মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধীদের ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ গঠনের ঘোষণা

Myanmar
মিয়ানমারের লাউংলন শহরে সেনাবিরোধী বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত সংসদ সদস্য, অভ্যুত্থানবিরোধী ও জাতিগত সংখ্যালঘু নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল নিজেদেরকে দেশটির ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

আজ শুক্রবার রয়টার্স জানায়, ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ নামে মিয়ানমারের অন্তর্বর্তী সরকারের এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় সামরিক শাসনের মূলোৎপাটন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার মিয়ানমারের প্রবীণ গণতন্ত্র কর্মী মিন কো নাইং ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ গঠনের ঘোষণা দিয়ে ১০ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘দয়া করে জনগণের সরকারকে স্বাগত জানান।’

সামরিক সরকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এটিকে শেকড় থেকে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করছি। এজন্য আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকটি পদ ঘোষণা করে মিন কো নাইং আরও জানান, জনগণের ইচ্ছাই ঐক্য সরকারের অগ্রাধিকার।

‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ তাদের মন্ত্রীসভার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। ওই তালিকায় গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন ও স্বায়ত্তশাসনকামী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদী নেতারা আছেন। সংখ্যালঘু নেতাদের কয়েকজন স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে কয়েক দশক ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে লড়াই করছেন।

ঐক্য সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক সমর্থন ও স্বীকৃতি অর্জন।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে সহিংসতা চলছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে মানুষ প্রতিদিনই রাস্তায় নামছে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত সাতশ’র বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

রয়টার্স জানায়, ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চির দলের সদস্যসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা দেশের মানুষ ও বিশ্বের কাছে ‘সেনাবাহিনী মিয়ানমারের বৈধ রাজনৈতিক কর্তৃত্ব নয়’ দাবি করে নিজেদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন।

গত নভেম্বরের নির্বাচনে সু চির দল ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে দাবি করে সেনা অভ্যুত্থানকে বৈধতা দিয়েছে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনী। তবে, নির্বাচন কমিশন এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে।

এ ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে পশ্চিমা সরকারগুলো মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সেনা কর্মকর্তাদের ওপর সীমিত নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে।

সেনা কর্মকর্তারা একে ‘বাইরের হস্তক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

সেনা অভ্যুত্থানের পরই ক্ষমতাসীন নেতা অং সান সু চিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এক মুখপাত্র জানান, তারা সু চির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে কথা বলতে পারেননি। তবে, তারা নিশ্চিত- কী ঘটছে তা সু চি জানেন।

আরও পড়ুন:

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেনের সহযোগীকে হত্যার দায়ে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

ভারতে আশ্রয় প্রার্থনা মিয়ানমারের ৬ এমপিসহ ১৮ শ জনের

আগামী ২ বছরের মধ্যে মিয়ানমারে নির্বাচন হবে: সামরিক সরকার

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ, নিহত ১১

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে ১০ সশস্ত্র সংগঠনের সমর্থন

এবার মিয়ানমারে ‘গেরিলা’ আক্রমণের ডাক

মিয়ানমারে হত্যাযজ্ঞ বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগ আহ্বান

চীন-রাশিয়ার বিরোধিতায় আবারও মিয়ানমার নিয়ে বিবৃতি দিতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি আটকে দিলো চীন

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান নিরাপত্তা পরিষদকে

সু চি ‘সুস্থ’ আছেন: আইনজীবী

বিক্ষোভ করলে মাথায় গুলি লাগতে পারে: মিয়ানমার সেনাদের হুমকি

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ৩ শতাধিক

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে নিহত আরও ৯০

সু চির বিরুদ্ধে মিয়ানমার পুলিশের মামলা

মিয়ানমারে আমাদের বিনিয়োগে প্রভাব পড়বে না: জাপান

মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগে বিলম্ব ঝুঁকি

যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ ঝুঁকিতে মিয়ানমার

‘সু চি সরকারের বেশিরভাগ ক্ষমতা সামরিক বাহিনীর হাতেই ছিল’

রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া: সু চি-সেনাবাহিনী একই

মিয়ানমার: ১৯৪৮ থেকে ২০২১

Comments