হাইকোর্টে ইরফান সেলিমের জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই

নৌবাহিনীর কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
ইরফান সেলিম। ছবি: প্রথম আলোর সৌজন্যে

নৌবাহিনীর কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ইরফান সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আদালতে এই রায়ের পরে ইরফান সেলিমের কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকলো না।’

সাঈদ আহমেদ রাজা আরও বলেন, ‘ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে আদালত তিনটি মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন। আর দুটি মামলায় ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আদালতের নথি পৌঁছালেই কাশিমপুর কারাগার থেকে ইরফান সেলিম মুক্তি পাবেন।’

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। গত ২৭ জানুয়ারি একই বেঞ্চ কেন কারাবন্দি ইরফান সেলিমকে জামিন দেওয়া হবে না তার কারণ ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছিলেন।

গত বছরের ২৫ অক্টোবর রাতে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে ইরফান সেলিমসহ (৩৭) চার জনের নামে এবং দুই-তিন জনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইরফান ছাড়া বাকি তিন অভিযুক্ত হলেন— ইরফানের সহযোগী এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), ব্যক্তিগত দেহরক্ষী মো. জাহিদ (৩৫) ও গাড়িচালক মো. মিজানুর রহমান (৩০)।

এজহারে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর রাত পৌনে ৮টার দিকে নীলক্ষেত থেকে পাঠ্যবই কিনে লেফটেনেন্ট ওয়াসিফ ও তার স্ত্রী মোটরসাইকেলে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরছিলেন। পথে ল্যাবএইড হাসপাতালের কাছে রাস্তায় একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-৫৭৩৬) তাদের পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। পরিচয় দেওয়ার পরও গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি তাদের গালিগালাজ করেন ও হত্যার হুমকি দেন।

এরপর কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডের কাছে সেই গাড়িটিকে থামিয়ে নৌ কর্মকর্তা আবারও পরিচয় দিলে গাড়ির আরোহীরা সবাই নেমে এসে তাকে কিলঘুষি মেরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যান।

মামলার পর দিন ২৬ অক্টোবর রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানাধীন দেবিদাস ঘাট লেন হাজী সেলিমের পৈত্রিক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। অভিযানে তাদের বাসা থেকে বিদেশি মদ ও অবৈধ ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। অবৈধ অস্ত্র, ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিম এবং ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে তার দেহরক্ষী জাহিদকে কারাদণ্ড দেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ঘটনার পরে ইরফান সেলিমকে কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না পেয়ে লালবাগ থানা পুলিশ অস্ত্র ও মাদক মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দিতে আবেদন জানিয়ে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদলতের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র মামলা এবং ১ মার্চ মাদক মামলা থেকে অব্যাহতি পান ইরফান সেলিম।

আরও পড়ুন:

মাদক মামলা থেকেও অব্যাহতি পেলেন ইরফান সেলিম

অস্ত্র মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি

ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক মামলা

কাউন্সিলর পদ থেকে ইরফান সেলিমকে বরখাস্ত

সেলিমপুত্রের রং নম্বরে ডায়াল

ভ্রাম্যমাণ আদালতে ইরফান সেলিমের ১ বছরের কারাদণ্ড

ইরফান সেলিমের গাড়ি চালক ১ দিনের রিমান্ডে

হাজী সেলিমের ছেলে র‌্যাব হেফাজতে

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago