রিজওয়ানের ঝড়ে জিতল পাকিস্তান

জোহেন্সবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪ উইকেটে হারায় সফরকারীরা। রিজওয়ানের দাপটে ১ বল বাকি থাকতে স্বাগতিকদের ১৮৮ রান পেরিয়ে যায় বাবর আজমের দল।
Mohammad Rizwan
ছবি: আইসিসি

ম্যাচটা ক্রমশ পাকিস্তানের কাছ থেকে সরে যাচ্ছিল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেক থ্রো পেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা সরাতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। কিপার ব্যাটসম্যান রিজওয়ানই দারুণ এক ইনিংসে গড়ে দিলেন ব্যবধান। শেষ ওভারের উত্তেজনায় ম্যাচ জিতল পাকিস্তান।

জোহেন্সবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪ উইকেটে হারায় সফরকারীরা। রিজওয়ানের দাপটে ১ বল বাকি থাকতে স্বাগতিকদের ১৮৮ রান পেরিয়ে যায় বাবর আজমের দল। দলকে জিতিয়ে ৫০ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান। টি-টোয়েন্টি এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়। এর আগে ২০১৮ সালে ১৮৩ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। 

শেষ ওভারে জিততে দরকার ছিল ১১ রান। প্রথম বলে লং অনে ফাহিম আশরাফের ক্যাচ ছেড়ে দেন জর্জ  লিন্ডে , আসে ২ রান, পরের বলে ফাহিমকে বোল্ড করে প্রোটিয়াদের আশা বাড়ান লিজাড উইলিয়ামস। তৃতীয় বলে হাসান আলির ব্যাট থেকে আসে বাউন্ডারি। চতুর্থ বলে ক্যাচ উঠিয়েছিলেন তিনিও। হাত ফসকে বেরুলে এবারও মিলে দুই রান। পঞ্চম বলে ৩ রান এলে স্ট্রাইক পাওয়ারই দরকার হয়নি রিজওয়ানের। ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতেও সিরিজে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।

আইপিএল খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা কয়েকজন ক্রিকেটার আগেই চলে গিয়েছিলেন, পরে চোটে পড়ে ছিটকে যান নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও। প্রথম সারির কয়েকজন ক্রিকেটার ছাড়া খর্ব শক্তি নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছিল তারা। তবে নতুনরা করেছেন শেষ পর্যন্ত লড়াই।

১৮৯ রান তাড়ায় গিয়ে অধিনায়ক বাবরকে এক পাশে রেখে উড়ন্ত সূচনা আনেন রিজওয়ান। বাবর ছিলেন থিতু হওয়ার চেষ্টায়। কিন্তু পারেননি। ১৪ বলে ১৪ রান করে তিনি ফেরেন বিওরান হেন্ড্রিকসের বলে। এরপর শুরু হয় রিজওয়ান-ফখর জামানের তাণ্ডব। ম্যাচ অনেকটা সহজে করে ফেলার আভাস মিলছিল। তাবরাইজ শামসি এসে ফখরকে আউট করলে খেলায় ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা।

থিতু হতে থাকা অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজকেও ফিরিয়ে দেন শামসি। হেনড্রিকস এসে ১৬তম ওভারে পর পর দুই বলে হায়দার আলি-মোহাম্মদ নাওয়াজকে ফিরিয়ে দিলে ম্যাচ স্বাগতিকদের দিকে হেলে পড়ছিল।

কিন্তু হেলানো যায় রিজওয়ানকে। এক প্রান্তে টিকে যান, সঙ্গী পেয়ে যান ফাহিমকে। মাত্র ১৪ বলে ৩০ রান করে যান এই বাঁহাতি। কার্যকর ডেথ বোলারের অভাবে আর শেষ দিকে ম্যাচ নিজেদের পক্ষে আনতে পারেনি স্বাগতিকরা।

টস জিতে ব্যাট করতে যাওয়া স্বাগতিকদের দারুণ শুরু পাইয়ে দেন ইয়ানেমান মালান আর এইডেন মার্কাম। বড় ঝড়ের আভাস দিয়েও মালান ফেরেন আগে। ১৬ বলে ২৪ রান করে ফাঁদে পড়ে মোহাম্মদ নওয়াজের স্পিনে। ভিহান লুব্বে এসেই তড়িঘড়ি বিদায় নেন। এরপর হেনরিক ক্লাসেনের সঙ্গে ৬২ রানে জুটি পান মার্কাম। ৩২ বলে ৫১ করা মার্কামকে আউট করেন নাওয়াজ।

পরে পিট ভিলিয়নকে নিয়ে ক্লাসেন ছুটেন বড় রানের দিকে। দুজনের জুটিতে আসে আরও ৬১ রান। তবে তারা আউট হয়ে যাওয়ার পর শেষ দিকে প্রত্যাশিত রান পায়নি স্বাগতিকরা। অন্তত ১০ রান কম হওয়ার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে তাদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৮৮/৬ (মালান ২৪, মার্কাম ৫১, ভিহান ৪, ক্লাসেন ৫০, ভিলিয়ন ৩৪, লিন্ডে ৬, ফেহলেকাউয়ে ৯*, মাগালা ৯*  ;  শাহীন ১/৪৫, নাওয়াজ ২/২১, হাসান ২/২৮, উসমান ০/৩৮, হারিস ১/৩৭, ফাহিম ০/১৮ )

পাকিস্তান: ১৯.৫ ওভারে ১৮৯/৬   ( রিজওয়ান ৭৪*, বাবর ১৪ , ফখর ২৭, হাফিজ ১৩, হায়দার ১৪, নওয়াজ ০, ফাহিম ৩০, হাসান ৯*; লিন্ডে ০/৩১, উইলিয়ামস ১/৩৯, হেন্ড্রিকস ৩/৩২, মাগালা ০/৩৫, শামসি ২/২৯, ফেহলেকাউয়ে ০/২১ )

ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: মোহাম্মদ রিজওয়ান।

সিরিজ: পাকিস্তান ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে (৩ ম্যাচ সিরিজ)

Comments

The Daily Star  | English
Detained opposition activists

The flipside of the democracy carnival

Bereft of the basic rights to assemble and express, let alone protest, the people of Bangladesh are currently bearing the brunt of the coercive apparatuses of the state.

10h ago