ধর্মপাশায় ছাত্রলীগ নেতাকে হেনস্থা: ওসি প্রত্যাহার, আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ঢাবি ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক আফজাল খান। ছবি: সংগৃহীত

হেফাজতে ইসলামের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের এক নেতাকে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী বাজারে হেনস্থার ঘটনায় ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে তাকে প্রত্যাহার করা হয় বলে আজ সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (ধর্মপাশা সার্কেল) সুজন চন্দ্র সরকার।

এর আগে গত মঙ্গলবার, ঘটনার রাতেই ওই থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এএসআই আনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয় বলেও জানান তিনি।

এ ঘটনায় হেনস্থার শিকার ঢাবি ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক আফজাল খান ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

গতকাল রাতে দায়ের করা এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলমকে।

গত ২৯ মার্চ ফেসবুকে হেফাজতের আন্দোলনের সমালোচনা করে ‘ধর্ম নিয়ে ব্যবসা’ লিখে ফেসবুকে কিছু ছবিসহ একটি পোস্ট দেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। এ পোস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাশেমের ছেলে আল মুজাহিদের নেতৃত্বে এলাকার বেশ কিছু মানুষ গত মঙ্গলবার বিকেলে জয়শ্রী বাজারে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে হেনস্থা করে।

বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা আফজাল খানকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্থা করে। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলম ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দ ও হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আটক অবস্থা থেকেই আফজাল ঢাবি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সুনামগঞ্জ পুলিশকে জানায়। এরপরই থানা থেকে ফোর্স নিয়ে আসেন ওসি। তখন পুলিশের উপস্থিতিতেও তাকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে আফজাল খান বলেন, ‘এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলম ও যুবলীগ নেতা এনায়েত (ধর্মপাশা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক) পুলিশকে চাপ দিলে আমাকে হাতকড়া পরানো হয়। তাদের উপস্থিতিতেই প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয় আমাকে।’

ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘পুলিশ কোনো কিছুই শুনতে চায়নি। সেখান থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় আমাকে নিয়ে বের হওয়ার পর মাঝরাস্তায় আমার হাতকড়া খুলে দেয়। পরে থানায় এসে সব শুনে লিখিত একটা বিবৃতি রেখে ছেড়ে দেয়।’

গতকাল দুপুরে জরুরি সভা ডেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করে ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগ। পরে জেলা আওয়ামী লীগ এ বহিষ্কারাদেশ অনুমোদন করে।

ছাত্রলীগ নেতা আফজাল দ্য ডেইলি স্টারকে অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই আওয়ামী লীগ নেতা ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সহ-সভাপতি ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সঙ্গে আত্মীয়তার সুবাদে আওয়ামী লীগে যোগদান করে ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদকের পদ পান।’

 

আরও পড়ুন:

হেফাজতকে নিয়ে পোস্ট: পুলিশ উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ নেতাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে হেনস্থা

ধর্মপাশায় ছাত্রলীগ নেতাকে হেনস্থা: ইউনিয়ন আ. লীগ সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার

Comments

The Daily Star  | English

Bridge this year, full benefits not before 2030

The Bangabandhu Railway Bridge over the Jamuna is set to be inaugurated next month, but people will not get the full benefit of it until at least 2030.

5h ago