‘জলবায়ুর অবিচার দূর করার সময় এখনই’
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/sheikh_hasina_62.jpg?itok=OAzvG54F×tamp=1617450044)
জলবায়ুর ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়-ক্ষতি রোধের উপায় খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক কার্বন বাজার উন্মুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো খুব কমই ভূমিকা রাখছে। জলবায়ুর এই অবিচার দূর করার সময় এখনই।
বিখ্যাত ‘ডিপ্লোম্যাট’ ম্যাগাজিনে এপ্রিল ২০২১ সংখ্যায় প্রকাশিত ‘ঢাকা-গ্লাসগো সিভিএফ-সিওপি২৬ সংহতি জোরদার’ শীর্ষক এক নিবন্ধে তিনি জলবায়ু অবিচার দূর করতে উন্মুক্ত কার্বন বাজারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই নিবন্ধে শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে অর্থবহ করে তুলতে সকলের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ক্রান্তিকালীন জলবায়ু সহযোগিতা জোরদার এবং ক্ষয়ক্ষতি ও জলবায়ুর অবিচার রোধের উপায় খুঁজে বের করতে আমরা উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক কার্বন কার্বন বাজার দেখতে চাই।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই যুদ্ধে সকলে একজোট না হলে আমরা হেরে যাব। মানুষ সচেতনভাবে আমাদের বেঁচে থাকার সহায়ক পরিবেশ ধ্বংস করছে।
তিনি বলেন, আমরা গ্রেটা থুনবার্গ কিংবা বাংলাদেশ কোস্টাল ইয়ুথ একশান হাবের লোকজনের জন্যে কোন পৃথিবী রেখে যাচ্ছি? সিওপি২৬-এর বিষয়ে আমরা তাদের ব্যর্থ করে দিতে পারি না।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা জলবায়ু তহবিল উন্মুক্ত দেখতে চাই। আর তা কেবল কম কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর জন্যে নয় বরং অঙ্গীকার করা ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড় এবং এর ৫০ শতাংশ জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা তৈরির জন্যে ব্যয় করা হোক।
তিনি বলেন, সিভিপি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১০০ কোটিরও বেশি লোকের প্রতিনিধিত্ব করছে। সমুদ্র স্তরের সামান্য উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় ও দ্রুত মরুকরণের কারণে এদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
তিনি বাংলাদেশের কথা তুলে ধরে বলেন, এই দেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের ক্ষেত্রে প্রায়শই ‘গ্রাউন্ড জিরো’ হিসেবে উল্লেখিত হয়। এখানে জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের কোটি কোটি সাহসী ও সহিষ্ণু জনগণের অস্তিত্বের লড়াই যাদের বাড়িঘর, জমি ও শস্য প্রকৃতির ধ্বংসাত্মক ক্রোধে ধ্বংস হচ্ছে।
তিনি তার লেখায় আরও বলেন, প্রতি বছর জিডিপির ২ শতাংশ বিরূপ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় ব্যয় হয়। শতাব্দী শেষে এটি ৯ শতাংশে দাঁড়াবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০৫০ সাল নাগাদ উপকূলীয় ১৭ শতাংশেরও বেশি এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে। এতে তিন কোটি লোক বাস্তুচ্যুত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইতোমধ্যে ৬০ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এছাড়া, কক্সবাজারের পরিবেশ বিপর্যয়ের মূল্য দিয়ে এই দেশ এখনো মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয়দানের চাপ বহন করছে।
‘এই ক্ষয় ক্ষতির মূল্য কে দেবে? প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী।
Comments