পাবনায় এমপি পুত্রের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষক ড. এস এম নাফিস শামসের বিরুদ্ধে খাস জমি দখল ও ভূমিহীনদের উচ্ছেদের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। পাবনার বেড়া উপজেলার পৌর এলাকার পায়নায় যমুনা নদীর তীরে একটি প্রকল্পের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে জমি দখল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
নাফিস শামসের প্রকল্পের সাইনবোর্ড। ছবি: স্টার

পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষক ড. এস এম নাফিস শামসের বিরুদ্ধে খাস জমি দখল ও ভূমিহীনদের উচ্ছেদের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। পাবনার বেড়া উপজেলার পৌর এলাকার পায়নায় যমুনা নদীর তীরে একটি প্রকল্পের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে জমি দখল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

তবে, অভিযোগটি সত্য নয় বলে দাবি করে নাফিস শামস বলেন, ‘যে জায়গায় প্রকল্পের কাজ চলছে, তা আমাদের পূর্বপুরুষদের জায়গা। স্থানীয় কিছু আসাধু চক্রের অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, এমপি পুত্রের নির্দেশে ও উপস্থিতিতে তার লোকজন খাস জমি ভোগদখলকারী দরিদ্র চাষিদের মারধর ও রোপণকৃত ফসল নষ্ট করে দিয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে ভুক্তভোগীরা এলাকায় বিক্ষোভ ও প্রতিকার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন।

লিখিত অভিযোগে স্থানীয়রা জানান, পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনের এমপি শামসুল হক টুকুর ছেলে নাসিফ শামস বেড়া উপজেলার পায়না এলাকায় যমুনা নদীর তীরে ২০১২ সালে ৬০ বিঘা জমি কেনেন। এরপর নিজের জমি ছাড়াও আশেপাশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের জমি দখলে নিয়ে নেন। এরপর ক্রমেই ক্ষমতার দাপটে হুমকি-ধামকি দিয়ে আশেপাশের দরিদ্র চাষিদের দখলে থাকা ব্যক্তিগত ও খাস খতিয়ানভুক্ত জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বেড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান মানু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রনি “সৌদিয়া এগ্রো সোলার পিভি পাওয়ার প্লান্ট” সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে আশেপাশের সব জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। সাধারণ মানুষের তো বটেই, আমার দখলে থাকা জমির ধানও তিনি নষ্ট করে দিয়েছেন।’

‘গত ১২ মার্চ সকালে লোকজন নিয়ে দরিদ্র চাষিদের রোপণ করা বোরো ধান নষ্ট করে কাঁটাতারে জমি ঘিরে নেওয়ার চেষ্টা করেন রনি। সে সময় দরিদ্র চাষিরা বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদের মরধর করেন’, বলেন তিনি।

পাবনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নাফিস শামস। ছবি: স্টার

গ্রামবাসীদের পক্ষে মনিরুজ্জামান ও মানিক গত রোববার পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তারা এমপি পুত্রের বিরুদ্ধে জমি দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনেছেন।

পাবনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) কবির মাহামুদ অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযোগ তদন্ত করার জন্যে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

গতকাল পাবনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে নিজের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে নাফিস শামস বলেন, ‘আমি কারো কোনো জায়গা দখল করিনি।’

তিনি দাবি করেন, পায়না ও সম্ভুপুর মৌজায় তার পূর্বপুরুষদের কয়েক শ বিঘা জমি রয়েছে। তাদের নিজেদের জমিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি টেকনিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের জন্য একটি গবেষণাধর্মী প্রকল্প করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

‘স্থানীয় গ্রামবাসীর নামে যারা অভিযোগ করছেন, তারা এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালু-মাটির ব্যবসা ও মাদক চোরাকারবারসহ অবৈধ কর্মকাণ্ড করে চলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন’, বলেন তিনি।

জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনার ডিসি কবীর মাহমুদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নদী তীরবর্তী যে জমি নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, তা ব্যক্তিগত না খাস সেটি যাচাই করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাচাই শেষে প্রমাণ সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago