কিশোরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১৫ এপ্রিল
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং আরও নয় জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ করতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে আরও ৩০ দিন সময় দিয়েছে ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল।
মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে ট্রাইব্যুনাল তদন্ত কর্মকর্তাকে ১৫ এপ্রিল প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেন।
সিটিটিসি ইউনিটের উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আফছার আহমেদ তদন্ত শেষ করতে আরও ৩০ দিন সময় চেয়ে আবেদন করেন।
ওই আবেদনেরভিত্তিতে আজ সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ নির্দেশ দেন।
আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি অভিযুক্তদের সম্পূর্ণ তথ্য, সঠিক নাম ও ঠিকানা চেয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় চিঠি পাঠান। কিন্তু, তারা এখনো অভিযুক্তদের ঠিকানা এবং নাম পাঠায়নি। এ ছাড়াও, তাকে অভিযুক্তের ফেসবুক লিংক ও ম্যাসেজ খুঁজে বের করতে হবে। তাই তদন্ত শেষ করতে তার আরও সময়ের প্রয়োজন।
আজকের শুনানির সময় বিএলই সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারহোল্ডার-পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, কিশোর ও রাষ্ট্রচিন্তার কর্মী দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত ছিলেন।
আরেক অভিযুক্ত লেখক মুশতাক আহমেদ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর কারাগারে মারা যান।
গত বছরের ৬ মে র্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিশোর, মুশতাক, দিদারুল ও মিনহাজসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
এ মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সুইডিশ-বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনীম খলিল, হাঙ্গেরিভিত্তিক উদ্যোক্তা জুলকারনাইন সায়ের খান সামি, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাংবাদিক সাহেদ আলম, জার্মানিভিত্তিক ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ এবং ফিলিপ শুমাখার।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানার উপ-পরিদর্শক মো. মহসিন সরদার আট জনের নাম বাদ দিয়ে তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। ওই তিন জন হলেন- কিশোর, মুশতাক ও দিদারুল।
এ প্রসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, তিনি আট জন অভিযুক্তের নাম বাদ দিয়েছেন, কারণ তাদের সঠিক নাম এবং ঠিকানা খুঁজে পাননি।
তিনি আরও জানান, যদি তাদের পুরো নাম এবং ঠিকানা পাওয়া যায়, তাহলে একটি সম্পূরক চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে ১ ফেব্রুয়ারি তাসনীম এবং জুলকারনাইনকে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ শিরোনামে আল জাজিরার একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে।
ওই ঘটনার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীমের দায়ের করা আবেদনেরভিত্তিতে মামলাটির অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে ২৩ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পাবলিক প্রসিকিউটরের আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তদের জব্দকৃত নথি, ফেসবুক লিংক, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার এবং মেসেঞ্জার বার্তা বিশ্লেষণ করা হলে তাদের নাম, ঠিকানা ও অবস্থানসহ সঠিক তথ্য বের করা যাবে।
আরও পড়ুন:
নির্যাতন করা হয়েছে, এখন হাসপাতালে যাচ্ছি: কিশোর
১০ মাস পর মুক্তি পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর
অবশেষে জামিন পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর
কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ: সেশন কোর্টে আবেদন করার নির্দেশ
কার্টুনিস্ট কিশোরের রিমান্ড নামঞ্জুর
মুশতাকের মৃত্যুর পর কিশোরের জীবন নিয়ে শঙ্কা
কার্টুনিস্ট কিশোরকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের
কারাবন্দি কার্টুনিস্ট কিশোর পেলেন রবার্ট রাসেল কারেজ অ্যাওয়ার্ড
কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক গ্রেপ্তার
কিশোর ও মুশতাকের জামিন শুনানিতে অপরাগতা জানিয়েছেন ভার্চুয়াল আদালত
Comments