মিয়ানমারে তাইওয়ানের সব প্রতিষ্ঠানকে নিজ দেশের পতাকা টাঙানোর পরামর্শ
মিয়ানমারে অবস্থিত তাইওয়ানের মালিকানাধীন সব প্রতিষ্ঠানকে জরুরিভিত্তিতে নিজেদের পতাকা এবং সাইনবোর্ড টাঙানোর পরামর্শ দিয়েছে দেশটির ডি ফ্যাক্টো দূতাবাস।
গতকাল সেনাবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে বেশ কিছু চীনা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর সতর্কতা হিসেবে এ ব্যবস্থা নিতে বলেছে তাইওয়ানের দূতাবাস।
রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের প্রতিষ্ঠান ভেবে বিক্ষোভকারীরা যেন তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা না চালায়, সেজন্য পতাকা ও সাইনবোর্ড টাঙানোর মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিতে চাইছে তারা।
গতকাল হ্লাইংথায়া এলাকায় চীনের অর্থায়নে পরিচালিত কয়েকটি কারখানায় হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অনেক চীনা কর্মী আহত হন এবং অনেকে আটকা পড়েন।
গতকালের ঘটনার পর মিয়ানমারে চলমান সহিংসতা নিয়ে চীনের কাছ থেকে সবচেয়ে কঠোর মন্তব্য এসেছে। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে বলেছে চীন। তারা আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি দিতে বলেছে। একই সঙ্গে চীনা সম্পদ ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী। চীনকে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তাইওয়ানে একটি বড় সিনো-বার্মিজ জনগোষ্ঠী আছে, যাদের সঙ্গে মিয়ানমারের নিবিড় সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।
তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ সোমবার জানায়, তাদের দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠানে গতকাল হামলা চালানো হয়েছে। সেসময় প্রতিষ্ঠানটির ১০ জন কর্মী আটকা পড়েন। কিন্তু, কেউ হতাহত হননি।
এ ঘটনার পর তাইওয়ানের দূতাবাস থেকে মিয়ানমারে অবস্থিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। দূতাবাস ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরামর্শ দিয়েছে যে, বড় বড় সাইনবোর্ডে, বার্মিজ ভাষায় ‘তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান’ লিখে এবং দেশের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে স্থানীয়দের কাছে বিষয়টা পরিষ্কার করতে যে, তারা তাইওয়ান থেকে আগত, চীন থেকে নয়। যাতে কোনো বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ভুলবশত তাদেরকে চীনা ভেবে হামলা না চালায়।
এর আগেও, দক্ষিণ এশিয়ায় তাইওয়ানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে চীন দেশীয় ভেবে ভুল করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। ২০১৪ সালে ভিয়েতনামের হাজারো মানুষ বিদেশি কারখানাগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। মূলত ভিয়েতনামের জলসীমায় চীনের অবৈধ তেল খনন প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ ছিল এটি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেসময় তাইওয়ানের মালিকানাধীন কারখানাগুলোতেও আগুন দেওয়া হয়েছিল।
তাইওয়ান একটি গণতান্ত্রিক ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও চীন তাদেরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। তাইপের সঙ্গে মিয়ানমারের কোনো আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কারণ তারা এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের অংশ হিসেবেই বিবেচনা করে থাকে।
আরও পড়ুন:
মিয়ানমারে গতকাল নিহত ৩৯, দুই জেলায় সামরিক আইন জারি
মিয়ানমারে এক দিনে নিহত ১৩, সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ‘বিপ্লবের ডাক’
অভ্যুত্থান মেনে না নেওয়ার আহ্বান সু চির
যে কারণে সু চিকে সরিয়ে ক্ষমতা নিলো সেনাবাহিনী
‘সু চি সরকারের বেশিরভাগ ক্ষমতা সামরিক বাহিনীর হাতেই ছিল’
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দায় বিশ্ব সম্প্রদায়
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারের ৭০ হাসপাতালে কর্মবিরতি
মিয়ানমারে সেনাবিরোধী ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ
অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ, সু চির মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারে বিক্ষোভ
মিয়ানমারে বিক্ষোভ দমনে জলকামান, গ্রেপ্তার
মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলিবিদ্ধ তরুণী আইসিইউতে
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে টোকিওতে বিক্ষোভ
মিয়ানমারে অভ্যুত্থান: বিক্ষোভকারীদের ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের হুঁশিয়ারি
মিয়ানমারে ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিবাদে সাইবার যুদ্ধ, সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক
মিয়ানমারে সেনাবিরোধী মিছিলে পুলিশের গুলি, নিহত ২
মিয়ানমারে অভ্যুত্থান: সামরিক বাহিনীর হুমকি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ
মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, নিহত ৭
মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, আজ নিহত ৯
মিয়ানমারে বিক্ষোভ: একদিনে নিহত ৩৮, আন্দোলন থামছে না
মিয়ানমারে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে কূটনীতিকদের বিদ্রোহ
মিয়ানমারে পুলিশের গুলিতে নিহত কমপক্ষে ১৮
Comments