মিয়ানমারে বিক্ষোভ: একদিনে নিহত ৩৮, আন্দোলন থামছে না

বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে পুলিশ। ছবি: রয়টার্স

বুধবার সেনাবিরোধী গণবিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যুর পর কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকর্মীরা।

রয়টার্স জানায়, আজ বৃহস্পতিবারও মিয়ানমারজুড়ে কঠোর বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে।

আন্দোলনকর্মী মং সাউংখা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা জানি যে আমরা যেকোনো সময়েই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যেতে পারি। কিন্তু, জান্তা সরকারের অধীনে বেঁচে থাকার কোনো অর্থ নেই। তাই আমরা স্বাধীনতার জন্য কঠিন পথটিই বেছে নিয়েছি।’

‘আমরা জান্তার বিরুদ্ধে যতটুকু সম্ভব লড়াই করে যাব। আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য সেনা সরকার ব্যবস্থাকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলা।’

ছবি: রয়টার্স

বৃহস্পতিবারও দেশটিতে জাতীয়তাবাদী সাধারণ ধর্মঘট কমিটি নামে একটি গ্রুপ প্রতিবাদ সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে বলে জানান তিনি।

অন্যান্য নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ইয়াঙ্গুন শহরে বৃহস্পতিবার কমপক্ষে আরও দুটি বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।

বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে মান্দালে শহরের আকাশে পাঁচটি যুদ্ধবিমান দেখা গেছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার বিভিন্নভাবে জনগণকে ভয় দেখাতে চেষ্টা করছেন বলে কয়েকজন অভিযোগ করেছেন।

গতকাল মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শরণার বার্গনার জানান, ১ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে গতকাল বুধবার ছিল ‘সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন’।

এখন পর্যন্ত দেশটিতে গণবিক্ষোভে পুলিশের হাতে মোট নিহতের সংখ্যা ৫০-এরও বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

ছবি: রয়টার্স

এদিকে, মিয়ানমারের অধিকার গোষ্ঠী এবং কিছু গণমাধ্যম বুধবারের সহিংসতার পরে আহত ও নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেছে। নিহতদের মধ্যে চার শিশুও রয়েছে বলে একটি সংস্থা জানিয়েছে। এ ছাড়াও কয়েক শ প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের এক মুখপাত্র ফোন করে রয়টার্স। তবে, তিনি কোনো উত্তর দেননি।

সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি এক বিবৃতিতে আজ বৃহস্পতিবার পুলিশের গুলিতে মৃতদের স্মরণে দেশবাসীকে জাতীয় পতাকা অর্ধনির্মিত রাখার আহ্বান জানায়।

গত মঙ্গলবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ক্ষমতাচ্যুত সরকারের নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি ও দেশটিতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে জান্তা সরকারকে আহ্বান জানায়। এরপরই দেশটিতে বিক্ষোভ জোরালো হয়।

বিক্ষোভকারীরা জানান, গতকাল কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই কয়েকটি শহরের বিক্ষোভ সমাবেশে সরাসরি গুলি চালানো হয়েছে। পুলিশের গুলিতে কয়েক শ মানুষ আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও দেশটিতে গত এক মাসে কয়েক হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, আজ নিহত ৯

মিয়ানমারে পুলিশের গুলিতে নিহত কমপক্ষে ১৮

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী মিছিলে পুলিশের গুলি, নিহত ২

‘কত লাশ দরকার’

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, নিহত ৭

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের আহ্বান

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

6h ago