বোলিংয়ে আঁটসাঁট কিন্তু ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ সাকিব, হারল কলকাতা

Shakib Al Hasan
আউট হয়ে ফিরছেন সাকিব। ছবি: বিসিসিআই

উইকেট ছিল বেশ মন্থর,  বল গ্রিপ করছিল। স্পিনারদের এমন সহায়ক পরিস্থিতিতে হতাশ করেননি সাকিব আল হাসান। বেশ আঁটসাঁট বল করে নিয়েছেন এক উইকেট। ইনিংসের শেষ দিকে বল করতে এসে বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ২ ওভারেই ৫ উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল। চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে নাগালের ভেতর আটকেও দিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। তবে রান তাড়ায় ভালো শুরুর পরও মুম্বাইর বোলারদের নৈপুণ্যে পারেনি তারা। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সুযোগ পেয়েও ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব।

চেন্নাইরের চিপক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার কলকাতাকে ১০ রানে হারিয়েছে মুম্বাই। মুম্বাইর করা ১৫২ রান টপকাতে গিয়ে ২০ ওভার খেলে তারা করেছে ১৪২ রান। বোলিংয়ে ২৩ রানে ১ উইকেট নেওয়া সাকিব ব্যাটিংয়ে করেছেন ৯ বলে ৯ রান।

মুম্বাইর জয়ে অবদান ব্যাটিংয়ে ৩৬ বলে ৫৬ করা সূর্যকুমারের। তবে বোলাররাই করেছেন আসল কাজ। লেগ স্পিনার রাহুল চাহার দারুণ বল করে ২৭ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ক্রুনাল পান্ডিয়া মাত্র ১৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। শেষ ওভারে ২ উইকেট নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। 

১৫৩ রান তাড়ায় কলকাতার দুই ওপেনার নিতিশ রানা, শুভমান গিল আনেন দারুণ শুরু। ওপেনিং  জুটিতেই খেলা অনেকখানি এগিয়ে দেন তারা। নবম ওভারে দলের ৭১ রানে ফেরেন ৩৩ করা গিল।

নিতিশ ছিলেন আগের দিনের ছন্দে। খেলতে থাকেন স্বচ্ছন্দে। ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন তিনি। আরেক দিকে অবশ্য চলতে থাকে উইকেট পতনের ধারা। তড়িঘড়ি ফিরে যান রাহুল ত্রিপাঠি আর ওয়েন মরগ্যান।

নিতিশও ফিফটির পর দারুণ বল করতে থাকা চাহারের বলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু সুযোগটা একদম কাজে লাগাতে পারলেন না তিনি। ক্রুনালকে পরিস্থিতিতির বাইরে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় শটে ডিপ মিড উইকেটে তুলে দেন সহজ ক্যাচ।

তখনই সহজ ম্যাচ আচমকা কঠিন হয়ে যায় কলকাতার। ক্রমশ ম্যাচ চলে যায় তাদের নাগালের বাইরে। শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ১৮ রান। বুমরাহ-বোল্টদের কাছ থেকে কলকাতা তুলতে পারে কেবল ৯ রান। হারায় আরও ২ উইকেট।  

টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই কুইন্টেন ডি কককে হারায় মুম্বাই। এরপর জুটি গড়েন রোহিত-সূর্যকুমার। দুজনের ৭৬ রানের জুটি গড়ে দেয় কঠিন উইকেটে লড়াইয়ের ভিত।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বল হাতে পান সাকিব। প্রথম ওভার থেকে দেন মাত্র ৪ রান। পাওয়ার প্লে পেরিয়ে গেলে ফের ডাক পড়ে তার। দ্বিতীয় ওভারে তার সবগুলো বল থেকে সিঙ্গেল নেন রোহিত শর্মা-সূর্যকুমার যাদব। তৃতীয় ওভারেও আসে ৬ রান।

চতুর্থ ওভারে গিয়ে প্রথম বাউন্ডারি খান সাকিব। এই ওভারে উইকেটও পান তিনি। সূর্যকুমার উইকেটের পেছন দিয়ে লেট কাটে সাকিবকে চার মারার পর বেরিয়ে এসে উড়াতে গিয়েছিলেন। টাইমিংয়ে গড়বড়ে ক্যাচ যায় লং অফে। ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে বাংলাদেশের তারকা মাত্র ২৩ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। তবে ম্যাচের অন্য ইনিংসে আরেক বাঁহাতি স্পিনার ক্রুনাল দুর্দান্ত বল করে ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে দেখান উইকেটে ছিল স্পিনারদের জন্য আরও অনেক রসদ।

কঠিন উইকেটেও বড় রানের আশা ছিল মুম্বাইর। কিন্তু ৩২ বলে ৪৩ করে অধিনায়ক রোহিত ফিরে যাওয়ার পর দ্রুত বদলায় প্রেক্ষাপট।

আন্দ্রে রাসেল বল হাতে পান ইনিংসের ১৮তম ওভারে। বল পেয়েই ওই ওভারে আউট করে দেন কাইরন পোলার্ড আর মার্কো ইয়ানসেনকে।

২০ তম ওভারে রাসেল রান দিয়েছেন ১০। তবে উইকেট নিয়েছেন তিনটি। বুদ্ধিদীপ্ত বল করে মুম্বাইর ইনিংস মুড়ে দেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ১৫ রানে ক্যারিয়ার সেরা ৫ উইকেট যায় তার পকেটে। মুম্বাইও দেড়শোর আশেপাশেই থেমে যায়।  যদিও ম্যাচ শেষে এই ৫ উইকেট পড়ে গেছে আড়ালে। দেড়শো রানও হয়েছে অনেক বড়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স:  ২০ ওভারে ১৫২  (রোহিত ৪৩, ডি কক ২, সূর্যকুমার ৫৬, ঈশান ১, হার্দিক ১৫, পোলার্ড ৫, ক্রুনাল ১৫, ইয়ানসেন ০, রাহুল ৮, বুমরাহ ০, বোল্ট ০* ; হরভজন ০/১৭, বরুন ১/২৭, সাকিব ১/২৩, কামিন্স ২/২৪, প্রাসিধ ১/৪২, রাসেল ৫/১৫) 

কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৪২/৯  (নিতিশ  ৫৭ , গিল ৩৩, ত্রিপাঠি ৫, মরগ্যান  ৭, সাকিব   ৯, কার্তিক ৮*, রাসেল ৯, কামিন্স ০, হরভজন ২* ; বোল্ট  ২/২৭, ইয়ানসেন ০/১৭, বুমরাহ ০/২৮, ক্রুনাল ১/১৩, পোলার্ড ০/১২,  চাহার ৪/২৭, রোহিত ০/৯ )

ফল: মুম্বাই ইন্ডিয়ান ১০ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আন্দ্রে রাসেল।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

2h ago