জাপানে জরুরি অবস্থা আরও ২ সপ্তাহ বৃদ্ধি

Yoshihide Suga.jpg
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। ছবি: রয়টার্স

জাপানকে বিশ্বের মডেল হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। জাপান মানে সব কিছুতে নিখুঁত কারুকাজ। সব কিছুকে সামলে নেওয়া জাপানের পক্ষেই সম্ভব এবং জাপানকেই মানায়। বিভিন্ন সময় তার প্রমাণ রেখেছে জাপান।

কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনা সামাল দিতে যেন বিপাকে পড়েছে জাপান। সিদ্ধান্ত নিয়েও বার বার তা পাল্টাতে হচ্ছে। এ যেন শেষ হয়েও হলো না শেষ। রাজধানী টোকিওসহ চারটি প্রিফেকচারে আরও দুই সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। অন্য প্রিফেকচারগুলো হলো- সাইতামা, চিবা এবং কানাগাওয়া। ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত এই চারটি প্রিফেকচারে জরুরি অবস্থা বহাল থাকবে।

করোনা বিষয়ক একটি টাস্কফোর্সের বৈঠকে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের কাছ থেকে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে আজ শুক্রবার রাত ৯টায় নিজ কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।

বিশেষজ্ঞ প্যানেলের কাছ থেকে মতামত পাওয়ার পর গত ৩ মার্চ সুগা করোনাভাইরাস সামাল দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী তামুরা নোরিহিসার সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুগা আজ এ ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা দুই সপ্তাহ পর এই জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের জন্য বৃহস্পতিবার জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন। একইসঙ্গে পূর্ব ঘোষিত ৭ মার্চের মধ্যে করোনা আয়ত্তে আনতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

‘দুই সপ্তাহ জনগণের সহযোগিতা পেলে আমাদের বিশ্বাস আমরা জরুরি অবস্থা বজায় রেখে করোনা মোকাবিলা করে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারব’, বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সুগা বলেন, ‘রেস্তোরা, পানশালা ও বারগুলোতে সবাই মাস্ক খুলে পানাহার করেন এবং এতে করে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। তাই সেখানে সতর্কতা মেনে চলার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানাই।’

এ ছাড়া, কর্পোরেট অফিসগুলোকে টেলিওয়ার্ক চালিয়ে যেতে উৎসাহ প্রদানের আহ্বান জানান সুগা।

সুগা বলেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রথমেই ৩৭ হাজার সম্মুখ যোদ্ধাদের দেওয়া হয়েছে। মার্চের মধ্যে ৩৭ লাখ বয়স্কদের দেওয়া হবে। তারপর ক্রমান্বয়ে সবাইকে দেওয়া হবে। যতদূর সম্ভব একদিন আগে হলেও সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুগা বলেন, ‘জরুরি অবস্থা দুই সপ্তাহের জন্য বৃদ্ধির সঙ্গে টোকিও অলিম্পিক, প্যারালিম্পিকের কোনো সম্পর্ক নেই। একদিন আগে হলেও আমরা করোনা সামাল দিতে চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে টাস্কফোর্স প্রধান প্রফেসর ড. শিগেরু অমি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

করোনা নিয়ে দুজন প্রধানমন্ত্রী এ পর্যন্ত যতোবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন, আর কোনো বিপর্যয় নিয়ে এতোবার সংবাদ সম্মেলন করতে হয়নি। এমনকি ২০১১ সালের ১১ মার্চ ৯ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প পরবর্তী সুনামিতে ঘটে যাওয়া মহা বিপর্যয়ের পর এ পর্যন্ত চার জন প্রধানমন্ত্রী মিলেও এতগুলো সংবাদ সম্মেলন করতে হয়নি।

উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য জাপান ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর রাজধানী টোকিওসহ চারটি প্রিফেকচারে এক মাসের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।

এরপর চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি নতুন করে আরও সাতটি প্রিফেকচারকে নতুন করে জরুরি অবস্থার আওতায় আনা হয়। পরবর্তীতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে শুধু একটি প্রিফেকচার (তোচিগি) আওতামুক্ত রেখে বাকি ১০টিতে আরও এক মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। জরুরি অবস্থার আওতায় রেস্টুরেন্ট ও বারগুলোর কর্মঘণ্টা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

জাপানে এ পর্যন্ত করোনায় মোট শনাক্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৩৭ হাজার ১৪৯ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ২০২ জন। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ লাখ ১১ হাজার ৭৭৪ জন।

Comments

The Daily Star  | English

Polls could be held in mid-February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus has said the next general election could be held in the week before the start of Ramadan in 2026.

59m ago