গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, মানতে নারাজ মেয়র
মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র আব্দুস ছালামের বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার নিশ্চিত করলেও, বিষয়টি মানতে নারাজ মেয়র। মেয়র আব্দুস ছালামের দাবি, গ্যাসের কারণে বিস্ফোরণ হয়নি, কুচক্রী মহল নাশকতা কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মেয়রের চারতলা বাসার তিন তলার রান্নাঘরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মেয়রের স্ত্রী ও চার জন কাউন্সিলরসহ আহত হন ১৩ জন। এর মধ্যে গুরুতর আহত মেয়রের স্ত্রী কানুন বেগমসহ (৪০) ১২ জন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন।
আজ বুধবার সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এ ঘটনার পর আজ সকাল থেকে বাড়ির ভেতর প্রবেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। চারতলা ভবনের তিন তলায় প্রবেশপথের মূল দরজাটি ভাঙা। এর একাংশ পুড়ে গেছে। রান্নাঘরের দরজার অর্ধেক অংশ নিচে পড়ে আছে আর বাকি অংশ দরজায় যুক্ত।
আরেকটি ঘর পুড়ে গেছে, যেখানে কাউন্সিলদের নিয়ে মেয়র আলোচনা করছিলেন। এর দরজার পুরো অংশের বার্নিশ পুড়েছে। সামনের আরেকটি ঘরের দরজার অর্ধেক অংশ ভেঙে পড়ে আছে। তবে সেখানে আগুনের চিহ্ন নেই। ডাইনিংয়ের কাঁচ ভেঙেছে।
সকাল সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, সিআইডির পুলিশ সুপার (বিশেষ) নাছিমা আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু, ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক মামুন প্রমুখ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, বেশ কয়েকটি সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গ্যাসের চুলা থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে শনাক্ত করেছে। বিস্ফোরক জাতীয় কোনো বস্তুর আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, তিতাসসহ বেশ কয়েকটি টেকনিক্যাল সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা গ্যাসের লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে। ঘটনার দিন মুন্সিগঞ্জে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল।
যখন বাসাবাড়ির পাইপে গ্যাস আসা শুরু হয়, তখন চুলায় আগুন দেওয়া হলে স্পার্ক থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে জানান তিনি।
মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র ছালাম জানান, বাড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার নেই। পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ হলেও সেটি বন্ধ ছিল।
গ্যাস থেকে এ রকম বিস্ফোরণ ঘটেনি বলে তার দাবি।
তিনি বলেন, ‘কে বা কারা দরজার কাছে বোমসদৃশ্য কোনো বস্তু রেখে গেছে এমনটি হতে পারে। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে কোনো একটি কুচক্রী মহল এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
মেয়র ছালাম জানান, ওয়ার্ড কাউন্সিলদের নিয়ে নিজ বাসার একটি কক্ষে আলোচনা চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। রান্নাঘরের কাছে থাকা তার স্ত্রীর শরীরে আগুন ধরে যায়।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও জানান তিনি।
Comments