নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের সমাবেশ
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলা শহরে কয়েকশ মানুষের উপস্থিতিতে সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম।
আজ শুক্রবার দুপুরে শহরের ডিআইটি কেন্দ্রীয় রেলওয়ে জামে মসজিদের সামনে সরেজমিনে দেখা যায়, সারাদেশে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও হরতালে বিশৃঙ্খলায় নিহত, গ্রেপ্তার ও মামলার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা সমাবেশের আয়োজন করে। তবে, সেখানে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জীবাণুনাশক স্প্রে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার কোনো ব্যবস্থা দেখা যায়নি। এমনকি অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক। কোনো ধরণের সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই আড়াইটা থেকে এ সমাবেশ শুরু হয়। এসময় সমাবেশের আয়োজক হেফাজতে ইসলামের নেতাদের মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি।
হেফাজতের এই সমাবেশের কারণে জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ ইমতিয়াজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের দিক থেকে নারায়ণগঞ্জ উচ্চমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ইতোমধ্যে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরও যদি এখানে সভা সমাবেশ হয় তাহলে সংক্রমণ বাড়বেই। এখন সভা সমাবেশ করা মানে আমরা নিজেদের বিপদ ডেকে আনছি।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতের আমির ও কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলার সেক্রেটারি মুফতি বশিরউল্লাহ, সহসভাপতি দ্বীন ইসলাম, মহানগরের সভাপতি ফেরদাউসুর রহমান, সেক্রেটারি হারুন অর রশিদ, মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি ফেরদাউসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এটা কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি ছিল। ছোট পরিসরে আয়োজন করা হয়। কোনো মঞ্চও করা হয়নি। স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ করা হয়েছে।’
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মসজিদ-মাদ্রাসাগুলো খোলা ছিল, কিন্তু, কারো করোনা হয়নি। আশা করছি ভবিষ্যতেও করোনা হবে না।’
গত ৩১ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে ১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র, বিনোদন পার্ক, জাদুঘর, কমিউনিটি সেন্টার এবং সভা সমাবেশ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া, মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন করার কথা জানানো হয়।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা তাদের অনুমতি দিয়েছি, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলেছি এবং একশ জনের বেশি যেন জড়ো না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জুমার নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরাও এতে অংশ নেয়। পরে আমরা তাদের দ্রুত কর্মসূচি শেষ করতে বলি। তারাও দ্রুত শেষ করে।’
‘করোনার এ পরিস্থিতিতে যেন আর কোনো সমাবেশ না করে সেই নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে,’ যোগ করেন এসপি।
Comments