আবারও পোড়ানো হলো ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবারও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’। আজ রোববার দুপুরে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র স্মৃতিধারক প্রতিষ্ঠানটিতে আগুন দেয় হরতাল সমর্থনকারী হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা।
এসময় তারা পুরো সঙ্গীতাঙ্গনে ভাঙচুর চালায়। একটি জাদুঘর, তিনটি ক্লাসরুম, সরোদ মঞ্চ, প্রশাসনিক কক্ষ ও স্টোররুমে থাকা বাদ্যযন্ত্র, চেয়ার-টেবিল ও অন্যান্য আসবাবপত্রসহ সবকিছু ভেঙে তছনছ করে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
সঙ্গীতাঙ্গনের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘২০১৬ সালেও মাদ্রাসাছাত্ররা এখানে আগুন দিয়েছিল। এবার হরতাল পালনকারীরা সবকিছু একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। সুরসম্রাটের স্মৃতিধারক কোনোকিছুই আর অবশিষ্ট থাকল না।’
তিনি বলেন, ‘সঙ্গীতাঙ্গনে প্রবেশের শুরুতেই রয়েছে জাদুঘর। এটি ছিল ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতিবিজড়িত একটি দুর্লভ সংগ্রহশালা। ২০১৬ সালেই এখানে থাকা সুরসম্রাটের ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রসহ যাবতীয় সামগ্রী পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে আমরা আবার যা সংগ্রহ করেছিলাম, এবার সেগুলোও পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে।’
সঙ্গীতাঙ্গনের নিরাপত্তারক্ষী প্রবীন্দ্র দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি সঙ্গীতাঙ্গনের স্টোর রুমে থাকি। প্রশাসনিক কক্ষ ও স্টোর রুমে অনেক স্মারক, ছবি হারমোনিয়াম, তবলাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ছিল। সব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ঘরগুলো ছাড়া সঙ্গীতাঙ্গনের আর কিছু অরক্ষিত নেই।’
হরতাল পালনকারীদের ভয়ে কেউ আগুন নেভাতে এগিয়ে আসেনি বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বিশ্ববরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ, মাইহার ঘরানার রূপকার সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র নামে ১৯৫৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কুমারশীল মোড়ে ৫৬ শতক জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’। ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি দুপুরে মাদ্রাসাছাত্ররা প্রতিষ্ঠানটিতে অতর্কিত হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে।
আরও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমি অফিস, গণগ্রন্থাগার, আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে আগুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাইওয়ে থানা ও পুলিশ লাইনে হামলা, গুলিতে নিহত ৩
Comments