যত দর্শক তত ক্রেতা
গতকালের তুলনায় আজ বিক্রি ভালো। যারাই মেলায় আসছেন, তারা তালিকা ধরেই বই কিনেছেন। আজ গণপরিবহন থাকায় বেড়েছে মেলায় আসা দর্শনার্থীও। করোনাকালেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতা বাড়ায় কিছুটা হাসি ফুটেছে মলিন মুখে কারো কারো।
ইতিবাচক কথা বলেছেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, লকডাউনে মেলায় আমি আপনি না যেতে পারি। যার সুযোগ আছে সে যাক। সব কিছু এইভাবে অবরুদ্ধ হোক আমি চাই না। বইমেলা আমাদের জাতীয় জীবনের অনবদ্য অংশ। সুতরাং বইমেলা চলমান থাকুক। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ যাতায়াত করুক।
বইমেলাকে লক্ষ্য রেখেই অনেক বই প্রকাশিত হয়। কবিতা, গল্প উপন্যাস বা সায়েন্স ফিকশনের বইগুলো প্রতিবারের বইমেলাতেই বিক্রির শীর্ষে থাকে। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম লেখক প্রকাশকের ফোকাস মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ইতিহাস ভিত্তিক বই নিয়ে। পাঠকেরও ইতিহাস ঐতিহ্য বিষয়ক বইয়ের প্রতি আগ্রহ বেশি।
ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের প্যাভিলয়নে (ইউপিএল) দেখা যায়, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ সংগ্রহ করছেন এক ক্রেতা। এটি তাদের প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই। যুক্ত হয়েছে ‘মূলধারা ৭১’ বইটি । আরও আছে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘কারাগারের রোজনামাচা’, ‘আমার দেখা নয়াচীন’ এবং এ দুটি বইয়ের অধ্যাপক ফকরুল আলমের ইংরেজি অনুবাদ ভালো বিক্রি হচ্ছে।
মাওলা ব্রাদার্স থেকে সরদার ফজলুল করিমের দর্শনকোষ, মুনতাসীর মামুনের মুক্তিযুদ্ধ একাত্তরের সাহিত্য ও পশ্চিমবঙ্গ, রাফাত মিশুর শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ উচ্চতর গবেষণার রুপরেখা, ডেইলি স্টার বুকস প্রকাশিত গবেষণাধর্মী বই কিশোর মুক্তিযোদ্ধা সমগ্র, সংগ্রামী নারী ৫২ থেকে একাত্তর, জেনোসাইড দ্য রুট। আগামী প্রকাশনী এনেছে বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সিরিজ গ্রন্থমালা। সময় প্রকাশন এনেছে সেলিনা হোসেনের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সমগ্র ও আবুল মাল আবদুল মহিতের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ। বাতিঘর এনেছেন মহিউদ্দিন আহমদের লাল সন্ত্রাস: সিরাজ সিকদার ও সর্বহারা রাজনীতি। ঐতিহ্য এনেছে পাঞ্জেরী থেকে মিনার মনসুরের ‘চিরকালের নেতা’, ঐতিহ্য থেকে সৈয়দ শামসুল হকের ‘একাত্তরের বিজয় গাথা’, আগামী থেকে অসীম সাহার ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ’, প্রথমা থেকে নূরুল ইসলামের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: কাছে থেকে দেখা’, অন্যপ্রকাশ থেকে এসেছে সেলিনা হোসেনের ‘নির্বাচিত গল্পে বঙ্গবন্ধু’ হারুন অর রশিদের ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু’। বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, গতকাল মেলায় ৬৯টি নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও ইতিহাস ভিত্তিক বই এসেছে ২৫টি।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর প্রকাশক আরিফুর রহমান নাঈম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মেলায় আমরা বরাবর গল্প কবিতার বাহিরে মননশীল সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক বইকে গুরুত্ব দেই। পাঠক আমাদের উৎসাহিত করে। তাছাড়া সারাবছর এইসব বই পৌঁছানোর ব্যবস্থা রাখি।
আজ নতুন আসা বইয়ের মধ্যে বাংলা একাডেমি থেকে এসেছে জালাল ফিরোজের ‘সংবিধান ও আনিসুজ্জামান’ অন্যপ্রকাশ এনেছে আতাউর রহমানের ‘রসগল্পের রাজকোষ’, শহীদ আল আমিনের ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’, সেলিনা হোসেনের ‘বধ্যভূমিতে বসন্ত বাতাস’, কাকলী এনেছে অনার্য মুর্শিদ ও রামশংকর দেবনাথ সম্পাদিত ‘অনলাইন সাক্ষাৎকার: নির্মলেন্দু গুণ’
করোনায় করোনা নিয়ে বই
অন্য প্রকাশ থেকে শাইখ সিরাজের ‘করনোকালে বহতা জীবন’, নাসরিন জাহানের ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি অথবা করোনা করুণের গান’, প্রকৃতি প্রকাশনী থেকে সাইফুর রহমানের করোনায় শেক্সপিয়র রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য। বিদ্যাপ্রকাশ থেকে মোহিত কামালের ‘আত্মার আলাপ’, ঐতিহ্য থেকে ড. মো. মাসুদ আলমের অনুবাদ ‘কোভিড ১৯ শেকস দ্য ওয়ার্ল্ড’, অন্যধারা থেকে মো: আদনান আরিফ সালিমের ‘মহামারির ইতিহাস’।
Comments