বন্দি নির্যাতনের অভিযোগে ৩ কারা কর্মকর্তাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এক বন্দিকে নির্যাতন করে আহত করার অভিযোগে জেল সুপারসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আজ সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম-২ হোসাইন মো. রেজার আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী ঝর্ণা রানী দেবনাথ।
অভিযোগ দায়ের করা হলেও আদালত এ বিষয়ে এখনও কোনো আদেশ দেননি বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী ভুলন লাল ভৌমিক।
লিখিত অভিযোগে কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার, জেলার, সহকারী সার্জন ও ভুক্তভোগীর ব্যবসায়িক অংশীদার রতন ভট্টাচার্যকে আসামি করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার রুপম কান্তি নাথ বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কারা কর্তৃপক্ষের অধীনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ভুলন লাল ভৌমিক।
আদালতে দায়ের করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, কারাগারের ভেতরেই তার শরীরে বৈদ্যুতিক শক ও বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে নির্যাতন করা হয়েছে।
এই অভিযোগ এমন সময় উত্থাপিত হলো যখন কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আন্দোলন করা হচ্ছে।
অভিযোগের বরাত দিয়ে আইনজীবী ভুলন বলেন, ‘আসামী রতন এবং ভুক্তভোগী রুপম ব্যবসায়ী অংশীদার। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রতনের দায়ের করা একটি মামলায় সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে যান রুপম। সেই থেকে তিনি কারাগারের ভেতরে সাংগু ভবনে আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে কারাগার থেকে রুপমের স্ত্রীকে ফোন করে জানানো হয় তার স্বামী অসুস্থ এবং তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আরও বলা হয় যে চিকিৎসার ব্যয়ভার জেল কর্তৃপক্ষ বহন করবে।’
এ ঘটনার পর আদালতে ভুক্তভোগীর স্ত্রী তার স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করলে আদালত গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তা মঞ্জুর করেন বলে জানান অ্যাডভোকেট ভুলন।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেলে গিয়ে বাদী তার স্বামীর শরীর দেখে বুঝতে পারেন তাকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তার স্বামী তাকে শরীরে বৈদ্যুতিক শক ও বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে নির্যাতনের বর্ণনা দেন। এ ঘটনার পর ঝর্ণা হাসপাতাল পরিচালকের কাছে আলামত সংগ্রহ করে রাখতে আবেদনও করেছেন।’
‘একে অপরের যোগসাজশে রতনের প্ররোচনায় জেল কর্মকর্তারা হেফাজতে থাকা অবস্থায় রুপমের স্বীকারোক্তি আদায় ও মানসিক ভারসাম্যহীন করার জন্য তাকে শারীরিক নির্যাতন করায় আসামিদের বিরুদ্ধে হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে,’ বলে যোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক এ কে এম ফজলুল হকসহ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ও জেলারকে ফোন দিলেও তাদের কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
Comments