‘প্রতি বছর ত্বকীর সঙ্গে একেকটা নাম যোগ হয়, এই হচ্ছে আমাদের উন্নয়নের ধরন’

Narayanganj.jpg
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের উদ্যোগে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার আট বছর উপলক্ষে সমাবেশ হয়। ছবি: স্টার

অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, যে সব লোক ত্বকীকে তুলে নিয়ে গেছে, এ ধরনের লোকেরাই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের ওপর ত্রাস সৃষ্টি করছে। ত্বকী নিহত হয়েছে আট বছর আগে। সেই ত্বকীকে আমরা প্রতি বছর যখন স্মরণ করি, প্রতি বছর ত্বকীর সঙ্গে একেকটা নাম যোগ হয়। এই হচ্ছে আমাদের উন্নয়নের ধরন।

আজ শুক্রবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি এলাকায় সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের উদ্যোগে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার আট বছর উপলক্ষে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সরকার ও খুনিদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, অনেক বিচার জমে গেছে। এ বিচার বাংলাদেশের মানুষ করবে। জনতার আদালত যে রায় দেবে, সে রায় রাষ্ট্রকে, সরকারকে বাস্তবায়ন করতেই হবে। তখন আমরা রায় পাব। সেটা ত্বকীর ক্ষেত্রে হবে, সাগর রুনি, তনু সবার ক্ষেত্রে হবে।’

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এ বিচার না করলে মানুষের কাছে বাংলাদেশকে ফেরত আনা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের পর মানুষ একটি দেশ পেয়েছিল। কিন্তু সেই দেশ এখন বেদখল হয়ে আছে লুটেরা ও দখলদারদের হাতে, ধর্ষকদের হাতে, নির্যাতকদের হাতে, ডাকাতদের হাতে, সম্পদ পাচারকারীদের হাতে এবং দেশি-বিদেশি দুষ্টচক্রের হাতে। সেই দেশকে আমাদের হাতে আনার জন্য শক্তি অর্জন করতে হবে। সেই শক্তি অর্জনের মধ্য দিয়ে একদিন জনতার আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘রফিউর রাব্বী ও তার সহযোদ্ধারা যেভাবে আন্দোলন করছেন, সেটা শুধু ত্বকী হত্যার বিচারই নিশ্চিত করবে না। এটা সারা বাংলাদেশে সব খুন, গুম, নির্যাতন, নিপীড়নের মানুষের যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনে একটা অসাধারণ প্রতীক হয়ে থাকবে। অসাধারণ প্রেরণা হয়ে কাজ করবে। সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ ত্বকী হত্যার বিচারের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক হত্যার বিচারের দাবি মানুষের সামনে নিয়ে আসছে।’

সমাবেশে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক ও নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে খুনিদের রাজত্ব কখনো চলবে না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নারায়ণগঞ্জ হবে। মানুষের নারায়ণগঞ্জ হবে।’

রফিউর রাব্বীর সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম, সদস্য সচিব কবি হালিম আজাদ, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, সিপিবি জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম প্রমুখ।

পরে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ সন্ধ্যায় ডিআইটি থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি চাষাঢ়া শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে ত্বকী শহরের শায়েস্তাখান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। ৮ মার্চ সকালে চাড়ারগোপে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ত্বকী হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে আট জনই পলাতক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে দুই আসামি ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের আট বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Bangladesh to push for tariff cuts in USTR talks in Washington today

Bangladesh has been engaged in negotiations to sign a tariff agreement with the US

45m ago