কুষ্টিয়া

পুলিশকে সন্ত্রাসীদের তথ্য দিয়ে হামলার শিকার, ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে সন্ত্রাসীদের তথ্য দিয়ে সেই সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতার আহত হয়েছেন কুষ্টিয়ার এক যুবক। 

অভিযোগ উঠেছে, তথ্য পেয়ে পুলিশই সন্ত্রাসীদের কাছে ওই যুবকের নাম জানিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। 

গত শুক্রবার কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদাহ এলাকার ফয়জুল্লাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কাছে করা লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আসাদুল হক নামের এক যুবক শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জুনিয়াদহ এলাকায় তার বাড়ির পাশে পদ্মা নদীতে তিনটি গুলির শব্দ পান। তিনি বিষয়টি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে জানান। ওই সেবা থেকে তার সঙ্গে ভেড়ামারা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তার (ডিউটি অফিসার) সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলটি ছিল ভেড়ামারা থানার কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের আওতায়। তাই ভেড়ামারা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ভুক্তভোগী যুবকের নাম ও মুঠোফোন নম্বর কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেনকে দেন।

আসাদুল হক একই এলাকার মৃত আবু বক্করের ছেলে। 

তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, এর ঘণ্টা তিনেক পর বেলা ১টার দিকে এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন তাকে ফোন দেন এবং বলেন, ‘তুই ফাজলামি করিস, আমি খবর নিয়ে দেখেছি এলাকায় কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ 

আসাদুল হক জানান, ওই ঘটনার ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে আট জন যুবক তার বাসায় প্রবেশ করে তাকে গালাগালি করেন। এদের মধ্যে চার জন তার ওপর হামলা করেন। একজন রামদা দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন। সন্ত্রাসীরা তাকে বলে, ‘তোর এত বড় সাহস, তুই পুলিশে খবর দিস’। 

পরে আসাদুলের চিৎকার শুনে পাশেই মাঠে কাজ করা কয়েকজন কৃষক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং তাকে উদ্ধার করেন। সন্ত্রাসীরা তাকে পিস্তল দিয়ে গুলির করার ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায়। 

লিখিত অভিযোগে সাত জনের নাম উল্লেখ করেছেন আসাদুল। এরা হলেন- আলমগীর, মামুন, মিলন, শাকিল, রুবেল, আসমান, রাকিব ও অজ্ঞাত একজন। এদের সবার বাড়ি ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। 

আসাদুল জানান, তিনি প্রথমে ভেরামারা উপজেলা স্বাস্থ্য ভবনে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে নিরাপদ বোধ না করায় ভর্তি হন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকালে ছাড়পত্র নেন। বর্তমানে তিনি বাড়িতে আছেন। 

আজ রোববার সকালে আসাদুল জানান, তার সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্তাব্যক্তি কথা বলেছেন। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। 

অভিযুক্ত এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোন পত্রিকার সাংবাদিক জানতে চান তিনি। দ্য ডেইলি স্টার নাম বলার পর ফোন কেটে দেন তিনি। যতবার ফোন করা হয়, ততবারই কেটে দেন তিনি। পরে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।  

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল জানান, তিনি আজ সকালে আসাদুলের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। 

ওসি জানান, ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও নাটোরের লালপুরের তিনটি গ্রুপ পদ্মার বালুর দখলদারিত্ব নিয়ে বিবাদে লিপ্ত। তার থানার অংশে যতটুকু পড়েছে, তা তিনি খতিয়ে দেখছেন। 

এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী যুবকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তার বক্তব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’

ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago