সৌম্যের ঝড়ে পাওয়া সুযোগ নাঈমের মন্থর ব্যাটিংয়ে হাতছাড়া
তিনে নেমে তাণ্ডব শুরু করেছিলেন সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লে বিফলে যাওয়ার পরও তার বিস্ফোরণে ম্যাচ জেতার পরিস্থিতিতে চলে এসেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আরেক প্রান্তে সেই তাল ধরতে পারেননি নাঈম শেখ। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার মন্থর ব্যাটিংয়ে আক্ষেপে পুড়তে হলো বাংলাদেশকে।
নেপিয়ারে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ডি/এল মেথডে ১৬ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হতো ১৭১ রান। সৌম্যের ২৭ বলে ৫১ রানে বাংলাদেশ থেমেছে ১৪২ রানে। ডি/এল মেথডে ম্যাচ হেরেছে ২৮ রানে। এক ম্যাচ আগেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে ১৭.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৩ করেছিল নিউজিল্যান্ড। এরপর বৃষ্টিতে সময় নষ্ট হওয়ায় ওভার কমানো হয়।
১৬ ওভার ব্যাট করার জন্য দেওয়া হয় বাংলাদেশ। জানানো হয় লক্ষ্য ১৪৮। গণমাধ্যমকে বিসিবি নিশ্চিত করে এই তথ্য। কিন্তু ২ ওভারে ১২ রান করর পর আম্পায়াররা খেলা বন্ধ করেন। ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো জানান ১৬ ওভারে লক্ষ্য আসলে ১৭০!
লক্ষ্য বদলের নাটকীয়তার পর কঠিন চ্যালেঞ্জে নেমে শুরুতেই লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশের। আরেক প্রান্তে থাকা নাঈম শেখ ডট বলে বাড়াচ্ছিলেন চাপ।
পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে আসে কেবল ১ উইকেটে ৩৭। এরপরই তাণ্ডব শুরু করেন সৌম্য সরকার। পরের দুই ওভারেই আনেন ৩৯ রান! টানা ব্যর্থতার মিছিল সরান বড় বড় সব শটে। চার বাউন্ডারি , ৩ ছক্কায় মাত্র ১৫ বলেই ৪০ রানে পৌঁছে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন।
সেটা না হলেও তখনই জেতার একটা সম্ভাবনা ঠিকই তৈরি হয়ে যায় বাংলাদেশের। কিন্তু ২৫ বলে ফিফটি করে সৌম্যের বিদায়ের পরই বদলে যায় ছবি। নাঈম তার ডটবলের ধারা থেকে বেরুতে পারেননি। অমন ঝড় তুলার চাহিদার ম্যাচে তিনি কীনা ৩৫ বল নষ্ট করে ৩৮ রান করে বিদায় নেন। এতেই রেটরেটের চাপ বেড়ে যায় অনেকখানি।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চারে নেমে সেই চাপ সরাতে পারেনি। কিছু বাউন্ডারি এসেছে তার ব্যাট থেকেও। কিন্তু তা অব্যাহত রাখা হয়নি তার। ১২ বলে ২১ রান করে অধিনায়ক মিলনের বলে হয়েছেন বোল্ড। মিলনে পরে বোল্ড করে দেন আগের ম্যাচে বাংলাদেশের সফল ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেনকেও।
হাতের নাগালে চলে যাওয়া পরিস্থিতি আর ফেরাতে পারেনি বাংলাদেশ। সৌম্য ব্যাট করার সময় বাংলাদেশের আস্কিং রানরেট ছিল ১০-১১! সেটা পরে ছাড়িয়ে যায় ২০। বাকিরা সেই চাপে এলোপাথাড়ি শটে হয়েছেন কাবু।
টস জিতে মেঘলা আকাশের নিচে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাট করতে দিয়ে চাপেও ফেলেছিল বাংলাদেশ। ৫৫ রানে তুলে নিয়েছিল ৩ উইকেট। কিন্তু গ্লেন ফিলিপসের ৩১ বলে ৫৮ আর ড্যারেল মিচেলের ১৬ বলে ৩৪ রানে বড় পুঁজি পেয়ে যায় কিউইরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ১৭.৫ ওভারে ১৭৩/৫ (ডি/এল) ( গাপটিল ২১, অ্যালেন ১৭ , কনওয়ে ১৫, ইয়াং ১৪ , ফিলিপস ৫৮* , চ্যাপম্যান ৭, মিচেল ৩৪* ; নাসুম ০/২৫, সাইফুদ্দিন ১/৩৫, তাসকিন ১/৪৯, শরিফুল ১/১৬, শেখ মেহেদী ২/৪৫)
বাংলাদেশ: ১৬ ওভারে ১৪২/৭ (লক্ষ্য ১৬ ওভারে ১৭০) (নাঈম ৩৮, লিটন ৬, সৌম্য ৫১, মাহমুদউল্লাহ ২১, আফিফ ২ , মিঠুন ১ , শেখ মেহেদী ১২* , সাইফুদ্দিন ৩, তাসকিন ০* ; সাউদি ২/২১ , বেনেট ২/৩১, মিলনে ২/৩৪, সোধি ০/৩৪, ফিলিপস ১/২০)
ফল: নিউজিল্যান্ড ডি/এল মেথডে ২৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: গ্লেন ফিলিপস।
সিরিজ: এক ম্যাচ বাকি থাকতে নিউজিল্যান্ড ২-০ তে জয়ী।
Comments