ফেনীতে বাসায় বিস্ফোরণ: মায়ের পরে দগ্ধ মেয়েরও মৃত্যু

ফেনীর পৌর এলাকার শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের পাশে শফিক ম্যানশনের পঞ্চম তলায় বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হাফসা ইসলাম (১৫) মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ফেনীর পৌর এলাকার শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের পাশে শফিক ম্যানশনের পঞ্চম তলায় বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হাফসা ইসলাম (১৫) মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে, গত বুধবার বিকেলে হাফসার মা মেহেরুন নেছা (৪০) মারা যান। তারা দুইজনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা প্লাস্টিক সার্জারি এন্ড বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং সেখানেই মৃত্যু হয়।

নিহত হাফসা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

নিহতের পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন মা ও মেয়ের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মায়ের মরদেহ চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাটের ছত্তরুয়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে। মেয়ের মরদেহও তাদের নিজ গ্রামে দাফন করার কথা আছে। তারা শফিক ম্যানশনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।

গত ৫ মার্চ রাতে শফিক ম্যানশনের ৫ম তলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণে মুহূর্তে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ওই বাসা। বিস্ফোরণে পঞ্চম তলায় থাকা মা মেহেরুন নেছা (৪০) ও দুই মেয়ে হাফসা ইসলাম (১৫) ফারাহ ইসলাম মরিয়মসহ (১৮) তিন জন দগ্ধ হন। মা ও মেয়ে হাফসার শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যায়। দুজনকে প্রথমে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওই রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়৷ বড় মেয়ে মরিয়ম বর্তমানে সুস্থ আছেন।

এ ঘটনায় গত শনিবার ও রোববার জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বোম ডিসপোজাল ইউনিটের এক্সপার্ট টিম ও পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

তাদের বরাত দিয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানান, ওই বাসার রান্নাঘরের চুলার চাবি যথাযথভাবে বন্ধ করা হয়নি। সেখান থেকে ক্রমাগত গ্যাস বের হয়। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ থাকায় গ্যাস বাইরে যেতে না পেরে কক্ষে জমা হয়। এ সময় মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে স্পাকিং হয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য পুলিশের এন্টি টেররিজম টিম, ডিএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের এক্সপার্ট টিম, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা পুলিশের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। ওই কমিটি বিস্ফোরণের বিষয়ে আরও তদন্ত এবং মূল্যায়নের পর প্রতিবেদন দেবেন।

নিহত মেহেরুন নেছার স্বামী মাহফুজুল ইসলাম দুবাই প্রবাসী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত হাফসার দাদা আবুল কাশেম জানান, সন্তানদের পড়ালেখার জন্য প্রায় এক যুগ ধরে তারা শফিক ম্যানসনের পঞ্চম তলার এক ইউনিট ভাড়া নিয়ে বাস করতেন। বড় নাতনি ফারাহ ইসলাম মরিয়ম এবার আইএ পাশ করে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির জন্য চেষ্টা করছে। ছোট মেয়ে হাফসা ইসলাম স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

আরও পড়ুন: রহস্যময় বিস্ফোরণ, ফেনীর আবাসিক ভবনটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago