কুলাউড়ায় টিলা কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ইসলামনগর এলাকায় টিলা কেটে মাটি বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ভূমি অফিস বলছে, টিলা কেটেছে এক ভূমিহীন নারী ও তার ঠেলাগাড়ি চালক স্বামী। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযোগ ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
ওই এলাকায় গিয়ে জানা যায়, ইসলামনগর মৌজার অধিকাংশ ভূমি টিলা শ্রেণির। টিলা কেটে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। এর মধ্যে এলাকার মতিন মিয়া, নুরই মিয়া, সিরাজ মিয়া, নিজাম মিয়া তাদের বসত বাড়ির পাশে টিলাগুলো কেটে মাটি বিক্রি করেছেন। টিলা কেটে ইউপি চেয়ারম্যান তার বাবা-মায়ের নামে একটি স্কুল ও মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বলেন, আমি গত ৩১ মার্চ ওই এলাকা পরিদর্শন করে টিলা কাটার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। অধিদপ্তরের সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম, ইসলামনগর এলাকার বাসিন্দা নুরুল মিয়ার স্ত্রী বেগুন বেগম, তৈয়ব আলীর ছেলে নুরই মিয়া, মতিন মিয়া, সিরাজ মিয়া, নিজাম মিয়া ও শুকুর মিয়ার নামে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ১১ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে এর শুনানি হবে।
অভিযোগ স্বীকার করে ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম বলেন, স্কুল করার মতো সেখানে সমতল জমি নেই। তাই এলাকার ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার স্বার্থে টিলা কেটে স্কুল ও মসজিদ নির্মাণ করি। স্কুলের পাশে ছোট্ট একটি কাঁচা রাস্তা ছিল। সেটি পাকা করার জন্য গতবছর টিলা থেকে মাটি কেটে দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমতি নেইনি। মানুষের প্রয়োজনে এসব কাজ করেছি।
কুলাউড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজরাতুন নাঈম বলেন, আমরা জায়গাটি পরিদর্শন করেছি তবে কাউকে স্পটে পাইনি। স্থানীয় মানুষজন বলেছে টিলাটি কাটছেন বেগুন বেগম ও তার স্বামী। স্থানীয় চেয়ারম্যানের নাম অভিযোগে নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাকে স্পটে পাইনি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা জানান, আমি বেগুন বেগমের বাড়িতে গেছি। বেগুন বেগম ভূমিহীন মানুষ। স্বামী ঠেলাগাড়ি চালান। ওই স্কুলে আয়ার কাজ করতেন বেগুন বেগম। স্কুল বন্ধ থাকায় তিনি এখন বাসাবাড়িতে কাজ করেন। এই নারীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে টিলা কাটা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, টিলা কাটার অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ সাত জনের বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments