বৃষ্টির পর বাংলাদেশের নতুন লক্ষ্য
ঝড় তুলার আগেই মার্টিন গাপটিলকে থামানো গিয়েছিল, প্রতি ম্যাচেই রান পাওয়া ডেভন কনওয়েও এদিন হতে পারেননি বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ। দ্রুত উইকেট তুলে চাপও বাড়াতে পেরেছিলেন বোলাররা। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতার দিনে গ্লেন ফিলিপস ঠিকই জ্বলে উঠলেন। এক পর্যায়ে নিউজিল্যান্ডকে অল্প রানে আটকে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করা বাংলাদেশকে করলেন হতাশ। শেষ দিকে ড্যারেল মিচেলের ব্যাটও হলো বিস্ফোরক। তবে দুই দফা বৃষ্টিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে হয়েছে নাটক। প্রথমে বাংলাদেশ দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে জানানো হয় ১৬ ওভারে করতে হবে ১৪৮ রান। দুই ওভার খেলার পর খেলা থামিয়ে সেই লক্ষ্য বদলে হয়েছে ১৭০।
নেপিয়ারে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দুই দফা বৃষ্টিতে নিউজিল্যান্ড খেলতে পারেনি পুরো ২০ ওভার। ১৭.৫ ওভারে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৭৩ রান। ডি/এল মেথডে ম্যাচ জিততে হলে ১৬ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৭০ রান।
নিউজিল্যাডকে চূড়ায় নিতে ৩১ বলে সর্বোচ্চ ৫৮ রান আসে ফিলিপসের ব্যাট থেকে। মাত্র ১৬ বলেই ৩৪ করেন মিচেল।
মেঘলা আকাশ আর ছোট মাঠে রান তাড়া করাই আদর্শ মনে করলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি শুরুটা করল স্বচ্ছন্দে। সহজেই রান বের করছিলেন তারা।
মোস্তাফিজুর রহমানের বদলে একাদশে আসা তাসকিন আহমেদের প্রথম বলে বল স্টেডিয়ামের বাইরে পাঠিয়ে দেন ফিন অ্যালান। তবে পরের বলেই উঠিয়েছিলেন সহজ ক্যাচ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ পুরো সিরিজে তার ক্যাচ ফেলার ধারাবাহিকতা রেখে ছেড়ে দেন সে সুযোগ।
তবে ওই ওভারেই আউট হয়েছেন অ্যালান। তার আরেকটু উঁচু ক্যাচ দক্ষতার সঙ্গে হাতে জমান তরুণ নাঈম শেখ। আরেকদিকে মার্টিন গাপটিলও ছিলেন তেতে। পাওয়ার প্লের ফায়দা তুলে আনছিলেন। তাকে ফিরিয়েছেন সাইফুদ্দিন। এতে পুরো কৃতিত্ব অবশ্য তাসকিনের। এই সিরিজে তার বলে চারটি ক্যাচ মিসের জ্বালা মেটান দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে। গাপটিলের ফ্লিক শর্ট ফাইন লেগে বাদিকে ঝাঁপিয়ে ছোবল মেরে বাঁহাতে জমান তিনি।
পরের ওভারে বিপদজনক ডেভন কনওয়ের উইকেটও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলামের বলে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়েন তিনি। সপ্তম ওভারে ৫৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায় স্বাগতিকদের।
এরপর খানিকক্ষণ চেপে ধরেন নাসুম-তাসকিন। ভাল বল করেন শরিফুল। আগের ম্যাচের মতো এদিনও ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখার কাজটা করতে পেরেছে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম। ১১টা ডট বল দিয়ে ৪ ওভারে দেন ২৫ রান।
আগের ম্যাচে ঝড় তুলা উইল ইয়ং এদিন ধুঁকছিলেন। চাপ সরাতে ১ ছক্কা মারার পরও ১৭ বলে ১৪ রান করে শেখ মেহেদীর বলে স্টাম্পিং হন তিনি। একশোর আগেই ৪ উইকেট পড়ে কিউইদের। মেহেদীকে গ্লেন ফিলিপস ছক্কায় একশো পার করার পরই নামে বৃষ্টি। ১২.২ ওভারে নিউজিল্যান্ডের রান তখন ১০২।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকায় ২ ওভার কমে আসে ইনিংসের। ফের খেলা শুরু হতেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ৮ বলে ৭ করা মার্ক চ্যাপম্যানকে নিজের বলে ক্যাচ নিয়ে ফেরান শেখ মেহেদী। কিন্তু গ্লেন ফিলিপসে থামানো যায়নি। একাই বাংলাদেশের নাগাল থেকে ম্যাচ দূরে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি।
যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যান ড্যারেল মিচেলকে। ওয়ানডেতে ঝড় তুলা এই ব্যাটসম্যান এদিনও হয়ে উঠেন বিস্ফোরক। শেষ পর্যন্ত কিউইদের নিয়ে যান বড় পুঁজির দিকেই। শেষ ৫ ওভারে দুজনে আনেন ৫৬ রান।
১৮তম ওভারে আবার বৃষ্টি শুরু হলে ইনিংস শেষ করতে পারেনি কিউইরা। তবে কাজের কাজ তখনই হয়ে গেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ১৭.৫ ওভারে ১৭৩/৫ (ডি/এল) ( গাপটিল ২১, অ্যালেন ১৭ , কনওয়ে ১৫, ইয়াং ১৪ , ফিলিপস ৫৮* , চ্যাপম্যান ৭, মিচেল ৩৪* ; নাসুম ০/২৫, সাইফুদ্দিন ১/৩৫, তাসকিন ১/৪৯, শরিফুল ১/১৬, শেখ মেহেদী ২/৪৫)
Comments