একটি সিরিঞ্জের সুইয়ের ট্যাক্সও ৩১ শতাংশ: ডা. জাফরুল্লাহ
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, করোনা জাতীয় জীবনে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছে। করোনায় একজন মানুষের মৃত্যু হয় কিন্তু পুরো পরিবারকে হত্যা করছে সরকার। একটা আইসিউতে প্রতি দিনের খরচ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা। একটি সিরিঞ্জের সুইয়ের ট্যাক্সও ৩১ শতাংশ। অক্সিজেনের উপরেও ভ্যাট ১৯ শতাংশ। চিকিৎসা করাতে গিয়ে একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। এটা সরকারের ব্যর্থতা।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। ‘করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতার প্রেক্ষাপটে করণীয় বিষয়ে নাগরিক’ এর ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর ওপর সরকারের ট্যাক্সের নীতির সমালোচনা করে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, আইসিউতে প্রতি দিনের খরচ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা। এন্টিসেপ্টিক ও ডিজইনফেক্টেন্টের উপরেও ট্যাক্স আছে। আমরা ১৩০০ টাকার ওষুধ ৪০০ টাকায় দিচ্ছি। সরকার নির্দিষ্ট বিষয়ে অজ্ঞ লোক দিয়ে সব কিছু চালাচ্ছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আইসিইউের ওষুধের দাম খুব বেশি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারগুলো সর্বস্বান্ত হচ্ছে। এই জিনিসগুলো পরিবর্তন করতে হবে। সকল ওষুধের মূল্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে। তাহলে ওষুধের দাম বর্তমান দামের তুলনায় এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি বলেন, ভারতীয় কোম্পানি সময় মতো দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পাঠাচ্ছে না। কারণ তাদেরও চাহিদা বেশি। এই জন্য সরকারকে দেশেই উৎপাদনে যেতে বলেছিলাম। ড. বিজন কুমার শীলের মতো মানুষের দেশে প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে তাকে অবিলম্বে ভিসা দেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, সবে মাত্র মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। ৫০ হাজারের মতো পরীক্ষায় পাশ করেছে। তারা ১০ হাজার ভর্তি করছেন। এটা হওয়া উচিত ২০ হাজার। ২০ হাজার ছাত্রকে মেডিকেলে ভর্তি করানো উচিত। তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ফিজিক্স-কেমিস্ট্রি-বায়োলজি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বোঝে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সমাজের শ্রেণি বোঝে কিনা? সমাজের জন্য দরদ আছে কিনা? সাধারণ মানুষের জন্য তার বিবেক কাঁদে কিনা? এই সবের কোনো কিছুই পরীক্ষায় নেই। আমরা তাদের ডাক্তার বানাচ্ছি, কিন্তু মানুষ বানাচ্ছি না।
সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্র চিন্তার দিদারুল ভুঁইয়া, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, পানি বিশেষজ্ঞ ম ইনামুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান। জুমে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ও বেলা’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা অ্যাডভোকেট রিজওনা হাসান।
Comments