কোভিড-১৯ প্রতিরোধে নিষেধাজ্ঞা: যা করা যাবে, যা করা যাবে না

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় আগামী ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে সরকার। সরকারের পূর্ব ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনার সঙ্গে নতুন এই নির্দেশনা যুক্ত হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় আগামী ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে সরকার। সরকারের পূর্ব ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনার সঙ্গে নতুন এই নির্দেশনা যুক্ত হয়েছে।

আগামী সাত দিন কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না তা উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

আজ রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. শাফায়াত মাহবুব চৌধুরীর সই করা ‘করোনাভাইরাসজনিত রোগে কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে শর্ত সাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ’ শীর্ষক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক গত ২৯ মার্চ ১৮ দফা নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সেই নির্দেশনার অনুবৃত্তিক্রমে আগামী ৫ এপ্রিল ২০২১ ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল ২০২১ রাত ১২টা পর্যন্ত প্রতিপালনের জন্য নিম্নে উল্লিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

আগের নির্দেশনার সঙ্গে যুক্ত নতুন নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-

ক. সকল প্রকার গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে, পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, বিদেশগামী বা বিদেশফেরতদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

খ. আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বা জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

গ. সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প-কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ কর্তৃক শিল্প-কারখানা এলাকায় নিকটবর্তী সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

ঘ. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।

ঙ. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয় বা সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না।

চ. শপিংমলসহ অন্যান্য দোকানসমূহ বন্ধ থাকবে। তবে দোকানসমূহ পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো ক্রেতা সশরীরে দোকানে যেতে পারবেন না।

ছ. কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

জ. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

ঝ. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ঞ. সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

 

আরও পড়ুন: জনসমাগম সীমিত, গণপরিবহনে যাত্রী অর্ধেক করার নির্দেশ

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago