নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রবিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও নাহিদা বারিক দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত পাঁচ নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধারে বিআইডব্লিউটি-এর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে। লঞ্চটি উদ্ধারে কাজ শুরু করছে।’
ইউএনও নাহিদা বারিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) খারিজা তাহেরা ববিকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অপরদিকে বিআইডব্লিউটি-এর চেয়ারম্যান কমোডোর গোলাম সাদেকের নির্দেশে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিআইডব্লিউটি-এর পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) রফিকুল ইসলামকে।
এ ছাড়া, মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের দাফনে প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি আবুল খায়ের দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ডুবে যাওয়া লঞ্চটি এমনভাবে কাত হয়ে আছে যে ভেতরে প্রবেশ করাটা ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে আমরা ভেতরে প্রবেশ করতে পারছি না। আমরা শুধু কাছাকাছি যে কয়টি মরদেহ পেয়েছি সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পানি কালো তাই ভেতরে কিছু দেখা যাচ্ছে না। আরও মরদেহ থাকতে পারে। আশাকরছি ২-১ ঘণ্টার মধ্যে লঞ্চটি উঠাতে পারবে।’
এর আগে, নারায়ণগঞ্জ শহরের কয়লাঘাট এলাকায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ৫০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে শীতলক্ষ্যায় লঞ্চটি ডুবে যায়।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ চন্দ্র সাহা ঘটনাস্থল থেকে ফোনে জানান, রাত ১০টা পর্যন্ত নদীর পূর্ব তীর থেকে প্রায় ১৫-১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আটজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং আরও তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নারায়াণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আরেফিন দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জের কয়লাঘাট এলাকায় একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে গেছে। এতে ৫০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুটি ট্রলার নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।
লঞ্চ থেকে বেঁচে ফেরা যাত্রী দিপু বলেন, ‘লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জে যাচ্ছিল। পরে বাল্কহেড ধাক্কা দিলে লঞ্চটি ডুবে যায়। নিচ থেকে কেউ কেউ বের হতে পারেনি। সবাই পানির নিচে ডুবে গেছে। সাড়ে ছয়টার দিকে লঞ্চটি ছাড়ে এবং সাতটার দিকে পৌঁছানোর কথা ছিল। আমার সঙ্গে মা ছিলেন। আমার মা এখনো নিখোঁজ।’
আরও পড়ুন:
Comments