‘মাস্ক নেই, বই বিক্রি নেই’

বইমেলায় এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি আজ থেকে শুরু হয়েছে ‘মাস্ক নেই, বই বিক্রি নেই’ কর্মসূচী।
মেলায় আগতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মেলার প্রতিটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে হ্যান্ডওয়াশ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ এবং মাস্ক ছাড়া বই বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছবি: স্টার

বইমেলায় এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি আজ থেকে শুরু হয়েছে ‘মাস্ক নেই, বই বিক্রি নেই’ কর্মসূচী।

গত এক সপ্তাহে চলমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও পর্যালোচনা করে মেলা সম্পর্কে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভাটিতে উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব (ভারপ্রাপ্ত) অপরেশ কুমার ব্যানার্জী, ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২১’-এর সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিবৃন্দ।

সভায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৪ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত বইমেলা চালু রাখার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করা হয়। ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতিতে বাংলা একাডেমি, প্রকাশকবৃন্দ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে মেলায় আগতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে হ্যান্ডওয়াশ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ এবং মাস্ক ছাড়া বই বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়।

মেলা প্রাঙ্গণে কেউ যেন মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা না করে তা নিশ্চিত করতে সমন্বিত দলের উদ্যোগের পাশাপাশি প্রচার মাইকে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালানো হবে।

‘মাস্ক নেই, বই বিক্রি নেই’ এই শ্লোগান বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি প্রকাশনীর ভেতরে লিখে রাখার অনুরোধ জানানো হয় সভায়।

বইমেলা সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা মেলাকে সুস্থভাবে চালিয়ে নেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছি। মেলার চারদিকে সচেতনতা কার্যক্রম চলমান থাকবে। সবাইকে তা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি।’

এবারে মেলায় এখন পর্যন্ত নতুন বই এসেছে ৬৯১টি, এর মধ্যে গতকাল এসেছে ১৯৪টি। উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে সময় থেকে এসেছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘যেটুকু টুনটুনি সেটুকু ছোটাচ্চু’, কথাপ্রকাশ থেকে এসেছে সনজীদা খাতুনের ‘জীবনবৃত্ত’, আহমদ রফিকের ‘একান্ত বিচারে বিদেশী মনীষা’, বৈভব থেকে এসেছে হিমেল বরকতের ‘পথ-কবিতার বিলুপ্ত ভুবন’, অনন্যা থেকে এসেছে মনজুরুল আহসান বুলবুলের ‘দুইশ ছড়ার ঝিলিক’, অন্যপ্রকাশ থেকে এসেছে সুমন্ত আসলামের ‘তুমি একটু কেবল বসতে দিও কাছে’, পাঞ্জেরী থেকে বেরিয়েছে কামাল চৌধুরীর ‘স্তব্ধতা যারা শিখে গেছে’, জাগৃতি থেকে এসেছে ফারুক নওয়াজের ‘ওই পাখি নীল পাখি’, নৈঋতা ক্যাফে থেকে বেরিয়েছে পরিতোষ হালদারের ‘কাচের জামা’, চিরদিন প্রকাশনী থেকে এসেছে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ‘মধ্যরাতে দুলে ওঠে গ্লাস’।

গতকাল মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে সংবাদ সাময়িকপত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাফর ওয়াজেদ, আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোহাম্মদ সেলিম ও কুতুব আজাদ। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।

প্রাবন্ধিক বলেন, পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসনের প্রায় চব্বিশ বছর, অল্পকিছু ব্যতিক্রম বাদ দিয়ে সংবাদমাধ্যম বাঙালির মুক্তিসংগ্রামকে সফল পরিণতিতে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছিল। পূর্ববঙ্গে স্বাধীন সংবাদপত্র যাতে বিকশিত না হয়, সেজন্য পাকিস্তানি সামরিক শাসকগোষ্ঠী সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করতে চেয়েছে। জনমত সৃষ্টি, জনমতের বিশ্বস্ত বাহন হিসেবে সংবাদপত্রকে জনতার সামনে উপস্থাপিত করার কাজে সাংবাদিকরা কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিকরা বারংবার কারাবরণ করেছেন ও স্বৈরাচারী শাসকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago