‘২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখল করতে পারে চীন’
আগামী ছয় বছরের মধ্যে স্বশাসিত তাইওয়ানকে চীন দখল করে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।
আজ বুধবার ব্যাংকক পোস্ট’র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গণতান্ত্রিক তাইওয়ান দ্বীপটিকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার চীন নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে এবং দেশটির নেতারা প্রায়শই দ্বীপটিকে চীনের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার প্রতিজ্ঞার কথা জানান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তিকে চীন ছাপিয়ে যাওয়ায় ২০২৭ সালের মধ্যে মহাপ্রাচীরের দেশটি তাইওয়ান দখল করে নিতে পারে বলে গত মঙ্গলবার আশঙ্কা করেন এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল ফিলিপ ডেভিডসন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটিকে অ্যাডমিরাল ফিলিপ ডেভিডসন বলেছেন, ‘আমার আশঙ্কা চীন তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার অংশ হিসেবে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে সামরিক শক্তিতে ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাইওয়ান পরিষ্কারভাবে তাদের (চীনের) উচ্চাকাঙ্ক্ষার অংশ। আমি মনে করি, তাদের হুমকি চলতি দশকেই কার্যকর হতে পারে। এমনকি, তা আগামী ছয় বছরের মধ্যে ঘটে যেতে পারে।’
১৯৪৯ সালের গৃহযুদ্ধের শেষে চীন থেকে আলাদা হয় তাইওয়ান। এরপর থেকে দ্বীপটি প্রতিনিয়ত চীনের আক্রমণের হুমকিতে রয়েছে।
পৃথক-স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি না দিলেও শীর্ষ পরাশক্তিধর দেশটি অনানুষ্ঠানিকভাবে এই দ্বীপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ও সামরিক সহায়তাকারী।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে সংঘাত সৃষ্টি করে তাইওয়ানের সঙ্গে বন্ধুত্ব জোরদার করেছিল।
বর্তমান জো বাইডেনের প্রশাসনও তাইওয়ানকে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, দ্বীপটির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ‘সুদৃঢ়’।
যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের ডি ফ্যাক্টো রাষ্ট্রদূতকে বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের পর এই প্রথম তাইওয়ানের কোনো রাষ্ট্রদূতকে এমন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
প্রাকৃতিক-সম্পদে ভরপুর দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব বিস্তারের ফলে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের গুয়াম দ্বীপ ‘চীনা আগ্রাসনের’ হুমকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিপ ডেভিডসন।
তিনি বলেছেন, ‘আজ গুয়াম তাদের লক্ষ্য।’
প্রমাণ হিসেবে তিনি চীনের সামরিক বাহিনীর এক ভিডিওর কথা বলেন। ভিডিওচিত্রে একটি দ্বীপ ঘাঁটিতে আক্রমণের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডিয়েগো গার্সিয়া ও গুয়াম সামরিক ঘাঁটির সঙ্গে সেই দ্বীপটির মিল রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গুয়াম দ্বীপে অ্যাজিস অ্যাশোর ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী ব্যাটারি স্থাপনে অনুমতি দিতে সিনেট সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিপ ডেভিডসন। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে চীনের সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা সম্ভব বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গুয়ামকে রক্ষা করা উচিত। ভবিষ্যৎ হামলা থেকে একে রক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।’
তার মতে, ‘চীনের জানা উচিত দেশটি যা চাচ্ছে তার জন্যে তাকে অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে।’
Comments