বোলিং খরুচে, ব্যাটিংয়ে মন্থর সাকিব, ম্যাক্সওয়েল-ভিলিয়ার্স ঝড়ে কলকাতার বড় হার

AB de Villiers  and Glenn Maxwell

বিপর্যস্ত সময়ে ক্রিজে এসে ঝড় তুললেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, পাঁচে নেমে আবার বিস্ফোরক হলো এবিডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু পেল বিশাল পুঁজি। তা পেরিয়ে জেতার মতো কোন অবস্থাই তৈরি করতে পারেনি কলকাতা নাইট রাইডার্স। দলের টানা দ্বিতীয় হারের দিন মলিন ছিলেন বাংলাদেশের তারকা সাকিব আল হাসান। খরুচে বল করার ব্যাটিংয়ে চাহিদার বিপরীতে তিনি খেলেছেন মন্থর এক ইনিংস।

রোববার চেন্নাইতে আইপিএলের ম্যাচে কলকাতাকে ৩৮ রানে হারিয়েছে বেঙ্গালুরু। বিরাট কোহলির দলের করা ২০৪ রানের জবাবে কলকাতা থেমেছে ১৬৬ রানে। এদিন দুই ওভার বল করেই ২৪ রান দেওয়া সাকিব ব্যাটিংয়ে করেছেন ২৬ বলে ২৫ রান।

বেঙ্গালুরুর জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ভিলিয়ার্স আর ম্যাক্সওয়েলের। মাত্র ৩৪ বলে অপরাজিত ৭৬ করেছেন ভিলিয়ার্স। ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে আসে ৪৯ বলে ৭৮ রান।

এই নিয়ে তিন ম্যাচে টানা তিনটিই জিতল বেঙ্গালুরু। তিন ম্যাচে টানা দ্বিতীয় হারের দেখা গেল কলকাতা। 

২০৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুভমান গিল ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ড্যান ক্রিশ্চিয়ানের দারুণ ক্যাচে তিনি আউট হয়ে যান ৯ বলে ২১ করে। তিনে নেমে রাহুল ত্রিপাঠি চার-ছয়ে কলকাতার রানরেট তুলেছিলেন চূড়ায়।

Shakib Al Hasan

কিন্তু ত্রিপাঠিও  কাজ অসমাপ্ত রেখে ফেরার পর পথ হারায় কলকাতা।  আরেক ওপেনার নিতিশ রানা স্লগ সুইপকে যুজভেন্দ্র চাহালকে ক্যাচ দেন। চাহালের দারুণ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান দিনেশ কার্তিক। ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে কলকাতা।

ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন সাকিব। কিন্তু দলের চাহিদা তিনি একদম মেটাতে পারেননি। থিতু হতেই তার লেগে যায় বেশ কয়েক বল। আরেকদিকে ওয়েন মরগ্যান মেরে খেলে রান বাড়াতে গিয়ে পেরে উঠেননি। ২৯ করে আউট হন হার্শাল প্যাটেলের বলে।

সাতে নামা আন্দ্রে রাসেলই নিভু নিভু আশা ফের জাগিয়েছিলেন। তবে ওভারপ্রতি রান নেওয়ার চাপটা তখন ১৬ ছাড়িয়ে গেছে। দুই প্রান্ত থেকেই দরকার ছিল ঝড়। সাকিবের জড়সড় অ্যাপ্রোচের কারণে তা আসেনি। জেমিসনের বলে বোল্ড হওয়া সাকিব করেন ২৫ বলে ২৬ রান। রাসেলের একার পক্ষে আর কাজটা শেষ করা সম্ভব হয়নি। এক পর্যায়ে ১৩ বলেই ৩০ করা রাসেল ফেরেন ২০ বলে ৩১ করে।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বেঙ্গালুরু। বরুন চক্রবর্তীর দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান বিরাট কোহলি আর রজত পাতিদার।

কিন্তু এরপরই খেলার নাটাই ঘুরিয়ে দিতে থাকেন ম্যাক্সওয়েল। সাকিবকে দিয়েই তার তাণ্ডব শুরু। 

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বল হাতে পান সাকিব। প্রথম বলেই ম্যাক্সওয়েলের হাতে খান বাউন্ডারির। ওই ওভার থেকে আসে ৭ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে বেদম মার খান তিনি। প্রথম বলেই ম্যাক্সওয়েল মারেন ছক্কা। পাডিকালও মারেন চার, পরে স্ট্রাইক পেয়ে রিভার্স সুইপেও সাকিবকে সীমানা ছাড়া করেন ম্যাক্সওয়েল। দ্বিতীয় ওভার থেকেই সাকিব দিয়ে দেন ১৭ রান। এমন খরুচে বোলিংয়ের পর আর তার হাতে বল দেননি মরগ্যান।

সাকিবকে পিটিয়ে পাওয়া ছন্দ আর হারায়নি বেঙ্গালুরু। ম্যাক্সওয়েল ২৯ বলে পৌঁছান ফিফটিতে। দেবদূত পাডিকাল ২৫ করে ফিরে যাওয়ার পর ক্রিজে আসেন এবিডি  ভিলিয়ার্স। থিতু ম্যাক্সওয়েল আর সব সময় থিতু থাকা ভিলিয়ার্স মিলে তুলেন বিস্ফোরণ। জুটিতে আসে ৫৩ রান। তাতে ব্যাকফুটে চলে যায়  কলকাতা।

৪৯ বলে ৭৮ করে কামিন্সের বলে ক্যাচ দেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু ভিলিয়ার্সকে আর থামানো যায়নি। শেষ দিকে ওভারপ্রতি ১০ রান করে তুলে দলকে নিয়ে যান দুশো ছাড়িয়ে। নিজে ফিফটি তুলে মাত্র ৩৪ বলে অপরাজিত থাকেন ৭৬ রান করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ২০ ওভারে ২০৪/৪  (কোহলি ৫, পাডিকাল ২৫ , রজত ১, ম্যাক্সওয়েল ৭৮ , ভিলিয়ার্স ৭৬*, জেমিসন ১১; হরভজন ০/৩৮ , বরুন ২/৩৯, সাকিব ০/২৪, কামিন্স ১/৩৪, কৃষ্ণ ১/৩১, রাসেল ০/৩৮ )

কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৬৬/৮ ( নিতিশ ১৮, গিল ২১, ত্রিপাঠি ২৫, মরগ্যান ২৯, কার্তিক ২, সাকিব ২৬, রাসেল ৩১ , কামিন্স ৬, হরভজন ২*, বরুন ২* ;  সিরাজ ০/১৭, জেমিসন ৩/৪১, চেহেল ২/৩৪, সুন্দর ১/৩৩, ম্যাক্সওয়েল ০/২৪, হার্শাল ২/১৭)

ফল: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ৩৮ রানে জয়ী।



ম্যান অব দ্যা ম্যাচ: এবিডি ভিলিয়ার্স
। 

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago