ফিঞ্চের ঝড়ে সিরিজে সমতা ফেরাল অস্ট্রেলিয়া
সিরিজে টিকে থাকতে হলে জয়ের বিকল্প ছিল না অস্ট্রেলিয়ার। এমন সমীকরণে সামনে থেকেই লড়াই করলেন অজি অধিনায়ক আরন ফিঞ্চ। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তুলে নিলেন হাফসেঞ্চুরি। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি পায় দলটি। বাকী কাজ সারেন বোলাররা। তাতে প্রত্যাশিত জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী দলটি।
শুক্রবার ওয়েলিংটনে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৫০ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ফিঞ্চের ঝড়ো ইনিংসে ১৫৬ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ১০৬ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে তাই এখন ২-২ সমতা। রোববারের ম্যাচটি তাই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ।
ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেটে এদিন শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। একমাত্র অজি অধিনায়ক ফিঞ্চ ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই উইকেটে সেট হতে পারেননি। ফিঞ্চের ৭৯ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো কেবল কিউই ব্যাটসম্যান কাইল জেমিসন করতে পেরেছেন ৩০ রান।
একই দিনে অবশ্য নতুন এক রেকর্ডও গড়েছেন ফিঞ্চ। হাফসেঞ্চুরির পথে ডেভিড ওয়ার্নারকে পেছনে ফেলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন এ ওপেনার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি তার সংগ্রহ এখন ২ হাজার ৩১০ রান। ওয়ার্নারের রান ২ হাজার ২৬৫। এছাড়া একশ ছক্কার অভিজাত ক্লাবেও নাম লেখান ফিঞ্চ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ ও অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি।
এদিন টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে অস্ট্রেলিয়া। টিম সাউদিকে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন ম্যাথু ওয়েড। দুই বল পর ছক্কা। তবে খুব বেশি আগাতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ১৪ রানে ওয়েড শিকার হন মিচেল স্যান্টনারের। দলীয় রান তখন ১৮।
এ প্রান্তে অবশ্য নিয়মিতই উইকেট তুলে নেয় কিউইরা। ফলে বড় কোনো জুটি গড়ে উঠতে পারেনি। অপর প্রান্তটা আগলে রাখেন ফিঞ্চ। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাশাপাশি রানের গতিও রাখেন সচল। ছোট ছোট জুটিতে একাই অজি ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান অধিনায়ক। কেবল সপ্তম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ ৩২ রানের জুটি গড়েন জয় রিচার্ডসঙ্গের সঙ্গে।
শেষ পর্যন্ত ৫৫ বলে ৭৯ রান করে অপরাজিত থাকেন ফিঞ্চ। নিজের ইনিংসটি ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজান এ ওপেনার। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান আসে স্টয়নিসের ব্যাট থেকে। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৩২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন ইশ সোধি। ২টি শিকার ট্রেন্ট বোল্টের।
১৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই স্বাগতিকদের চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়া। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। কাইল জেমিসন ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই থিতু হতে পারেননি। তিনি ছাড়া কেবল টিম সেইফার্ট (১৯) ও ডেভন কনওয়ে (১৭) দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারে।
সফরকারীদের প্রায় সব বোলারই ভোগান কিউই ব্যাটসম্যানদের। কেন রিচার্ডসন মাত্র ১৯ রানের খরচায় তুলে নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া অ্যাস্টন অ্যাগার, অ্যাডাম জাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১৫৬/৬ (ওয়েড ১৪, ফিঞ্চ ৭৯*, ফিলিপি ১৩, ম্যাক্সওয়েল ১৮, স্টয়নিস ১৯, অ্যাগার ০, মার্শ ৬, জাই রিচার্ডসন ৪*; সাউদি ০/৩, বোল্ট ২/২৭, স্যান্টনার ১/১৬, জেমিসন ০/৪৯, সোধি ৩/৩২)
নিউজিল্যান্ড: ১৮.৫ ওভারে ১০৬ (গাপটিল ৭, সাইফার্ট ১৯, উইলিয়ামসন ৮, কনওয়ে ১৭, ফিলিপস ১, নিশাম ৩, স্যান্টনার ৩, সাউদি ৬, জেমিসন ৩০, সোধি ০, বোল্ট ৬*; অ্যাগার ২/১১, মেরেডিথ ০/২০, জাই রিচার্ডসন ০/১৬, জ্যাম্পা ২/২৪, কেন রিচার্ডসন ৩/১৯, ম্যাক্সওয়েল ২/১৪)
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৫০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যারন ফিঞ্চ
Comments