মুক্তিযুদ্ধ

১১ এপ্রিল, ১৯৭১: দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান তাজউদ্দীন আহমদের

মুক্তিযুদ্ধের ১১ এপ্রিল ছিল গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল একটি দিন। এদিন অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশ্যে এক দীর্ঘ ভাষণ দেন।
তাজউদ্দীন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের ১১ এপ্রিল ছিল গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল একটি দিন। এদিন অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে  জাতির উদ্দেশ্যে এক দীর্ঘ ভাষণ দেন।

সে ভাষণে তাজউদ্দীন আহমদ প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সরকারের পক্ষ থেকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানান। তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে গিয়ে তাদের মূল্যবান জীবন আহুতি দিয়েছেন তাদের প্রতি। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পুনর্ব্যাক্ত ও দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ করে তিনি বলেন, "২৫ মার্চ মাঝরাতে ইয়াহিয়া খান তার রক্তলোলুপ সাঁজোয়া বাহিনীকে বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর লেলিয়ে দিয়ে যে নর-হত্যাযজ্ঞ শুরু করেন তা প্রতিরাধ করবার আহ্বান জানিয়ে আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আপনারা সব কালের, সব দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী মানুষের সাথে আজ একাত্ম। পশ্চিম-পাকিস্তানি হানাদার দস্যুবাহিনীর বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ আপনারা গড়ে তুলেছেন তা এমন এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে যে, পৃথিবীর সমস্ত স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে আপনাদের এ অভূতপূর্ব সংগ্রাম সর্বকালের প্রেরণার উৎস হয়ে রইল।"

তাজউদ্দীন আহমদ তার ভাষণে মানুষের অদম্য মনোবল ও সাহস নিয়ে হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "পৃথিবীর কাছে আমরা ছিলাম শান্তিপ্রিয় মানুষ। বন্ধু-বাৎসল্য, মায়া ও হাসি কান্নায়, গান, সংস্কৃতি আর সৌন্দর্যের ছায়ায় গড়ে ওঠা আমরা ছিলাম পল্লী-বাংলার মানুষ। পৃথিবী ভাবতো, আমরাও ভাবতাম, যুদ্ধ রণডংকা আমাদের থেকে অনেক দূরে। কিন্তু আজ?

আমাদের মানবিক মূল্যবোধ ও আদর্শের পতাকা সমুন্নত রেখে আমরা আবার প্রমাণ করেছি যে, আমরা তিতুমীর-সূর্যসেনের বংশধর। স্বাধীনতার জন্য যেমন আমরা জীবন দিতে পারি, তেমনি আমাদের দেশ থেকে বিদেশি শত্রু-সৈন্যদের চিরতরে হটিয়ে দিতেও আমরা সক্ষম।"

তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ যে স্বাধীন এবং মুক্ত তা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, "বাংলাদেশ আজ স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ মুক্ত। বৈদেশিক সাংবাদিকরা আজ স্বাধীন বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় বিনা বাধায় ঘুরে বেড়াতে পারেন এবং আপনাদের এ বিজয়ের কথা তারা বাইরের জগৎকে জানাচ্ছেন।"

তাজউদ্দীন আহমদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ যুদ্ধের কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রাপ্তির বার্তা দেন এবং অস্ত্র সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি সিলেট ও কুমিল্লা অঞ্চলের বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর খালেদ মোশাররফের বীরত্ব ও মুক্তিবাহিনীর অসীম সাহস ও কৃতিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বেতার ভাষণে বলেন, "খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে আমাদের মুক্তিবাহিনী অসীম সাহস ও কৃতিত্বের সাথে শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন এবং শত্রু সেনাদেরকে সিলেট ও কুমিল্লার ক্যান্টমেন্টের ছাউনিতে ফিরে যেতে বাধ্য করেছেন। আমাদের মুক্তিবাহিনী শীঘ্রই শত্রুকে নিঃশেষ করে দেয়ার সংকল্প গ্রহণ করেছে।"

একইসঙ্গে তিনি নৌ, স্থল ও বিমানবাহিনীর আক্রমণের মুখে চট্টগ্রাম শহরে যে প্রতিরোধব্যুহ গড়ে উঠেছে এবং আমাদের মুক্তিবাহিনী ও চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা যে  সাহসিকতার সাথে শত্রুকে মোকাবিলা করেছে তা স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই প্রতিরোধ স্ট্যালিনগ্রাডের পাশে স্থান পাবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, "এই সাহসিকতাপূর্ণ প্রতিরোধের জন্য চট্টগ্রাম আজও শত্রুর কবলমুক্ত রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের কিছু অংশ ছাড়া চট্টগ্রাম ও সম্পূর্ণ নোয়াখালী জেলাকে 'মুক্ত এলাকা' বলে ঘোষণা করা হয়েছে।’

তার ভাষণে মেজর শফিউল্লাহর নেতৃত্বে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল অঞ্চলের বর্তমান চিত্রও উঠে আসে। একইসঙ্গে পূর্বাঞ্চলের এই তিন বীর সমর পরিচালক ইতিমধ্যে যে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন এবং একযোগে ঢাকা রওনা হওয়ার পূর্বেই পূর্বাঞ্চলের শত্রুদের ছোট ছোট শিবিরগুলোকে সমূলে নিপাত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তা তিনি স্পষ্ট করেন। কেবল তাই নয় কুষ্টিয়ার মুক্তিবাহিনীর ঐতিহাসিক বিজয় এবং এরপর মুক্তিবাহিনী সমস্ত এলাকা থেকে যে পাকিস্তানিদের বিতাড়িত করেছে এবং শত্রুসেনা এখন যশোর ক্যান্টমেন্টে ও খুলনা শহরের একাংশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে সে প্রসঙ্গও তার ভাষণে আসে।

তার ভাষণে তিনি মেজর জলিলের নেতৃত্বে ফরিদপুর খুলনা-বরিশাল-পটুয়াখালী ও  উত্তরবঙ্গে মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার মেজর আহমদের নেতৃত্বে রাজশাহীকে শত্রুর কবল থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হওয়া মেজর নজমুল হকের নেতৃত্বে সৈয়দপুরে এবং মেজর ওয়াজেশের নেতৃত্বে রংপুর মুক্ত বলে দাবি করেন। তিনি তার ভাষণে বলেন, “সৈয়দপুর ও রংপুরকে শত্রুবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করা হয়েছে। রংপুর ও সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা ছাড়া জেলার বাকি অংশ এখন মুক্ত।”

মুক্তিবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের এ অভূতপূর্ব সাফল্য ভবিষ্যতে আরও নতুন সাফল্যের দিশারি। প্রতিদিন আমাদের মুক্তিবাহিনীর শক্তি বেড়ে চলেছে। একদিকে যেমন হাজার হাজার মানুষ মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে তেমনি শত্রুর আত্মসমর্পণের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।"

সদ্য গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের কার্যালয়ের প্রসঙ্গও উঠে আসে তার বক্তব্যে। তিনি স্বচক্ষে ও সরেজমিনে স্বাধীন বাংলাদেশ পরিদর্শনের জন্য বিশ্বের  বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রের প্রতিনিধি, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান। সমস্ত বন্ধু রাষ্ট্র ও পৃথিবীর সমস্ত সহানুভূতিশীল ও মুক্তিকামী মানুষের কাছে,  'রেডক্রস' ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর  সাহায্যের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "যারা আমাদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক অথচ বর্বর ইসলামাবাদ শক্তি যাদের এই মানবিক কাজটুকু করার বিরুদ্ধে নিষেধ উঁচিয়ে দাঁড়িয়েছে, তারা এখন স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। আর যদিও বিদেশ থেকে পাঠানো ত্রাণ-সামগ্রীর জন্য কৃতজ্ঞ, কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, আজকের দিনে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ত্রাণের বাণী বয়ে আনতে পারে উপযুক্ত এবং পর্যাপ্ত হাতিয়ার, যা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ হানাদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে এবং রক্ষা করতে পারে তার ও তার প্রিয় পরিজনের জান, মান আর সম্ভ্রম।"

হানাদার বাহিনীর নির্বিচারে গণহত্যা, নিষ্ঠুরতা ও  পৈশাচিকতা তার ভাষণে উঠে আসে। বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মন্তব্য করে বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের কাছে তিনি অস্ত্র সাহায্য প্রার্থনা করেন।

বিশ্বের সকল বাঙ্গালীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, "বাঙ্গালী ভাইয়েরা, আপনারা পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে থাকুন না কেন, আজকে মাতৃভূমির এই দুর্দিনে সকল প্রকার সাহায্য নিয়ে আপনাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশ থেকে অর্থসংগ্রহ করে অস্ত্র কিনে আমাদের মুক্ত এলাকায় পাঠিয়ে দিন, যাতে করে আমাদের মুক্তিবাহিনীর সৈনিকরা অতিসত্বর সে অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে তার মাতৃভূমিকে রক্ষা করার কাজে।"

তিনি আশা প্রকাশ করেন শিগগির সব মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আধুনিক অস্ত্র তুলে দিতে পারবেন বলে এবং যুবকদের অস্ত্রচালনায় প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য নিকটস্থ সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আহ্বান জানান। তিনি যাদের হাতে আধুনিক অস্ত্র নেই তাদেরও এই জনযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এবং ক্ষমতা আছে বলে মন্তব্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "শত্রুর ছত্রী ও গুপ্তবাহিনীকে অকেজো করে দেয়ার কাজে আপনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারেন। সম্মুখসমরে কাজ না করতে পারলেও আপনি রাস্তা কেটে, পুল উড়িয়ে দিয়ে এবং আরও নানাভাবে উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে শত্রুকে হয়রানি ও কাবু করতে পারেন। নদীপথে শত্রু যাতে না আসতে পারে তার সম্ভাব্য সমস্ত ব্যবস্থা আপনাকেই গ্রহণ করতে হবে ও সবদিকে কড়া দৃষ্টি রাখতে হবে। নদীপথে সমস্ত ফেরি, লঞ্চ ও ফ্ল্যাট অকেজো করে দিতে হবে। এ সমস্ত দায়িত্ব পালন করার জন্য স্থানীয় সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ছোট ছোট দলে সংগঠিত হতে হবে। এর জন্য আপনার এলাকার সমর পরিচালকের সাথে সংগ্রাম পরিষদের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে এবং তার আদেশ ও নির্দেশাবলী মেনে চলতে হবে।"

যুদ্ধে অংশ নেয়া ছাড়াও বাংলাদেশকে সব দিক দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্বকেও অবহেলা না করার নির্দেশ দেন তিনি। এবং শাসনকার্যে অভিজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট বাঙ্গালি অফিসারদের মধ্যে যারা এখনও যোগ দিতে পারেনি, তারা যে যেখানেই থাকুক না কেন, তাদেরকে মুক্ত এলাকায় চলে আসতে আহ্বান জানান। অনুরূপভাবে তিনি সমস্ত বুদ্ধিজীবী, টেকনিশিয়ান, ইঞ্জিনিয়ার, সংবাদপত্রসেবী, বেতার শিল্পী, গায়ক ও চারুশিল্পীদের তারা যেন অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের সাহায্যে এগিয়ে আসেন এই অনুরোধ করেন। তিনি সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে বাংলাদেশের এই সংঘবদ্ধ জনযুদ্ধে শামিল হতে আহ্বান জানান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে সাড়ে সাত কোটি মানুষের এই ঐতিহাসিক প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা আন্দোলনকে চিরাচরিত রাজনৈতিক গণ্ডির উর্ধ্বে রাখার জন্যও আবেদন জানান।

তিনি হানাদার শত্রুবাহিনীর সাথে কোন ধরনের সহযোগিতা করা বা সংশ্রব না  রাখার নির্দেশ দেন। তিনি তার ভাষণে বলেন, "বাংলাদেশে আজ কোন মীরজাফরের স্থান নেই। যদি কেউ হঠাৎ করে নেতা সেজে শত্রু সৈন্যর ছত্রছায়ায় রাজনৈতিক গোর থেকে গাত্রোখান করতে চায়, যাদেরকে গত সাধারণ নির্বাচনে বাংলার মানুষ ঘৃণ্যভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে, তারা যদি এই সুযোগে বাংলাদেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, তবে বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে, তারা সাড়ে সাত কোটি বাংলাদেশবাসীর রোষ বহ্নিতে জ্বলে খাক হয়ে যাবে।"

তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতি মজুতদারি ও কালোবাজারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং জিনিসপত্রের দাম যাতে সাধারণ লোকের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে না যায়, ব্যয় সংকোচন ও জিনিসপত্র কম ব্যবহারের প্রতি লক্ষ্য রাখার অনুরোধ করেন।  

তিনি দৃঢ় আশাব্যক্ত করে বলেন, "এ যুদ্ধে যে আমাদের জয় তাতে সন্দেহের কারণ নেই। আপনারা ইতিমধ্যে সাহস ও ত্যাগের বিনিময়ে যে বিজয় অর্জন করেছেন শত্রুপক্ষ আজকে তা স্পষ্টই বুঝতে পেরেছে। তারা ভেবেছিল যে, আধুনিক সমর সজ্জায় এবং কামানের গর্জনের নিচে স্তব্ধ করে দেবে বাঙ্গালির ভবিষ্যৎ আশা ভরসা । আর চোখ রাঙিয়ে ভয় দেখিয়ে বাঙ্গালিকে তারা বুটের নিচে নিষ্পেষণ করবে। কিন্তু তাদের সে আশা আজ ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। আমরা তাদের মারমুখী আক্রমণের বিরুন্ধে লড়াই করে টিকে আছি এবং তাদেরকে যে প্রতিনিয়ত হটিয়ে দিচ্ছি এতে তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে গেছে। তাদের খাদ্য সরবরাহের সকল পথ আজ বন্ধ, ঢাকার সাথে আজ তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। উড়োজাহাজ থেকে খাবার ফেলে এদেরকে ইয়াহিয়া খান আর বেশি দিন টিকিয়ে রাখতে পারবে না। ওদের জ্বালানি সরবরাহের লাইন আমাদের মুক্তিবাহিনী বন্ধ করে দিয়েছে। ইয়াহিয়ার উড়োজাহাজ আর বেশিদিন বাংলাদেশের আকাশে দেখা যাবে না। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি উত্তাল জনসমুদ্রের মাঝখানে ওরা আজকে বিচ্ছিন্ন খাপের মতো। বাংলাদেশের আকাশে শীঘ্রই ঝড়ের মাতন শুরু হচ্ছে। ওরা জানে ওরা হানাদার। ওরা জানে ওদের বিরুদ্ধে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের ভ্রুকুটি ও ঘৃণা। ওরা জানে ওদের সামনে পরাজয়ের পরোয়ানা নিয়ে হাজির। তাই ওরা উন্মাদের মতো ধ্বংসলীলায় মেতে উঠেছে। পৃথিবী আজ সজাগ হয়েছে। পৃথিবীর এই অষ্টম বৃহৎ রাষ্ট্র বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্বের মানুষ যেখানে ওরা এ ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। বিশ্বের মানুষ আজ আর ইসলামাবাদ সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মিথ্যা মুক্তি আর অজুহাত স্বীকার করে নিতে রাজি নয়। যে সমস্ত সাংবাদিক বাংলাদেশের এই যুদ্ধের ভয়াবহতা ও নৃশংসতা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তারা ইয়াহিয়ার এই অন্যায় ও অমানবিক যুদ্ধ আর ধ্বংসলীলার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাচ্ছেন। অপরপক্ষে যে সমস্ত সাংবাদিক আমাদের মুক্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন তারা বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষের এই বীর প্রতিরোধ যুদ্ধের খবর আর বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ইয়াহিয়া সরকারের ধ্বংস ও তাণ্ডবলীলার চাক্ষুষ প্রমাণ।

ইতিমধ্যে সোভিয়েত রাশিয়া এবং ভারতবর্ষ এই নির্বিচার গণহত্যার বিরুদ্ধে তাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে এবং সোভিয়েত রাশিয়া অবিলম্বে এই হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়ন বন্ধ করার আহবান জানিয়েছে। গ্রেট বৃটেনও বাংলাদেশের এ অবস্থা সম্পর্কে সজাগ হয়ে উঠেছে। যে সমস্ত পাকিস্তানি বিমান মৃত্যুর সরঞ্জাম নিয়ে ঢাকা আসার পথে জ্বালানি সংগ্রহ করছিল, তাদেরকে জ্বালানি সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র সিংহল ও ব্রহ্মদেশ।"

যদিও কোন কোন দেশ বাংলাদেশের ঘটনাবলীকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে অভিহিত করছে বলে তিনি তার ভাষণে বলেন, "এ কথা এখন দিবালোকের মতো সত্য হয়ে গেছে যে, সাড়ে সাত কোটি মানুষকে পিষে মারার চেষ্টা, তাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র একটি আন্তর্জাতিক ব্যাপারে পরিগণিত হয়েছে এবং এই সমস্যা আজ পৃথিবীর সমস্ত মানুষের বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টি ও পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অনুরোধ জানিয়েছি। পৃথিবীর বিভিন্ন রাজধানীতে আমরা আমাদের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছি এবং বিদেশের সমস্ত রাষ্ট্রের কাছে কূটনৈতিক স্বীকৃতি ও আমাদের স্বাধীনতা ও আত্মরক্ষার সংগ্রামে সাহায্য ও সহানুভূতি চেয়ে পাঠাচ্ছি।

আমাদের যে সমস্ত ভাই-বোন শক্রকবলিত শহরগুলোতে মৃত্যু ও অসম্মানের নাগপাশে আবদ্ধ, আদিম নৃশংসতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে সাহস ও বিশ্বাসের সাথে মুক্তির পথ চেয়ে আছেন, তাদেরকে আমরা এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারি না। যারা আমাদের সংগ্রামে শরিক হতে চান তাদের জন্য রইল আমাদের আমন্ত্রণ। যাদের পক্ষে নেহাতই মুক্ত এলাকায় আসা সম্ভব নয় তাদেরকে আমরা আশ্বাস এবং প্রেরণা দিচ্ছি বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের পক্ষ থেকে, শহীদ ভাইবোনদের বিদেহী আত্মার পক্ষ থেকে। শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। ইনশাআল্লাহ, জয় আমাদের সুনিশ্চিত।"

তাজউদ্দীন আহমদ আশা প্রকাশ করেন এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে না এবং এই সংগ্রাম পৃথিবীর স্বীকৃতি পাচ্ছে। তিনি  পুরাতন পূর্ব-পাকিস্তানের ধ্বংসাবশেষের ওপর নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংকল্পে আমাদের সবাইকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ারও আহবান জানান। তিনি বেতারে তার ভাষণে বলেন, "আমাদের এই পবিত্র দায়িত্ব পালনে এক মুহূর্তেরও জন্যও ভুলে গেলে চলবে না যে এ যুদ্ধ গণযুদ্ধ এবং সত্যিকারের অর্থে এ কথাই বলতে হয় যে এ, যুদ্ধ বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের যুদ্ধ। খেটে খাওয়া সাধারণ কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত, ছাত্র-জনতা তাদের সাহস, তাদের দেশপ্রেম, তাদের বিশ্বাস, স্বাধীন বাংলাদেশের চিন্তায় তাদের নিমগ্নপ্রাণ, তাদের আত্মাহুতি, তাদের ত্যাগ ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ফলপ্রসূ হয়ে উঠুক আমাদের স্বাধীনতার সম্পদ। বাংলাদেশের নিরন্ন দুঃখী মানুষের জন্য রচিত হোক এক নতুন পৃথিবী, যেখানে মানুষ মানুষকে শোষণ করবে না। আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক ক্ষুধা, রোগ, বেকারত্ব আর অজ্ঞতার অভিশাপ থেকে মুক্তি। এই পবিত্র দায়িত্বে নিয়োজিত হোক সাড়ে সাত কোটি বীর বাঙালি ভাই-বোনের সম্মিলিত মনোবল ও অসীম শক্তি। যারা আজ রক্ত দিয়ে উর্বর করছে বাংলাদেশের মাটি, যেখানে উৎকর্ষিত হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন মানুষ, তাদের রক্ত আর ঘামে ভেজা মাটি থেকে গড়ে উঠুক নতুন গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা; গণ-মানুষের কল্যাণে সাম্য আর সুবিচারের ভিত্তিপ্রস্তরে লেখা হোক জয় বাংলা', জয় স্বাধীন বাংলাদেশ।"

১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল ছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ঘটনাবহুল একটি দিন। এদিন  পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান লেফটেন্যান্ট জেনালের আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজিকে পূর্ব পাকিস্তান কমান্ডের অধিনায়ক নিযুক্ত করেন। তিনি জেনারেল টিক্কা খানের স্থলাভিষিক্ত হলেন। এর আগে তিনি ৩ এপ্রিল তার নিয়োগের পর ৪ এপ্রিল ঢাকায় এসেছিলেন।

একই দিন চীনের প্রেসিডেন্ট চৌ এন লাই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, চীন সরকার মনে করে পূর্ব পাকিস্তানে যা হচ্ছে তা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং  ভারত যদি এই ব্যাপারে পাকিস্তানের উপর হামলা চালায় তবে  চীনা সরকার ও জনগণ সবসময় পাকিস্তান সরকার ও জনগণকে তাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ন্যায্য সংগ্রামে সমর্থন দেবে।

এদিন মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা নিয়ে এই দিনে চীনের পিপলস ডেইলিতে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। সেখানে শিরোনাম ছিলো ‘ভারতীয় সম্প্রসারণবাদীরা কী করতে চাইছে?’ সে নিবন্ধে বলা হয় পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের নেওয়া পদক্ষেপ নিয়ে হস্তক্ষেপের অধিকার কোনো দেশের নেই। এতদসত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে ভারতের কোনো কোনো রাজ্যের মন্ত্রীরা শোরগোল শুরু করেছেন। ভারত সরকার জাতিসংঘে দুই পরাশক্তি সঙ্গে নিয়ে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের ষড়যন্ত্র আঁটছে। সে নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, প্রতিটি জাতিরই পারস্পরিক সম্মানের পাঁচটি নীতি মেনে চলা উচিত। নীতিগুলো হচ্ছে- সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা, অনাক্রমণ, পারস্পরিক অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, সমতা এবং পারস্পরিক কল্যাণ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।

এইদিন পাকিস্তানী হানাদারেরা স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় প্রথমে গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছিল। পরে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি মানিকহার আক্রমণ করে। পাকসেনাদের আধুনিক অস্ত্রের মুখে মুক্তিযোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে তারা মানিকহার গ্রামটি জ্বালিয়ে দেয়।

১১ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি সামরিক বহর কালিগঞ্জের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে কালামিয়া নামের এক ব্যক্তি আশেপাশের গ্রাম থেকে দশ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে কালিগঞ্জের এক মাইল দূরে অ্যামবুশ করেছিলো। এই অ্যামবুশে তিনটি গাড়ি সম্পূর্ণ নষ্ট হয় এবং দশ জন পাকসেনা নিহত হয়। কালামিয়া গ্রেনেড নিয়ে পাকবাহিনীর একটি গাড়ির পিছু ধাওয়া করলে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে শহীদ হন।

এদিন, দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে পাকবাহিনীর সাথে তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের যোদ্ধাদের তীব্র যুদ্ধ হয়। পাকবাহিনীর প্রবল আক্রমণের মুখে মুক্তিযোদ্ধারা চরখাই এসে সেখানে প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তুলেন। হানাদারেরা যেন চরখাই আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য ক্যাপ্টেন আশরাফের কোম্পানি ফুলবাড়ি চরখাই রোডে, মেজর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের কোম্পানি ঘোড়াঘাট-চরখাই রোডে অবস্থান নেয় এবং লেফটেন্যান্ট মোখলেসের কোম্পানি ডেপথ কোম্পানি হিসেবে রাখা হয়।

এদিন সকালে হানাদারেরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পাবনার ঈশ্বরদীতে  প্রবেশ করে। সেনাদের গুলিতে রেলগেটে মজিদ নামের একজন কুলি শহীদ হন। পাকিস্তানি হানাদারদের প্রবেশের পর পরই ঈশ্বরদীতে অবাঙালী বিহারীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে বাঙালী নিধন অভিযানে নামে। মোহাম্মদপুরের  নূর মহল্লা ও ফতে-মোহাম্মদপুর এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে মিলে অবাঙালীরা হত্যাকাণ্ড ও লুটতরাজে অংশ নেয়। রাতে এ-দুটি মহল্লায় ৩২ জন বাঙালী প্রাণ হারান।

যশোরের বেনাপোল সড়কে পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কিছু সৈন্য নিহত হয়। যশোরের  ঝিকরগাছায় এদিন মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এ যুদ্ধে হানাদারদের প্রচুর ক্ষতি হয়।

১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের কালুরঘাটে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আর্টিলারী, মর্টার, ট্যাংক এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রের মাধ্যমে  আঘাত হানে। উভয়পক্ষে তুমুল সংঘর্ষে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং অনেকে আহত হন। এই আক্রমণে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। লেফটেন্যান্ট  শমসের মুবিন চৌধুরী গুরুতর আহত অবস্থায় পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি হন। সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ত্যাগ করে পেছনে সরে আসে।

এদিন কলকাতায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রাম সহায়ক সমিতি বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সমর্থনে জনসভা করে। এই জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায় অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। একইসঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী কর্পুরী ঠাকুর তা সমর্থন করেছিলেন। অন্যদিকে ঢাকায় তথ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা করে, "পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ভিত্তিহীন প্রচারণা অব্যাহত রাখার জন্যই নয়াদিল্লির বেতার পূর্ব পাকিস্তানে নির্যাতনের কাল্পনিক কাহিনি প্রচার করে যাচ্ছে।"

দিল্লিতে এদিন ভারত সরকার জানায়, পাকিস্তানের সাবমেরিনে কর্মরত আটজন বাঙালি নাবিক ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। মূলত ফ্রান্সের একটি বন্দরে থাকা পাকিস্তানের সাবমেরিন থেকে পালিয়ে তারা ভারতে আসেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ অর্গানাইজেশন ১১ এপ্রিল ‘পাকিস্তান সংকট-ঘটনা ও পরিণতি’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

তথ্য সূত্র - 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড)

১২ই এপ্রিল ১৯৭১, আনন্দবাজার পত্রিকা।

১২ই এপ্রিল ১৯৭১,  দৈনিক পাকিস্তান 

রক্তে ভেজা একাত্তর/ মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম)

আহমাদ ইশতিয়াক [email protected]

আরও পড়ুন-

১০ এপ্রিল: মুজিবনগর সরকার গঠন ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিবস

এক দুঃসাহসী মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিবেটি কাঁকন হেনইঞ্চিতা

স্বাধীনতাই একমাত্র গন্তব্য পূর্ব পাকিস্তানের: মওলানা ভাসানী

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago