সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধে সম্মত ভারত-পাকিস্তান
ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, তারা কাশ্মীরের বিতর্কিত সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুই দেশের সামরিক বাহিনী বিরল ওই যৌথ বিবৃতি দেয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স জানায়, পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দেশ দুটি ২০০৩ সালে কাশ্মীর অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসে তা ভেঙে যায়। ফলে, ডি ফ্যাক্টো সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী গ্রামবাসীদের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চলতি বছরের ২৪/২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এবং অন্যান্য সব সেক্টরে চুক্তি, বোঝাপড়া এবং গোলাবর্ষণ বন্ধের ব্যাপারে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে।’
অস্ত্রবিরতিতে ফিরে আসার বিষয়টি দুই দেশের সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযান বিষয়ক মহাপরিচালকরা নিষ্পত্তি করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্তে পারস্পরিক সুবিধা এবং টেকসই শান্তি অর্জনের স্বার্থে দুই দেশের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালকরা একে অপরের মূল সমস্যা চিহ্নিত এবং শান্তি বিঘ্নিত করার প্রবণতা ও সহিংসতার দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতার উদ্বেগ মোকাবিলায় সম্মত হয়েছেন।’
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে, প্রায় ৩০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সূত্রটি বলেছে, ‘এ বছর মাত্র দুই মাসে ২৫৩ বার অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ কারণে আটজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।’
ভারতের হিসেব অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে পাকিস্তান ৫৯১ বার অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করেছে।
কাশ্মীর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। তারা এই অঞ্চলকে পুরোপুরি নিজেদের দাবি করলেও একটি নির্দিষ্ট অংশ শাসন করে থাকে। কিন্তু, ২০১৯ সালের আগস্টে নয়াদিল্লি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করে এবং দুটি ফেডারেল প্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে। এরপর থেকে নতুন করে এই অঞ্চলে উত্তেজনা শুরু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়াদিল্লির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সতর্কতার সঙ্গে আশাবাদী নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সহিংসতার মাত্রা এবং উত্তেজনা কমবে।’
তিনি জানান, অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ এবং কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গী বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সেনা মোতায়েন বজায় রাখবে ভারতের সামরিক বাহিনী।
কাশ্মীরের ভারতীয় অংশের রাজনীতিবিদরা বলেছেন, তারা যুদ্ধবিরতিতে ফিরে যাওয়ার অঙ্গীকারকে স্বাগত জানিয়েছেন।
A big & welcome development that India & Pakistan have agreed to a ceasefire along the LoC. Dialogue is the only way forward if both countries want to stop the unending cycle of violence & bloodshed across the borders and J&K.https://t.co/jENfvDNujJ
— Mehbooba Mufti (@MehboobaMufti) February 25, 2021
জম্মু ও কাশ্মীরের কথা উল্লেখ করে কাশ্মীরি রাজনীতিবিদ মেহবুবা মুফতি টুইট করেন, ‘উভয় দেশ সীমান্ত ও জম্মু-কাশ্মীরে চলমান সহিংসতা ও রক্তপাত বন্ধ করতে চাইলে সংলাপই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায়।’
Comments