তাইওয়ানের আকাশে চীনের ‘রেকর্ড সংখ্যক’ যুদ্ধবিমান
তাইওয়ানের আকাশে চীনের ‘রেকর্ড সংখ্যক’ যুদ্ধবিমান দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্বশাসিত দ্বীপটি।
আজ মঙ্গলবার বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, তাইওয়ান জানিয়েছে, গতকাল সোমবার চীনের ‘রেকর্ড সংখ্যক’ যুদ্ধবিমান এর আকাশসীমা দিয়ে উড়ে গেছে।
স্বশাসিত দ্বীপটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধবিমান ও পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম বিমানসহ ২৫টি উড়োজাহাজ গতকাল সোমবার সেখানকার আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে।
এগুলোর মধ্যে ছিল ১৮টি যুদ্ধবিমান ও চারটি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম বিমান, দুটি সাবমেরিন ধ্বংস করতে সক্ষম জঙ্গিবিমান ও একটি আগাম সতর্ক করার উড়োজাহাজ।
একে গত এক বছরে দ্বীপটির আকাশসীমা লঙ্ঘনের বড় ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ‘চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের’ বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতার একদিন পর এ ঘটনা ঘটল।
মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানানো হয়, তাইওয়ান চীনের যুদ্ধবিমানগুলোকে সতর্ক করতে জঙ্গিবিমান পাঠিয়েছিল এবং পাশাপাশি চীনের যুদ্ধবিমানগুলোর গতিবিধি লক্ষ্য করতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চল ও তাইওয়ান-নিয়ন্ত্রিত প্রেতাস দ্বীপের মধ্যবর্তী দক্ষিণ চীন সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপর দিয়ে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে চীন।
গতকাল চীনের যুদ্ধবিমানগুলোকে তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে প্রেতাস দ্বীপের কাছের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন তাইওয়ানের প্রতি চীনের ‘ক্রমাগত আগ্রাসী কর্মকাণ্ডে’ উদ্বেগ প্রকাশের একদিন পর স্বশাসিত দ্বীপটির আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তাইওয়ান সরকার দ্বীপটির স্বাধীনতা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার প্রস্তুতি নিতে যাওয়ায় চীন ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
তাইওয়ানের নিজস্ব সংবিধান, সেনাবাহিনী ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার রয়েছে উল্লেখ করে এর প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বার বার বলছেন, এটি ইতোমধ্যে একটি স্বাধীন দেশ। এর স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার প্রয়োজন নেই।
তবে চীন দ্বীপটিকে এর অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে এবং প্রয়োজনে বল প্রয়োগের সম্ভাবনার কথাও নাকচ করে দেয়নি।
চীন-তাইওয়ান সম্পর্ক
১৯৪৯ সালে চীনের গৃহযুদ্ধের পর থেকে চীন ও তাইওয়ানে পৃথক সরকার রয়েছে। দ্বীপটিকে ফিরে পেতে চীন প্রয়োজনে বল প্রয়োগের হুমকি দেওয়ায় তাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। সাম্প্রতিক সময়ে এই উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে।
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাইওয়ানকে খুব অল্প কয়েকটি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে, তবুও এর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার অনেক দেশের সঙ্গে সুদৃঢ় বাণিজ্যিক ও অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে।
তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও দ্বীপটির আত্মরক্ষায় সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্রে আইন রয়েছে।
Comments