লেখক মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান সিপিজে’র
লেখক মুশতাক আহমেদের কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত, স্বচ্ছ এবং স্বতন্ত্র তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে বাকস্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।
এ ছাড়া, কারাবন্দী কার্টুনিস্ট কিশোরের নিঃশর্ত মুক্তির দাবির পাশাপাশি তাকে কারা হেফাজতে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগরে তদন্তও চেয়েছে সংস্থাটি।
আজ শুক্রবার নিউইয়র্ক থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানিয়েছে সিপিজে।
কাশিমপুর কারাগারে আটক মুশতাককে গতকাল গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের মে থেকে তিনি কারাবন্দী ছিলেন।
তার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সিপিজেকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে বা মুশতাকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃত্যুর খবর জানায়নি। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি জানতে পারেন।
সিপিজে’র এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক আলিয়া ইফতিখার বলেন, ‘কারাগারে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই স্বতন্ত্রভাবে মুশতাকের মৃত্যুর তদন্ত করতে হবে এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বারবার ও অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সিপিজেকে জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মুশতাক যখন আদালতে হাজির হন তখন তিনি সুস্থ ছিলেন।
এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের কার্যালয়ের পরামর্শক রেজাউর রহমান লেনিনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে সিপিজে। লেনিন ২৩ তারিখ শুনানির সময় উপস্থিত ছিলেন। তার মতে, সেদিন মুশতাক একই মামলার আরেক অভিযুক্ত কার্টুনিস্ট কবির কিশোরের স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, রেজাউর রহমান লেনিন ও সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিপিজে জানায়, শুনানির দিন কিশোর তার ভাইয়ের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে তিনি গুরুতর শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। চিকিৎসা ঠিক মতো না হওয়ায় তার পায়ে গুরুতর আঘাত হয়েছে এবং কানে ক্ষত তৈরি হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে মুশতাক ও কিশোরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়। সিপিজের গবেষণা অনুযায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে।
সিপিজে বারবার বাংলাদেশ কারা সদর দপ্তর এবং কারা মহাপরিদর্শক মো. মোমিনুর রহমান মামুনকে মন্তব্যের জন্য ফোন করলেও, কেউ ফোন ধরেননি। সিপিজে কারা সদর দপ্তরকে ইমেইলও করেছে। তবে, তারও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
Comments