‘হেফাজতের তাণ্ডব ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব ঠেকাতে জেলা আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির কার্যকরী কমিটির ‘বহিষ্কৃত সদস্য’ মাহমুদুল হক ভূঁইয়া।
আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
দলের কর্মী হিসেবে তিনি নিজেও এই ব্যর্থতার দায় নিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।
এর আগে গত ২৯ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আ. লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী অভিযোগ করেছিলেন, ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের তাণ্ডবের ঘটনায় মাহমুদুল হক ভূঁইয়া ও তার সমর্থকরা জড়িত।
সংসদ সদস্য ও জেলা আ. লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ওই অভিযোগের জবাবে আজকের সংবাদ সম্মেলন করেছেন মাহমুদুল হক ভূঁইয়া।
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আ. লীগ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে। কিন্তু, তাণ্ডব ঠেকাতে জেলা আ. লীগ ব্যর্থ ছিল। সেই ব্যর্থতার দায় এড়াতেই বিগত পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। শুধু আমি কেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী কেউ এরকম কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করতে পারি না।’
তিনি বলেন, ‘জেলা আ. লীগের সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের নেতৃত্বে মিছিল হয়েছিল। সেই মিছিলের পেছন থেকে যারা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়েছিল (ভিডিও ফুটেজগুলো ভালো করে পর্যালোচনা করলে দেখবেন) তারা আ. লীগ নামধারী ছদ্মবেশী এবং অনুপ্রবেশকারী, তারা কেউই বঙ্গবন্ধুর সৈনিক না। আ. লীগ ক্ষমতায় আসার সুবাদে বিভিন্ন সুযোগ নেওয়ার জন্য তারা আ. লীগের লেবাস ধারণ করে দলের সঙ্গে আছে। তারাই এই ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা বলে আমি মনে করি।’
সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা আরও বলেন, ‘কান্দিপাড়া এবং শিমরাইলকান্দি বিএনপি-ছাত্রদল অধ্যুষিত এলাকা। বড় মাদ্রাসাটাও ওই এলাকায়। ঘটনার দিন আমার বাসার গেটের ভেতর থেকে যা দেখার সুযোগ হয়েছে, আমার কাছে মনে হয়েছে হুজুরদের সঙ্গে কান্দিপাড়া-শিমরাইলকান্দির বহুসংখ্যক ছাত্রদলের সমর্থক ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমি নাম বলতে পারব না, কিন্তু ভিডিও ফুটেজ দেখলে তাদেরকে চিহ্নিত করা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা সহিংসতা চালিয়েছে, তারা দেশের শত্রু, ইসলামের শত্রু। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারকীয় ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এ ধরণের সহিংসতা চলতেই কবে। ঘটনার সঙ্গে আমাকে এবং আমার সমর্থকদের জড়িয়ে এমপি মহোদয় যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন, তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মেয়র পদে নির্বাচন করায় মাহমুদুল হক ভূঁইয়াকে জেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশে দল থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় আ. লীগ।
তবে, মাহমুদুল হক ভূঁইয়া বহিষ্কারের কোনো চিঠি পাননি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে জেলা কৃষকলীগ নেতা ফরিদ উদ্দিন দুলাল, আতাউর রহমান, সারোয়ার আলম, ফরিদ আহাম্মদ, নাজমুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
আবারও পোড়ানো হলো ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমি অফিস, গণগ্রন্থাগার, আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে আগুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাইওয়ে থানা ও পুলিশ লাইনে হামলা, গুলিতে নিহত ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: নিহত বেড়ে ৬ হেফাজতের হরতালে দোকান ও যান চলাচল বন্ধ
Comments