মেসি-রোনালদোর কেউ না থাকায় দুঃখিত বার্সেলোনা কোচ
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর বিদায়ের পরদিন একই ভাগ্য বরণ করতে হলো লিওনেল মেসিকে। জুভেন্টাসের ছিটকে যাওয়াটা অপ্রত্যাশিত হলেও বার্সেলোনার বাদ পড়া একরকম নিশ্চিত ছিল। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোতেই সময়ের সেরা দুই ফুটবলারের যাত্রা থেমে যাওয়ায় দুঃখ বোধ করছেন বার্সার কোচ রোনাল্ড কোমান।
বুধবার রাতে পার্ক দে প্রিন্সেসে স্বাগতিক পিএসজির সঙ্গে ফিরতি লেগে ১-১ গোলে ড্র করে বার্সেলোনা। পারফরম্যান্সে উন্নতি হলেও অভাবনীয় কোনো প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখা সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে মেসিরা বিধ্বস্ত হয়েছিল ৪-১ গোলে। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা হয়নি স্প্যানিশ পরাশক্তিদের। আগের রাতে জিতেও ইউরোপের সেরা ক্লাব আসরে টিকে থাকতে পারেনি জুভেন্টাস।
ইতালিয়ান সিরি আর শিরোপাধারীদের ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগে রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ের দেখা মেলে। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে এফসি পোর্তোকে ৩-২ গোলে হারায় তুরিনের বুড়িরা। কিন্তু অ্যাওয়ে গোলে কপাল পোড়ে রোনালদোদের। প্রথম লেগে নিজেদের মাটিতে পোর্তো জিতেছিল ২-১ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ছিল ৪-৪।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিদায় নিয়েছেন রোনালদো ও মেসি। তবে কি গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফুটবলপ্রেমীদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখা এই দুই মহাতারকার রাজত্বের অবসান ঘটতে চলেছে? চোখের কোণে জমে থাকা আশঙ্কার মেঘ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না একেবারে। ১৬ বছর পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে নেই মেসি-রোনালদোর কেউই।
২০০৪-০৫ মৌসুমে শেষবার এমন কিছু প্রত্যক্ষ করেছিল ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসর। তখন অবশ্য দুজনেই ছিলেন কুঁড়ি রূপে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলা রোনালদোর বয়স ছিল ২০ বছর। ১৮ ছুঁইছুঁই মেসি ছিলেন বার্সাতেই। এরপর সময় যতই গড়িয়েছে, ততই তারা ডানা মেলেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুজনেরই আছে অজস্র রেকর্ড।
পিএসজি নামক বাধা পেরোতে ব্যর্থ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে কোমান বলেছেন, ‘এটা দুঃখের বিষয়। (মেসি ও রোনালদো) দুজনই অসাধারণ খেলোয়াড়। তারা এই প্রতিযোগিতার শেষ ধাপ পর্যন্ত টিকে থাকতে অভ্যস্ত হলেও এখন এটাই বাস্তবতা।’
গত মৌসুমের শেষে ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলেন মেসি। সে সিদ্ধান্ত থেকে পরবর্তীতে সরে আসলেও আর্জেন্টাইন তারকার ভবিষ্যৎ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। এখনও বার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেননি তিনি। অথচ আগামী গ্রীষ্মেই শেষ হয়ে যাবে তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ। তবে ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড ন্যু ক্যাম্পে থাকবেন বলে আশাবাদী কোমান।
নেদারল্যান্ডসের সাবেক এই ফুটবলার যোগ করেছেন, ‘আমি মনে করি, সিদ্ধান্তটা তাকেই নিতে হবে। অন্য কারও এক্ষেত্রে সাহায্য করার উপায় নেই। কিন্তু আমি মনে করি, কিছুদিন আগে থেকে সে দেখতে পাচ্ছে যে, এই দলটি সঠিক পথে এগোচ্ছে এবং সামনে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। আমি মনে করি, এই বিষয়টা তার থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সাহায্য করবে।’
Comments