ভাড়াটে মামলাবাজ গ্রেপ্তার
কখনও নিজের, কখনও অন্যের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মামলা করেন তিনি। দেশের বিভিন্ন আদালত ও থানায় শতাধিক ভুয়া মামলা করেছেন। কখনও সাংবাদিক, কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা কিংবা এমপি-মন্ত্রীর কাছের লোক পরিচয় দিয়ে ভাড়ায় মামলা করা এই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আজিজুল হক পাটওয়ারির বাড়ি চাঁদপুরে। তার বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় এক ভুক্তভোগী নারীর করা মামলায় আজ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। রাজধানীর কমলাপুরের দক্ষিণ কলোনি এলাকা থেকে গত রাত ১১টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সারাদেশে এই ব্যক্তির একটি মামলাবাজ সিন্ডিকেট আছে। এই সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
মামলার বরাত দিয়ে যুগ্ম-কমিশনার জানান, ওই ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে ২০১৬ সালে পরিচয় হয় আজিজুলের। ওই নারীর পাওনা টাকা উদ্ধারে সহযোগিতার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা নেন আজিজুল। পরে, টাকা ফেরত চাইলে নারী পাচার, মাদক ব্যবসা, দেহ-ব্যবসাসহ নানা অভিযোগে ওই নারীর বিরুদ্ধে পাঁচটি মিথ্যা মামলা করেন আজিজুল।
আজিজুল বাদী হয়ে মামলা করেছেন এমন অন্তত ২৪টি মামলার নথি এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে।
পুলিশ জানায়, এই নারী ছাড়াও চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য মানুষ আজিজুলের মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন, জেল খেটেছেন। আজিজুল মামলা ও অভিযোগগুলোর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায় ঘটনা প্রায় কাছাকাছি হলেও থানা ও আসামি আলাদা। তবে, মামলার সাক্ষী ঘুরে ফিরে কয়েকজনই। কখনও তার ছেলে আবু ইউসুফ পাটোয়ারি, কখনও সহযোগী সোহান ও আরিফুল ইসলাম, ভগ্নিপতি সেলিম মিয়া, ছোট ভাই আলমগীর, ভাতিজা জামালকে সাক্ষী বানান তিনি।
অসহায় অশিক্ষিত নারীর স্বামীকে জেল থেকে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে টিপসই নিয়ে আজিজুল হক পাটোয়ারি নিজের প্রতিপক্ষ ও অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও মানব পাচারের মামলা দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছেন বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ আরও জানায়, মামলাবাজ হিসেবে সুখ্যাতি ও দক্ষতার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হয়ে ‘ভাড়ায়’ হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করা আজিজের অন্যতম আয়ের উৎস।
Comments