স্যামসনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও শেষ বলের রোমাঞ্চে মোস্তাফিজদের হার

মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রান উৎসবের ম্যাচে শেষ বলের রোমাঞ্চে রাজস্থানকে ৪ রানে হারিয়েছে পাঞ্জাব কিংস
Sanju Samson
ছবি: বিসিসিআই

শেষ ওভারে জিততে দরকার ছিল ১৩ রান, শেষ বলে সেটা দাঁড়াল ৫ রানে। আর্শ্বদীপ সিংয়ের বলে রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ছক্কার দিকেই মেরেছিলেন শট, বাউন্ডারি লাইনে তার ক্যাচটা জমালেন দীপক হুডা। ৬৩ বলে ৭ ছক্কায় ১১৯ রানের ইনিংসটা রইল বৃথা।

মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রান উৎসবের ম্যাচে শেষ বলের রোমাঞ্চে রাজস্থানকে ৪ রানে হারিয়েছে পাঞ্জাব কিংস। সোমবারের ম্যাচটা বাংলাদেশের মানুষের জন্যও ছিল কৌতূহলের। এই ম্যাচে রাজস্থানের হয়ে নেমেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তবে তিনি প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। ছিলেন বেশ খরুচে।

এদিন অবশ্য বেশিরভাগ বোলারই ছিলেন অসহায়। আগে ব্যাটিং পাওয়া পাঞ্জাব করে ২২১ রান। ৫০ বলে ৯১ করেন লোকেশ রাহুল। মাত্র ২৮ বলে ৬৪ আসে দীপক হুডার ব্যাট থেকে। ক্রিস গেইল করেন ২৮ বলে ৪০ রান।

রান তাড়ায় একাই দলকে টেনেছেন রাজস্থান অধিনায়ক স্যামসন। আইপিএলে অধিনায়কত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে শেষ বলে আউট হয়েছেন ১১৯ রানে। ৬৩ বলের ইনিংসে ১২ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৭ ছক্কা। তার দল থামে ২১৭ রানে।

জস বাটলার ছোট ঝড় তুলে থামলেও বেন স্টোকস ফেরেন ইনিংসের শুরুতে। ২২২ রান তাড়ায় তাই শুরুটা একদম ভাল হয়নি রাজস্থানের। তবে তা সামলে রানের চাকা জারি রেখেছিলেন স্যামসন। তাকে সঙ্গ দিয়ে দলের চাহিদা মিটিয়েছেন শিমভ দুবে, রিয়ান পরাগরা। কাজ সমাধার আগে তারা ফিরে গেলেও শেষ পর্যন্ত স্যামসনই টিকে ছিলেন দলের আশা হয়ে।

শেষ ওভারে ৫ ওভারে দরকার ছিল ৬৮ রান। স্যামসন আর রিয়ন পরাগ মিলে কাজটা করে ফেলছিলেন সহজ। শেষ ওভারে ১৩ রানের চাহিদা মনে হচ্ছিল মিটিয়েই ফেলবে রাজস্থান। প্রথম বল ডট হওয়ার পর পরের দুই বলে দুই সিঙ্গেল। চতুর্থ বলে ছক্কায় উড়ান স্যামসন। পঞ্চম বলে রান না নিয়ে নিজেই চ্যালেঞ্জ নেন ছক্কায় শেষ করার। তা করেও ফেলেছিলেন প্রায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি।

এর আগে মোস্তাফিজদের বোলিংয়েও ছিল চার-ছয়ের উৎসব।   ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে পান মোস্তাফিজ। উইকেট পেতে পারতেন প্রথম ওভারেই। কিন্তু মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে পরাস্ত করলেও এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার, রিভিউও নেয়নি রাজস্তান। রিপ্লেতে দেখা গেছে একটি নিশ্চিত উইকেটই ফসকে গেছে তার। ওই ওভারে পরে দিয়ে দেন ১১ রান।

পঞ্চম ওভারে এসে দেন আরও ৮ রান। এরপর লোকেশ রাহুল-দীপক হুডা মিলে যখন তাণ্ডব চালাচ্ছেন তখন তাদের থামাতে মোস্তাফিজের ডাক পড়ে ১৫তম ওভারে। তার প্রথম বলেই ক্যাচ উঠিয়েছিলেন একের পর এক ছক্কা মারতে থাকা হুডা। কিন্তু জস বাটলার, বেন স্টোকস দ্বিধায় পড়ে ফেলে দেন সেই ক্যাচ। ওই ওভারে তিনি দেন ১১ রান।

১৯তম ওভারে মোস্তাফিজ করেছেন সবচেয়ে বাজে বোলিং। ওয়াইড, নো বল আর দুই চারে দেন ১৫ রান। তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪-০-৪৫-০।

টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে মায়াঙ্ক আগারওয়াল আউট হয়েছিলেন শুরুতে। এরপর যেন বইতে থাকে চার-ছয়ের ঝড়। গেইলকে নিয়ে প্রথমে ৬৭ রানের জুটি আনেন রাহুল। তাতে ৪ বাউন্ডারি, ২ ছক্কায় গেইলের অবদান ২৮ বলে ৪০। রাহুল তেওয়াতিয়া নিজের বলে গেইলের ক্যাচ ছেড়েছিলেন। জীবন পাওয়া গেইল বাড়তে পারতেন আরও অনেক দূর। অনিয়মিত লেগ স্পিনার পরাগ এসে ফেরান গেইলকে।

চার নম্বরে নেমে গেইলের আউটের কোন প্রভাবই পড়তে দেননি হুডা। একের পর এক ছক্কা পেটাতে থাকেন তিনি। মাত্র ২০ বলে তুলে নেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত হাফ ডজন ছক্কায় ২৮ বলে ৬৪ করেছেন এই ডানহাতি।

অধিনায়ক রাহুল খেলছিলেন দুর্দান্ত কিছু শট। ক্রিস মরিসের দ্রুতগতির বলও স্কুপ করে পাঠাচ্ছিলেন বাউন্ডারিতে। দারুণ পুলে বল পাঠাচ্ছিলেন গ্যালারিতে। সেঞ্চুরির কাছেও চলে গিয়েছিলেন তিনি। শেষ ওভারে তাকে ফেরান অভিষিক্ত সাকারিয়া। তবে উইকেটটিতে বড় অবদান তেওয়াতিতার। ছক্কার জন্যই ছুটছিল বল। লাফিয়ে প্রথমে তা বাউন্ডারি লাইনের ভেতরে আটকে দ্বিতীয় চেষ্টায় ক্যাচ লুফেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাঞ্জাব কিংস: ২০ ওভারে ২২১/৬ (রাহুল ৯১, মায়াঙ্ক ১৪, গেইল ৪০, হুডা ৬৪, পুরান ০, শাহরুখ ৬*, রিচার্ডসন ০; সাকারিয়া ৩/৩১, মোস্তাফিজ ০/৪৫, মরিস ২/৪১, শ্রেয়াস ০/৪০, স্টোকস ০/১২, তেওয়াতিয়া ০/২৫, পরাগ ১/৭, দুবে ০/২০)

রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ২১৭/৭ ( স্টোকস ০, বোহরা ১২, সঞ্জু  ১১৯, বাটলার ২৫, দুবে ২৩, পরাগ ২৫, রাহুল ২, মরিস ২ ; শামি ২/৩৩, রিচার্ডসন ১/৫৫, আর্শদ্বীপ ৩/৩৫, মেরেডিথ ১/৪৯, মুরগান ০/৪৩ )

ফল: পাঞ্জাব কিংস ৪ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সঞ্জু স্যামসন।

Comments

The Daily Star  | English
bd govt logo

25 districts including Dhaka get new DCs

Deputy commissioners were withdrawn from these districts on August 20

20m ago