করোনায় মারা গেলেন ফরিদপুরের ‘তারাপদ স্যার’

জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ওরফে তারাপদ। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের প্রবীণ শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ওরফে তারাপদ স্যার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

আইসিইউতে দায়িত্বরত চিকিৎসক আনন্দ মোহন বিশ্বাস দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত বুধবার জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ওরফে তারাপদ স্যারের করোনা শনাক্ত হয়। তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন চিলেন। শুক্রবার রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

শহীদ পরিবারের সন্তান জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ১৯২৮ সালের ৬ আগস্ট মানিকগঞ্জের কাঞ্চনপুর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা শহীদ যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, মা প্রফুল্ল বালা ঘোষের জ্যেষ্ঠ সন্তান তিনি। ফরিদপুরের প্রবীণ হিতৈষী সংঘের তালিকায় সবচেয়ে প্রবীণতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।

ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর ১৯৫০ সালে জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ডাকবিভাগের একটি শাখা অফিসে পোস্ট মাস্টার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে তিনি গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। ৬০ এর দশকে প্রথমে দ্য পাকিস্তান অবজারভার ও পরে দ্য বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। দীর্ঘ ৪০ বছর তিনি দ্য বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অকৃতদার জগদীশ চন্দ্র ঘোষ শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতার পাশাপাশি ফরিদপুর টাউন থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।

২০০৩ সালে তিনি বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি ফরিদপুর জেলা ইউনিটের শহীদ সাংবাদিক সামসুর রহমান স্বর্ণপদক লাভ করেন। ২০১৩ সালে তাকে গৌতম স্মৃতি পদক প্রদান করা হয়। ২০০৫ সালে ডাচবাংলা ব্যাংক-প্রথম আলোর উদ্যোগে ফরিদপুর অঞ্চলের গণিত উৎসবে তাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। ২০১৯ সালে তিনি আইপিডিসি-প্রথম আলো সেরা প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা লাভ করেন।

আজ সকাল ১০টার দিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জগদীশ চন্দ্র ঘোষের মরদেহ ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে নেওয়া হয়। সেখানে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোসসহ সমাজের সর্বস্তরের ব্যক্তি তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অম্বিকাপুর মহাশ্মশানে জগদীশ চন্দ্র ঘোষের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

7h ago