স্পিনারদের মুন্সিয়ানায় ক্যারিবিয়ানদের গুঁড়িয়ে সিরিজে ফিরল শ্রীলঙ্কা
আগের ম্যাচে ওভারে ছয় ছক্কা খাওয়া আকিলা ধনঞ্জয়া এবার দিলেন সবচেয়ে কম রান, নিলেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ওয়াইন্দু হাসারাঙ্গা ঝড়ো ব্যাট করার পর বল হাতে করলেন সেরা পারফরম্যান্স। লাকসান সান্দাকান রান আটকে দেওয়ার পাশাপাশি নিলেন ৩ উইকেট। স্পিনারদের সঙ্গে তাল মিলে দারুণ কার্যকর ব্রেক থ্রো আনলেন পেসার দুশমন্ত চামিরাও। প্রথম ম্যাচে উড়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে ফিরল সিরিজে।
অ্যান্টিগার কলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৪৩ রানে। আগে ব্যাট করে লঙ্কানদের ১৬০ রানের জবাবে কাইরন পোলার্ডের দল থামে ১১৭ রানে।
শনিবার বাংলাদেশ সময় ভোরে শুরু হওয়া ম্যাচ শ্রীলঙ্কার জয়ে অবদান বেশ কয়েকজনের। ওপেনার দানুশকা গুনাথিলেকা ৪২ বলে ৫৬, আরেক ওপেনার পাথুম নিশাকা করেন ২৩ বলে ৩৭। শেষ দিকে দলকে দেড়শো ছাড়িয়ে নিতে হাসারঙ্গার ব্যাট থেকে আসে ১১ বলে ১৯ রান। পরে ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৭ রানে দিয়ে ৩ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। প্রথম ম্যাচে সবচেয়ে খরুচে ধনঞ্জয়ার ৪ ওভার থেকে নেওয়া যায়নি ১৩ রানের বেশি, সঙ্গে তিনি পেয়েছেন এভিন লুইসের উইকেট। সান্দাকান পেয়েছেন ১০ রানে ৩ উইকেট। চামিরা দেন ২৬ রানে ২ উইকেট।
১৬১ রানের লক্ষ্য ক্যারিবিয়ানদের শক্ত ব্যাটিং লাইনআপের জন্য কঠিন কিছু ছিল না। কিন্তু অ্যান্টিগার মাঠে স্পিন গ্রিপ করায় তা হয়ে যায় চ্যালেঞ্জিং। এবার তাদের ওপেনাররাও আনতে পারেননি ঝড়ো শুরু। তৃতীয় ওভারে ধনঞ্জয়ার বলে লুইস বোল্ড হয়ে যান মাত্র ৬ রান করে। ক্রিস গেইল তিনে নেমে হাঁসফাঁস করছিলেন। আরেক দিকে লেন্ডল সিমন্স এদিনও ছিলেন ছন্দে। রান বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
পাওয়ার প্লের পরের ওভারে বল করতে এসেই হাসারাঙ্গার জোড়া আঘাতে কাবু হয় ক্যারিবিয়ানরা। গেইল (১৬), সিমন্স (২১) দুজনকেই তুলে নেন তিনি। মাত্র এক ওভার বল হাতে পেয়েছিলেন ফিফটি করা গুনাথিলেকা। ওই ওভারে তিনি আউট করে দেন জেসন হোল্ডারকে।
পেসের বৈচিত্র্য আর জায়গায় বল ফেলে চাপ বাড়াচ্ছিলেন চামিরা। ধুঁকতে থাকা নিকোলাস পুরান আর ব্র্যাভো এক ওভারেই দেন বিদায়। ইনিংসের একাদশ ওভারে জোড়া উইকেট উইকেট তুলে ম্যাচ লঙ্কানদের দিকে নিয়ে আসেন চামিরা।
এরপর পোলার্ডই ছিলেন একমাত্র ভরসা। তবে তাকে আর চড়ে বসতে দেয়নি লঙ্কান স্পিনাররা। হাসারাঙ্গা, সান্দাকানরা মিলে মুড়ে দেয় ইনিংস।
সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে আগে ব্যাট করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কা পায় দারুণ শুরু। ওভার প্রতি প্রায় ১০ করে রান আনতে থাকেন দুই ওপেনার। মনে হচ্ছিল দুইশোর কাছাকাছি চলে যাবে তারা। তবে ওপেনারদের বিদায়ের পর বদলে যায় পরিস্থিতি। দুজনকেই ফেরান ডোয়াইন ব্র্যাভো। একাদশ ওভারে দলের ৯৫ রানে রান আউট হন নিশাকা। ওই ওভারে ৪ বাউন্ডারি, ২ ছক্কায় ৪২ বলে ৫৬ করা গুনাথিলেকা দেন ক্যাচ।
অভিজ্ঞ দীনেশ চান্দিমাল আর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস রান পাননি। উলটো বল নষ্ট করেন তারা। ৭ বলে ৩ করা চান্দিমালকেও ছাঁটেন ব্র্যাভো। ১৫ বলে ১৩ করে অবেদ ম্যাককাওয়ের বলে বিদায় নেন ম্যাথিউস। পথ হারানো সফরকারীরা দেড়শো ছাড়ায় আসেন বান্দারা আর হাসারাঙ্গার ব্যাটে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৬০/৬ (গুনাথিলেকা ৫৬, নিশাকা ৩৭, চান্দিমাল ৩, ম্যাথিউস ১৩, বান্দারা ২১, থিসারা ২, হাসারাঙ্গা ১৯*, ডিকভেলা ০*; ফিদেল ০/১৯, সিনক্লিয়ার ০/৩২, হোল্ডার ১/৩৬, অবেদ ১/৩৬, ব্র্যাভো ২/২৫, অ্যালান ০/১১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৮.৪ ওভারে ১১৭ (সিমন্স ২১, লুইস ৬, গেইল ১৬, পুরান ৮, হোল্ডার ৯, ব্র্যাভো ৪, পোলার্ড ১৩, অ্যালান ১২, সিনক্লিয়ার ৩, অবেদ ২৩, ফিদেল ১* ; ধনঞ্জয়া ১/১৩, চামিরা ২/২৬, থিসারা ০/৪২, হাসারাঙ্গা ৩/১৭, সান্দাকান ৩/১০, গুনাথিলেকা ১/৮)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৪৩ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা।
Comments