারও সেই সব গাছে ব্যাপক মুকুল দেখা যাচ্ছে।
আমবাগান মালিক সদর উপজেলার দক্ষিণশহর গ্রামের মুঞ্জের আলম জানান, তার কয়েকটি বাগানে এক হাজারের বেশি আম গাছ আছে। এসব গাছে প্রায় ৮০ ভাগ মুকুল এসেছে।
তিনি আশা করছেন আর কিছুদিন আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ মুকুল হবে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে আমের উৎপাদনও ভালো হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক এ কে এম মঞ্জুরে মওলা জানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৪ হাজার ৭৭৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে এক হাজার ৭০০ হেক্টর বেশি। এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। এ বছর ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ গাছ মুকুলিত হতে পারে আশা করছেন তারা। আরও দুই সপ্তাহ সময় রয়েছে গাছে মুকুল আসার জন্য।
তিনি জানান, দিন ও রাতের তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে কিছুটা সমস্যা হতে পারে মুকুলের। আবার হপার পোকার আক্রমণ হতে পারে। এ জন্য নিয়মিতই প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে আম চাষীদের। তবে আগামী এক সপ্তাহ বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই বলে জানান তিনি।
গত বছর জেলায় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদন হয়েছিল বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
Comments