স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দিন: নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাধ্যমে দেশের নতুন প্রজন্ম ও জনগণকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দিন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি আয়োজিত মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ময়মনসিংহ বিভাগের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সেদিন কী ঘটেছিল, কেন ঘটেছিল, যে কারণে ঘটেছিল তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা কে কী করেছি সেটা বলুন। যারা দায়িত্ব পালন করতে পারেনি সেটাও বলুন। জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে কাকে দায়িত্ব দিবে তাদের পরিচালনা করার।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের আগে স্বাধীনতা সংগ্রামকে সুসংহত ও দৃঢ় করেছে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, লেখকরা। স্বাধীনতা চূড়ান্ত পরিণতি, যা আজ আমরা উদযাপন করছি। জামুকা বিএনপির আমলে গঠিত সংগঠন। জামুকার গেজেটে খেতাব শব্দটা পর্যন্ত নেই। খেতাব নিয়ে কাজ করার কোনো কিছুই জামুকার নাই। জামুকার কাজ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই করা, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কাজ করা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ করা।’
জিয়াউর রহমান তার জীবনে কোনো দিন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো কটূক্তি করেননি জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের মূল নেতা। কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য যারা খেতাব পেয়েছে, তাদের অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। জিয়াউর রহমানকে অস্বীকার করলে বাংলাদেশে আর মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাওয়া যাবে না। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের অসীম সাহসী, যারা খেতাব পেয়েছেন, তারা পরবর্তীতে যদি অপরাধ করেন তাহলে তার শাস্তি হবে। কিন্তু তাদের খেতাব কেড়ে নিবেন কীভাবে? সেটিতো কারো দয়ার দান না। এটা করে মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদেরকে অপমান করছেন।’
‘জিয়াউর রহমানকে অস্বীকার করলে বাংলাদেশের আর কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে আপনারা সম্মান করবেন বিএনপি সেটা বিশ্বাস করতে পারে না। জিয়াউর রহমানকে অগ্রাহ্য করা আর মুক্তিযোদ্ধাদের অস্বীকার করা সমান। জিয়াউর রহমানকে অস্বীকার করা মানে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা,’ যোগ করেন তিনি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্র হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। খন্দকার মোশতাক মার্শাল ল করেছে। খন্দকার মোশতাক তো বিএনপির ছিল না। বিএনপি গণতন্ত্রকে বার বার উদ্ধার করেছে।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন মিডিয়া কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল হাসান টুকুর সভাপতিত্বে এ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, মিডিয়া কমিটির সদস্য সচিব শ্যামা ওবায়েদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরের ১৪ বছরে তারা জাতিকে বিভক্ত করেছেন। আমরা এক করতে চাই।’
স্বাধীনতা পূর্ব ইতিহাস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইতিহাস এক পাতা দিয়ে হয় না। ইতিহাস একজনকে দিয়ে হয় না। পদক কেড়ে নিয়ে জাতি আর যাই হোক এক হয় না। দ্বিধা বিভক্ত হয়। ৫০ বছর পর এ বিভাজনটা ঠিক না। এটা কমিয়ে আনতে পারেন সাংবাদিকরা। সাংবাদিকরাই একমাত্র শক্তি যারা সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারেন। জিয়াউর রহমানের ঘোষণা স্বাধীনতার পথ দেখিয়ে ছিল। সেটা মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। জাতির স্বার্থে আপনাদের সহযোগিতা চাই। পদক কেড়ে নিয়ে জাতিকে বিভক্ত করবেন না। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিভাজন কমিয়ে আনতে কলম একমাত্র শক্তি হতে পারে।’
সুবর্ণজয়ন্তী জাতীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে কারো সাফল্যকে হেয় করা ঠিক হবে না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার কোনো চেষ্টা করা হলে সেটা অন্যায় হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দিন।’
Comments