লকডাউনে সৌদি আরব, ইউএই, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরগামীদের জন্যে বিশেষ ফ্লাইট

লকডাউনের কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আটকে পড়া সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরগামীদের জন্যে শিগগিরই বিশেষ ফ্লাইট চালু করবে সরকার। এ বিষয়ে আগামীকাল বিস্তারিত পরিকল্পনা নিশ্চিত করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

লকডাউন চলাকালীন বিদেশগামী কর্মীদের গন্তব্য দেশে যাওয়া বিষয়ে আজ বুধবার হওয়া ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান ও বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো—

১. সৌদি আরব, ইউএই, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরের জন্য শিগগিরই স্পেশাল ফ্লাইট চালু করা হবে। বেবিচক এ বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা আগামীকাল নিশ্চিত করবে।

২. বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমানবন্দরে আনার দায়িত্ব রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর।

৩. প্রবাসী কর্মীরা কেবল জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনের ছাড়পত্র নিয়ে ও দেশে প্রযোজ্য কোয়ারেন্টিন শর্ত মেনে কোভিড নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।

বৈঠক শেষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন দ্য ডেইলি স্টারকে এই তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ১১ এপ্রিল বেবিচক জানায়, ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন চলাকালীন সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে।

ফ্লাইট বন্ধের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েন প্রবাসী কর্মী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ৫০-৬০ হাজার ভিসা প্রক্রিয়াধীন, ২০-২৫ হাজার কর্মীর টিকিট ইস্যু করা আছে। 

প্রবাসী কর্মীরা জানান, দীর্ঘদিন দেশে আটকে থাকার পর অনেক চেষ্টা করে ও অর্থ খরচ করে গন্তব্য দেশের শর্ত অনুযায়ী তারা টিকিট করাসহ কোয়ারেন্টিনের হোটেল বুকিং দিয়েছিলেন। ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় তারা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

১০ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কোভিডের কারণে গত বছর মাত্র দুই লাখ ১৭ হাজার লোক বিদেশে গেছেন। এই ধাক্কা কাটিয়ে এ বছরের শুরু থেকে বৈদেশিক কর্মসংস্থান কিছুটা স্বাভাবিত হয়। জনশক্তি, কর্মসংস্থান, প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে ৩৫ হাজার ৭৩২, ফেব্রুয়ারিতে ৪৯ হাজার ৫১০ ও মার্চে ৬১ হাজার ৬৫৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। আরও কয়েক লাখ লোক যাওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন। কিন্তু, ফ্লাইট বন্ধে সংকটে আছেন সবাই।

ফ্লাইট চালুর দাবিতে গতকাল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে রিক্রুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদ। চিঠিতে তারা জনশক্তি খাতকে জরুরি খাতের আওতায় রেখে বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রাখার দাবি জানায়।

প্রবাসীদের কথা ভেবে গতকাল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা)।

আরও পড়ুন:

লকডাউনে বিদেশগামী কর্মীদের ফ্লাইট চালু রাখার দাবি বায়রা-আটাবের

১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত

১৪-২১ এপ্রিল: নতুন বিধি-নিষেধে যেভাবে চলার নির্দেশনা

১৪ এপ্রিল থেকে বন্ধ হতে পারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

১৪ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউনের চিন্তা: সেতুমন্ত্রী

Comments

The Daily Star  | English

50% of bank directors to be independent

The interim government is set to amend the Bank Company Act by reducing the board members from a single family, the BB governor tells The Daily Star

12h ago