জলের টাকা জলেই গেল!

বান্দরবানের নীলাচল পর্যটন এলাকায় যাওয়া ভ্রমণকারী ও স্থানীয়দের পানির চাহিদা মেটাতে ‘পানি সরবরাহ প্রকল্প’র আওতায় দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই)। কিন্তু, এখন পর্যন্ত সেখান থেকে পানি আর পাওয়া যায়নি।
‘সঠিকভাবে ব্যয় না করা’র অভিযোগে বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রকল্পের কাজ আর এগোয়নি। ছবি: স্টার

বান্দরবানের নীলাচল পর্যটন এলাকায় যাওয়া ভ্রমণকারী ও স্থানীয়দের পানির চাহিদা মেটাতে ‘পানি সরবরাহ প্রকল্প’র আওতায় দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই)। কিন্তু, এখন পর্যন্ত সেখান থেকে পানি আর পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী (বর্তমানে মন্ত্রী) বীর বাহাদুর উশৈসিং। ২০১৫ সালের জুনে প্রকল্পটির ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়। এরপর বরাদ্দকৃত অর্থ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ আর এগোয়নি। ডিপিএইচই বরাদ্দ বাড়ানোর আবেদন করলেও ‘পূর্বে বরাদ্দকৃত অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় না করা’র অভিযোগে তা আর বাড়ানো হয়নি।

ডিপিএইচই বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মিষ্ঠা আচার্যি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘২০১৫ সালের জুনে প্রকল্পটির ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়। এরপর প্রকল্পটি শেষ করতে আরও প্রায় এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা অতিরিক্ত বাজেট চেয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠিয়েছি।’

ডিপিএইচইর প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদেরকে প্রকল্প এলাকা ঘুরে সেটিতে ইতোমধ্যে ব্যয় হওয়া অর্থ সঠিকভাবে খরচ করা হয়েছে কি না, তাসহ এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।’

শর্মিষ্ঠা আচার্যি জানান, এর আগে বেশ কয়েকটি টিম প্রকল্প এলাকাটি পরিদর্শন করেছিল। কিন্তু, এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।

২০১৪ সালে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ছবি: স্টার

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিপিএইচইর কয়েকজন কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা যে অর্থ ব্যয় হিসাবে দেখিয়েছিলেন, তা তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করেননি।

তবে, এই অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকল্পের এক প্রকৌশলী মনজেল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্যে সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয় করেছি।’

ডিপিএইচই চট্টগ্রাম সার্কেলের সুপারেনটেনডিং প্রকৌশলী জহির উদ্দিন দেওয়ান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই প্রকল্পের ব্যয় হওয়া অর্থ সঠিকভাবে খরচ করা হয়েছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখব।’

সম্প্রতি প্রকল্প এলাকায় শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ভ্রমণকারীদের প্রবেশ করতে দেখা যায়। যেটি বর্তমানে পুরোপুরি অনিরাপদ অবস্থায় আছে।

খোরশেদ আলম নামে ডিপিএইচইর এক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা ভ্রমণকারীদের সুরক্ষার জন্যে অনিরাপদ প্রকল্পটির পাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছিলাম। তবে, কিছুদিন পর সেটি নষ্ট হয়ে যায়।’

এ বিষয়ে বান্দরবানের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) জাকির হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নীলাচল পর্যটন এলাকায় পানির সংকট সত্যিই মারাত্মক। ডিপিএইচইর আওতাধীন পানি সরবরাহ প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে ভ্রমণকারীসহ ওই এলাকার স্থানীয়দের পানির সংকট অবশ্যই সমাধান হয়ে যেত।’

পানি সরবরাহ প্রকল্পের অনিরাপদ এলাকায় ভ্রমণকারীদের প্রবেশ বিষয়ে কিছু জানেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি খুব শিগগিরই এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

Comments

The Daily Star  | English

Gaza deaths rise to 15,899, 70% of them women, children

The health ministry in the Gaza Strip today said 15,899 people had died in the Palestinian territory since the start of the Israeli attack, with 42,000 wounded

36m ago