মিয়ানমার সামরিক সরকারের নির্যাতন মানবতাবিরোধী অপরাধ: জাতিসংঘ র‌্যাপোর্টিয়ার

মিয়ানমারের নাগরিকদের ওপর সামরিক সরকারের দমন ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার টম অ্যান্ড্রুজ।
Myanmar death
মিয়ানমারে বিক্ষোভকারী এনএলডি সদস্য জাও মিয়াত লিনের মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারি। ১১ মার্চ ২০২১। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের নাগরিকদের ওপর সামরিক সরকারের দমন ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার টম অ্যান্ড্রুজ।

তিনি মিয়ানমারে জরুরি মানবাধিকার পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের নৃশংস অভিযান সম্ভবত মানবতাবিরোধী অপরাধের আইনি সংজ্ঞা পূরণ করে।’

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের পক্ষে কেবল মৌখিক সমর্থন নয়, সহায়ক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এখন তাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা প্রয়োজন।’

তার মতে, প্রতিদিনের সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে— বিস্তৃত ও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিজ দেশের বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে তারা হত্যা, নিপীড়ন, কারাদণ্ডসহ অন্যান্য অপরাধ করছে।

‘এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অ্যান্ড্রুস জানিয়েছেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে অন্তত ৭০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বয়স ২৫ বছরের কম। অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে অবৈধভাবে আটক করা হয়েছে এবং সেখানে সহিংসতা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

তিনি বলেন, ‘এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অবশ্যই সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’ মিয়ানমারের জনগণের পক্ষে আন্তর্জাতিক জোট গঠনের প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অ্যান্ড্রুজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাঁচটি সম্ভাব্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি মিয়ানমারের সেনা সরকারকে তহবিল সরবরাহ বন্ধ, তাদের ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞা বিশেষ করে, সেনাদের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস তেল ও গ্যাস বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়াও সামরিক সরকারের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উত্থাপনে রাজি না হলে দেশগুলোর আদালত সর্বজনীন বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে মিয়ানমারে সংঘটিত অপরাধের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এছাড়াও, তিনি নাগরিক সমাজ ও সহায়তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সরাসরি সমন্বয় করে যখনই সম্ভব মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা পাঠানো উচিত বলে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন:

মিয়ানমারে বিক্ষোভ আরও জোরদারের আহ্বান

সু চির বিরুদ্ধে ৬ লাখ ডলার ও স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

মিয়ানমারে সহিংসতার নিন্দায় নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

আজ মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত ৭

মিয়ানমার: ১৯৪৮ থেকে ২০২১

মিয়ানমারে বিক্ষোভ: একদিনে নিহত ৩৮, আন্দোলন থামছে না

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, নিহত ৭

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী মিছিলে পুলিশের গুলি, নিহত ২

মিয়ানমারে বিক্ষোভ দমনে জলকামান, গ্রেপ্তার

মিয়ানমারে অভ্যুত্থান: সামরিক বাহিনীর হুমকি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ

এপির বিশ্লেষণ: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের নেপথ্যে

নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ, সু চির মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারে বিক্ষোভ

‘সেনাবাহিনী সুচির নীতি গ্রহণ করেনি, সুচি সেনাবাহিনীর নীতি গ্রহণ করেছে’

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

4h ago